যুব সমাজের উদ্যোগে মাথা গোঁজার ঠাঁই হলো সামাপ্রু মারমা
॥ আকাশ মারমা মংসিং, বান্দরবান ॥
বান্দরবান শহর হতে ১৮ কিলোমিটার দূরে কুহালং ইউনিয়নে ৭নং ওয়ার্ডের অবস্থিত বটতলী বাগমারা গ্রাম। গ্রামটিতে ৫৬টি পরিবারের বসবাস। গ্রামের অধিকাংশ লোকজন কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। সেই গ্রামে থাকেন ৮০ বছর ঊর্ধ্ব সামাপ্রু মারমা নামে এক সর্বহারা বৃদ্ধ মহিলা। কোন রকম ভাঙ্গা বাড়িতে দিনপার করেন তিনি। তার এমন করুণ অবস্থা দেখে গ্রামে কয়েকজন যুবক বৃদ্ধ মহিলা পাশে দাঁড়িছেন।
তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে সেই বৃদ্ধার দু:খের কথা তুলেন ধরেন। তারপর তারা ডোনেশন সেল শুরু করেন। আস্তে আস্তে অর্থ জমা হয়। এক পর্যায়ে তাদের সংগৃহীত অর্থে নতুন গৃহ নির্মাণ করে দেন এলাকার যুবকেরা। ঘর পেয়ে আনন্দে আত্মহারা সামাপ্রু মারমা। তরুণ যুবকদের এই মহৎ উদ্যোগকে বিভিন্ন মহল থেকে সাধুবাদ জানানো হয়।
এলাকাবাসীরা জানান, মহিলাটি ওই গ্রামেই প্রায় ৪০ বছর ধরে আছেন। তার পরিবারের কেউ বেচেঁ না থাকায় দুই মুঠো অন্নের জন্য ভিক্ষা করে চলতে হতো। মহিলাটির ছাউ পাড়া গ্রামের ভোটার হওয়ার এ গ্রামের সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধ ভাতা, বিধবা ভাতা থেকে বঞ্চিত হয় এই মহিলাটি।
কিছুদিন পূর্বে সাঅং মারমা নামে এক সমাজ সেবক ওয়াল্ড ভিশন প্রজেক্টের ফিল্ড কাজে আসলে তার নজরে পড়ে ৮০ বছরের ঊর্ধ্ব সামাপ্রু মারমার কষ্টের কাঁঠা জীবন। এতে নিজ উদ্যোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করলে কয়েকদিনের ভাইরাল সৃষ্টি হয়। তারপর বিভিন্ন মহল থেকে অর্থ আসতেই থাকে। এক সময়ে একটি নতুন টিনশেড বাড়ি নির্মাণ করে দেয় সাঅং সহ কয়েজজন যুবক।
বটতলী বাঘমারা গ্রামবাসী উসানু মার্মা জ্যকশন বলেন, বহুদিন যাবৎ বৃদ্ধ মহিলা বাড়িটি ভাঙ্গা অবস্থা পড়ে ছিল। আমরা কয়েজন বন্ধু মিলে বুড়ি মায়ের করুণ অবস্থা দেখে উদ্যোগ নেয়।
প্রধান উদ্যোক্তা সা অং মারমা বলেন, অফিসে কাজে ফিল্ড ঘুরার সময় বৃদ্ধ মহিলা ঘরটি ভেঙ্গে যাওয়া অবস্থায় দেখতে পায়। বৃদ্ধ মহিলাটি করুণ এই অবস্থায় দেখে আমি উদ্যোগ নিয়েছি। পরে সামাজিক যোগাযোগে প্রকাশিত করলে এগিয়ে আসে অনেকে। তাদের সাহায্য বৃদ্ধ মহিলাটি ঘরটি কাজ শুরু করেছি। তার জন্য নতুন ঘর পাশাপাশি চাউল, কম্বল সহ সহযোগীতা দিতে চেষ্টা আছি । সম্পূর্ণ হলেই ঘরটি বুড়ি মাকে বুঝিয়ে দেওয়ার হবে।
উপকারভোগী বৃদ্ধ স্যামা উ মারমা (৮০) বলেন, আমার রক্তে সম্পর্কে আপন বলতেই কেউ নাই। এই দু:খের ভরা জীবন দেখে কয়েকজন সমাজ সেবক আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। যারা আমাকে সহযোগীতা হাত বাড়িয়েছেন তাদের সকলকেই কৃতজ্ঞতা ও আশির্বাদ করি।
২নং কুহালং ইউনিয়নে ইউপি চেয়ারম্যান সানুপ্রু মারমা জানান, বৃদ্ধ মহিলাটি জন্য যেকোন একটি সরকারি ভাতা ব্যাপারে নক্ষদর্পনে আছে। সেটি ওই এলাকায় জনপ্রতিনিধি মেম্বার মাধ্যমে উদ্যােগ নিতে হবে। পাশাপাশি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চাউল ও কম্বলসহ ত্রাণ সামগ্রী আসলে সেটি অবশ্যই দেওয়া হবে।