[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
খাগড়াছড়িতে তিন দিনব্যাপী জাতীয় ফল মেলা ২০২৫ অনুষ্ঠিতলংগদু সেনা জোনের উদ্যোগে সহিংসতা প্রতিরোধে কর্মশালাথানচিতে স্থানীয়ভাবে উদ্ভাসিত লাগসই প্রযুক্তি প্রয়োগ ও সম্প্রসারণ শীর্ষক সেমিনারখাগড়াছড়ির দীঘিনালায় কালোজাম কেজি ১শত ৪০ টাকারাঙ্গামাটির রাজস্থলী উপজেলার অনেক গ্রাম বিদ্যুতের আলো থেকে বঞ্চিতকাপ্তাই ফরেস্ট গার্ডের বেসিক প্রশিক্ষণ শেষে সনদ বিতরণরাজস্থলীতে বিএনপির সদস্য নবায়ন কার্যক্রমের উদ্বোধনকাপ্তাই ইউএনও এর হস্তক্ষেপে মুক্তি পেল নির্যাতিত ৪ শিশুরদীঘিনালায় ৩দিনব্যাপী জাতীয় ফল মেলা উদ্বোধনখাগড়াছড়ির রামগড়ে বিএনপির উদ্যোগে পর্যটনের লেক পরিস্কার
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

রাঙ্গামাটির রাজস্থলী উপজেলার অনেক গ্রাম বিদ্যুতের আলো থেকে বঞ্চিত

॥ মোঃ আজগর আলী খান, রাজস্থলী ॥
রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলার সদর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে অথচ সেখান থেকে ৩ কিলোমিটারের অভ্যন্তরে থাকা গ্রামের ৬ হাজার বাসিন্দা এখনও বিদ্যুতের আলো থেকে বঞ্চিত। সোলারের মাধ্যমে কিছু সুযোগ থাকলেও তাও অপ্রতুল। এছাড়াও গ্রামের রয়েছে একটি উচ্চ ও একটি প্রাইমারি বিদ্যালয় এসব বিদ্যালয় চলাকালিন সময়ে ছাত্র ছাত্রীরা গরমে অস্থিও হয়ে যায়। এসব গ্রামবাসীদের দাবি বর্তমান সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী প্রতিটি গ্রাম শহর হতে দেরি হলেও আপাতত তারা যেন মোবাইল নেটওয়ার্ক, বিদ্যুৎ ও শিক্ষার সুযোগটুকু পায়।

রাজস্থলী হতে চন্দ্রঘোনা চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি চলাচলের একমাত্র রাস্তা রয়েছে। কিন্তু বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় উপজেলার ২নং গাইন্দ্যা ইউনিয়নের গাইন্দ্যা পাড়া, খংসখই পাড়া, মব্বই পাড়া, তুরগু পাড়া, গামারি বাগান, পৌয়তু পূর্নবাসন সহ প্রায় ৬ হাজার লোকের বসবাস। পরিতাপের বিষয় যে ঐ এলাকার পাশে ইসলামপুর গ্রামে বিদ্যুৎ রয়েছে অথচ তার কাছাকাছি গ্রামগুলোতে বিদ্যুৎ নেই। উল্লেখিত পাড়াগুলোতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালিত টেকসই সামাজিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পাড়া কেন্দ্র, বৌদ্ধ মন্দির ও এতিম ছাত্রাবাস। বিদ্যুৎ না থাকায় ডিজিটাল যুগেও স্কুলগুলোতে ব্যাহত হচ্ছে আধুনিক শিক্ষা কার্যক্রম।

অপর দিকে মারমা, তনচংগ্যা, ত্রিপুরা, খিয়াং অধ্যুষিত এই দুই ইউনিয়নের মানুষও বঞ্চিত অধিকার থেকে। সড়ক যোগাযোগ নেই বললেই চলে, হেঁটে পথ চলাই এই উপজেলার মানুষের একমাত্র ভরসা। নেই বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক অথচ এই উপজেলা ঘিরে পর্যটন শিল্প বিকাশের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু যোগাযোগ দুর্গমতা না কাটলে তা কখনোই সম্ভব নয়।

স্থানীয়রা উৎপাদন করে প্রচুর পরিমানে নানা জাতের ফল ও শাক সবজি। কিন্তু এর কোনোটাই বাইরে বাজারজাতের সুযোগ নেই। তাই নিজেরাই খান চাষিরা। এই তাজা সবজি, আর প্রকৃতির নির্মল বাতাসই স্থানীয়দের স্বাস্থ্য সতেজ রাখতে সাহায্য করে। কারণ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোনোকালেই তেমন ডাক্তার থাকেনি। বর্ষা মৌসুমে সামান্য কিছু সবজি ও ফল বাইরে থেকে আসা পাইকারেরা সংগ্রহ করলেও তার ব্যবসায়িক মূল্যায়ন উল্লেখ করার মতো নয়।

স্বাধীনতার পূূর্বে ১নং ঘিলাছড়ি ইউনিয়নে গড়ে উঠেছিল রাজস্থলী বাজার। প্রতি বুধবার দিন বসে সাপ্তাহিক হাট। তখন লোকে গিজগিজ করে বাজারটি। নিজেদের উৎপাদিত পণ্যের পসরা নিয়ে বাজারে বসে জুমিয়ারা। নানা রকম ফল, সবজি বিক্রি করে তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী কিনে নিয়ে যায়। অর্ধশতাব্দী পার হয়ে গেলেও পাহাড়ে অন্তত ৬ হাজার মানুষের জন্য মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় উন্নত টেলি-যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন। তেমনি বিদ্যুৎ না থাকায় টেলিভিশন দেখারও সুবিধা নেই। সরকারের দেওয়া ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা থেকে অনেক দূরে এই ৬ হাজার মানুষ। সোলারের সাহায্যে বর্তমানে কিছু এলাকায় টেলিভিশন দেখা যায়।

গাইন্দ্যা গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনি বলেন, এই গ্রামের বাসিন্দাদের আধুনিক সুযোগ সুবিধার জন্য বিদ্যুতের কোন বিকল্প নেই। বিদ্যুতের জন্য ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনাসহ সবকিছুর জন্য সমস্যা পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর। তিনি আরও বলেন, আমাদের এলাকার জনসাধারণের মোবাইল চার্জ দিতে হলেও পার্শ্ববতী ইসলামপুর বাজার অথবা বাঙালহালিয়া বাজারে যেতে হয়। ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের মাঘাইন পাড়া কালাচুক্ক্যা বলেন, নিজেদের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের লক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ বিতরণ উন্নয়ন প্রকল্প, রাঙ্গামাটি বরাবরে আবেদন করা হয়েছিল। ওই প্রকল্পের অধীন থাকা চন্দ্রঘোনা আবাসিক সহকারি প্রকৌশলী আরেফিন ইসলাম সরেজমিনে এসে দেখে গেছেন। কিন্তু অধ্যাবধি কোন সুফল পাওয়া যায়নি।

বর্তমান সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী সমগ্র বাংলাদেশে তথা গ্রামের আনাচে কানাচে বিদ্যুৎ সেবা পৌঁছে দিচ্ছে সরকার। এ আশায় প্রহর গুনছেন ঐ দুর্গম এলাকার প্রায় ৬ হাজার মানুষ। এলাকাবাসীর আশা করছে বর্তমানে পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার মাধ্যমে এলাকায় অতিদ্রুত বিদ্যুৎ সেবা পৌছে দিয়ে বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। শুধু তাই নয়, রাজস্থলী উপজেলার ১নং ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়, মাঘাইন পাড়া, ঝান্দিমইন, কুইক্যাছড়ি, মুবাছড়ি, ঘিলামুখ, আড়াছড়ি,নারাইছড়ি, হলুদিয়া পাড়া এবং গাইন্দ্যা ইউনিয়নের চুশাক পাড়া, মনজাই পাড়া কমলছড়ি, সহ বিদ্যুৎ বঞ্চিত পাহাড়ের মানুষ অন্ধকারে জীবন যাপন করছে। সরকারের উন্নয়নে পাহাড়ে জীবনমান রক্ষায় দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানের জোর দাবি বিদ্যুৎ বঞ্চিত এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে চন্দ্রঘোনা বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী আরেফিন ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওই এলাকায় বিদুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দ্রুত বিদ্যুৎ যাতে এলাকায় পৌছে দিতে পারি সে ব্যবস্থা করবো উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে বিষয় টি দ্রুত বাস্তবায়নে উদ্যোগ হাতে নিব।