॥ মোঃ সোহেল রানা, দীঘিনালা ॥
খাগড়াছড়ি দীঘিনালায় বিভিন্ন পাহাড়ে প্রকৃতিক ভাবে জন্মনো বিশাল বিশাল জাম গাছের কালো জাম পেঁকে গাছের নিচে পড়ে নষ্ট হতো মাঝে মাঝে স্থানীয়রা কুড়িয়ে খেত। স্কুল, কলেজের আশপাশে ও বন জংগলে বড় বড় জাম গাছ দেখা যেত কেউ খেত না। অথচ একটি সময়ে সড়কে জাম পড়ে থাকতো কাওয়ার তেমন মানুষ ছিল না আর এখন স্থানীয় বাজাওে সেই কালোজামের দাম ১শত ৪০ টাকা ধরে বিক্রি হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, একটিসময় পার হয়েছে বাজারে কেউ এসব জাম বেঁচতে আনত না। পশুপাখি ও স্থানীয়রাই যা পারত খেত। গরমকালে কালোজাম অন্যতম জনপ্রিয় ফল। স্বাদে কোনটি মিষ্টি আবার কোনটি টক-মিষ্টি। বেশ কিছু স্বাস্থ্যকর উপকারিতার জন্য এই ফল বিশেষ সমাদৃত। কালোজাম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা, বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস ও হার্টের সমস্যা রয়েছে। পুষ্টিবিদেরা ডায়েটে এই ফল রাখার কথা বলেন বার বার। জামের বীজ, পাতা এবং ছাল অনেক আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। বিশেষ করে ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য এই ফল ওযুধের মতো কাজ করে। অন্য সব মৌসুমি ফলের তুলনায় জামের স্থায়ীকাল কম হলেও এটি পুষ্টিগুণে অতুলনীয়। জানা গেছে, মে মাসের মাঝামাঝি থেকে আগস্ট পর্যন্ত প্রচুর পরিমাণে জাম পাওয়া যায়। এই গরমে প্রতিদিন কালোজাম খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। কালো জামে সুক্রোজ একেবারেই থাকে না। ফলে কালো জাম রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতেত সাহায্য করে। চিরসবুজ কালোজাম উদ্ভিদের বৈজ্ঞানিক নাম সিজিজিয়াম কামিনি।
স্থানীয় বাজারে জাম বিক্রি করতে এসে মোঃ আল মামুন বলেন, এখন বাজারে জামের দাম বেশি ১২০-১৪০/-কেজি বিক্রি করছি। তবে জাম গাছ কমে গেছে তাই জামও কম পাওয়া যাওয়ায় এখন দাম বেশি। পর্যটকদের কাছে বিক্রি করি। স্থানীয় ক্রেতা হোসনারা আক্তার বলেন, আমাদের বাড়িতে আগে অনেক বড় বড় জাম গাছ ছিল। সবগুলো কেটে ফেলা হয়েছে। এখন ১২০টাকা কেজি জাম কিনে খেতে হয়। এলাকায় কেউই জামের বাগান করে না। তাই কৃষিবিভাগ যদি এগিয়ে আসে তাহলে এবার জামগাছ বৃদ্ধি পাবে।
দীঘিনালা উপজেলা কৃষি উপসহকারী কৃষি অফিসার সুপন চাকমা বলেন, দিন দিন জামের প্রচুর চাহিদা বাড়ছে, পুষ্টিবিদমতে কলোজামে প্রচুর পরিমানে পুষ্টিগুন রয়েছে। উপজেলায় বানিজ্যিক ভাবে জাম বাগান করে না। তবে বর্তমানে কালোজামের প্রচুর পরিমাণ চাহিদা রয়েছে এবং স্থানীয় বাজারের ১০০-১৪০টাকা পর্যন্ত কেজি বিক্রি হচ্ছে।
সরকারি ভাবেও জামবাগান চাষের জন্য কোন প্রনোদনা দেয়া হয়না। এক সময় পাহাড়ে প্রাকৃতিক জন্মনো প্রচুর জাম গাছ ছিল। বড় বড় জামগাছগুলো কাঠ হিসেবে ব্যবহারের প্রচুর চাহিদা থাকার কারনে গাছ কমে গেছে। জামগাছের কাঠ শক্ত ও টেকসই হওয়ায় ঘরবাড়ির দরজা জানালা ও চৌকাঠ তৈরিতে প্রচুর কাঠ ব্যবহার করা হয়। যার কারনে বর্তমানে জাম গাছ অনেক কমে গেছে।