বরকলের জনগনের চিকিৎসা সেবায় নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি চালু করুন
রাঙ্গামাটি জেলার অধিকাংশ উপজেলার যাতায়াত ব্যবস্থা সড়ক পথের চেয়ে নৌ পথেই বেশী। তবে বর্তমানে বেশ কিছু উপজেলা সড়ক যোগাযোগ বৃদ্ধি পেতে যাচ্ছে। সীমান্ত সড়ক পূর্নতা পেলে যোগাযোগের উন্নয়নে অনেক ধাপ এগিয়ে যাবে পার্বত্য চট্টগাম রাঙ্গামাটি। এসব উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগনের চিকিৎসা সেবায় আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপি এর প্রকল্পের অধীন বরকল উপজেলায় একটি নৌ-অ্যাম্বুলেন্স প্রদান করে। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এর দেখভাল করলে নৌ-অ্যাম্বুলেন্স এর চালকের বেতন ভাতা প্রকল্পের অধীনেই ছিল। প্রথম প্রথম জনগন এর থেকে সেবা পেলেও বর্তমানে পুরোই বঞ্চিত রয়েছেন। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলে এটির ব্যবস্থাপনার দায়-দায়িত্ব কেউ বা কোন সংস্থাই নেননি। ফলে চিকিৎসা সেবায় মানুষের কষ্ট এখন অনেক বেড়েছে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে বরকল উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের নৌ-অ্যাম্বুলেন্স এর সেবা নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন রোগীরা। উপজেলার ৫ ইউনিয়নের পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবার জন্য বরকল সদরে একটি মাত্র সরকারি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র। মুমূর্ষ রোগী কিংবা সাধারণ রোগীরা চিকিৎসা সেবা পেতে পাহাড়-নদী বেয়ে আসতে হয় বরকল সদর হাসপাতালে। চিকিৎসা সেবার অবস্থা খুবই নাজুক হয়ে পড়ায় হাসপাতালে এসে হতাশ হয়ে পড়েন রোগীর স্বজনরা। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা রোগীরা প্রাথমিক চিকিৎসা সেবাও ঠিকমতো পাচ্ছেন না। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা দায় এড়াতে নামমাত্র রোগীদের সেবা দেন বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। রোগীর জীবন বাঁচানোর জন্য ছোট নৌকা অথবা যাত্রীবাহী দ্রুতযান (স্পিডবোট) ভাড়া করে হাসপাতালে আসলেও চিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছেন। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপি এর প্রকল্পের অধীন প্রত্যন্ত অঞ্চলে জনগনের জন্য প্রকল্পের মাধ্যমে একটি নৌ-অ্যাম্বুলেন্স প্রদান করেন। এটির চালকের বেতন ভাতাও তারাই দিতেন। কিন্তু প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে এটি যেন অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে।
তবে স্থানীয় জনগনের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সন্তোষ কুমার চাকমা বিগত ২০১২ সালে নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে স্বাস্থ্য বিভাগকে হস্তান্তর করেন। তৎসময়েও যাবতীয় অর্থ সহায়তা ইউএনডিপি’র মাধ্যমেই দেয়া হতো। ২০১৫ সালে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে চালকের বেতন ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। সেই সাথে রোগীদের অ্যাম্বুলেন্স সেবাও বন্ধ হয়ে এখন হ্রদেই ভাসছে সেটি। ভুক্তভোগী রোগীর স্বজনরা জানান, ভালো সেবাতো নেই তাৎক্ষনিক অসুস্থ ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা বিবেচনা না করেই রাঙ্গামাটি প্রেরণ করেন। নৌ-অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসটি না থাকায় পড়তে বিড়ম্বনায়। অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে স্পীড বোট ভাড়া করে রোগীকে নিয়ে যেতে হচ্ছে শহরে। নৌ-অ্যাম্বুলেন্স এর সেবা পেতে স্থানীয় জনসাধারণ গণস্বাক্ষরের মাধ্যমে আবেদন করেও ফলাফল আসেনি। এটি হ্রদে ভাসতে ভাসতে এখন যান্ত্রীক ত্রুটিও দেখা দিয়েছে। রাজস্ব আয় না থাকায় উপজেলা পরিষদ থেকেও বেতন ভাতা দেয়া সম্ভব না হলে ২০১৫ সালে জেলা পরিষদে সেটি হস্তান্তর করা হয়। পরে নৌ-অ্যা¤ু^লেন্সটি উপজেলা পরিষদকে হস্তান্তর করা হয়। এতগুলো উন্নয়নের প্রতিষ্ঠান থাকা সত্বেও এটির দায়িত্ব কেউ নিচ্ছেন না। অথচ নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি চালু না থাকায় বরকল উপজেলার মানুষ রোগী নিয়ে চরম বিপদে দিন কাটাচ্ছেন। তাই প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগনের দ্রুত চিকিৎসা সেবায় নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি চালু করুন।