পর্যটকদের পদচারণায় মূখরিত বান্দরবান
॥ আকাশ মারমা মংসিং,বান্দরবান ॥
সবুজ পাহাড় ঘেরা অপরূপ প্রকৃতির লীলাভূমি পার্বত্য জেলা বান্দরবান। সারা বছরই কমবেশি পর্যটকের ভিড় লেগে থাকলেও বিশেষ করে ছুটির দিনগুলিতে ভিড় আরো বাড়ে। বান্দরবান এখন অসংখ্য পর্যটকদের পদচারণায় মূখরিত।
এদিকে পাহাড়ের শীত মৌসুমে সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে ভ্রমণপিপাসুরা প্রতি বছর ছুটে আসেন পাহাড়ী কন্যা বান্দরবানে। তাছাড়া ১৬ ডিসেম্বর বিজয় মাস ও ৫০ বছরের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে একদিনের জন্য বান্দরবানে সব পর্যটন কেন্দ্রগুলো জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বসাধারণের জন্য প্রবেশ উম্মুক্ত করে দিয়েছে। বিজয় দিবসে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে প্রবেশ মূল্য ফ্রি পাশাপাশি সরকারি ছুটিকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমণ পিপাসুরা পাহাড়ের সৌন্দর্যকে দেখতে ভিড় করছেন এই জনপদে।
বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে, বান্দরবানে সব পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকের ভিড় চোখে পড়ার মত ছিল। দূর-দূরান্ত থেকে বেড়াতে আসা পর্যটকরা শহরের কোলাহল থেকে কিছুটা মুক্ত বাতাসে স্বস্তির সন্ধানে মুগ্ধ হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বান্দরবানের দর্শনীয় স্থান মেঘলা, নীলাচল, চিম্বুক, নীল দিগন্ত, সাঙ্গুনদী, শৈলপ্রপাত ও নীলগীরিতে। আরেকটি আকর্ষণীয় দর্শনীয় স্থান স্বর্ণমন্দির ও রামজাদি। তবে জাদি প্রতিষ্ঠাতা গুরুভান্তের পরলোক গমণের পর থেকে সকল পর্যটকদের দর্শন করা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া একটু বেশি সময় নিয়ে যারা ঘুরতে এসেছেন তারা ছুটে যাচ্ছেন দুর্গম থানচির রেমাক্রী, বড় পাথর, নাফাখুম ঝর্ণা ও আমিয়া কুম দেখতে। বিশেষ করে যারা পাহাড়ী পথ ট্রেকিং-এর জন্য আসছেন তারা বেছে নিচ্ছেন এমন দুর্গম পথ, জানিয়েছেন আগত বহু পর্যটক।
ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক কামাল হোসেন বলেন, সকালে নীলগিরি যাওয়ার পথে চিম্বুক সড়কে চারিদিক ঘিরে সবুজ পাহাড়ে কুয়াশা ঢেকে আছে। আর পাহাড় চূড়া থেকে নিচের দিকে তাকালে ছোট ছোট পাহাড়ী পল্লী ও তাদের জীবন-বৈচিত্র আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে। রাজশাহী থেকে সপরিবার নিয়ে বেড়াতে আসা পর্যটক মোহাম্মদ সেলিম সরকারের সাথে পর্যটন স্পট নীলাচলে কথা হয়। তিনি বলেন, এই প্রথম বান্দরবানে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছি। সকাল থেকে বিভিন্ন স্পটে ঘুরাঘুরি করেছি। তবে মানুষের মুখে শুনেছি বিশেষ করে পরন্ত বিকেলে নীলাচলের গোল টেবিলে বসে আড্ডা আর ফ্রেমে খুব সুন্দর ছবি ধারণ করা যায় । তাই এই সময়টাকে বেছে নিয়েছি পর্যটন স্পট নীলাচলে।
হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর শীত মৌসুমে প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে। তার ওপর টানা ৩ দিনের ছুটি থাকায় জেলার বেশির ভাগ সব হোটেল মোটেল বুকিং হয়ে গেছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, পর্যটকরা যাতে নিরাপদে ঘুরে বেড়াতে পারে সে জন্য প্রতিটি পর্যটন স্পটে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা মোতায়েন থাকবে। এ ছাড়া সাদা পোশাকধারী পুলিশ সদস্যরাও নিয়োজিত থাকবে। আশা করি, পর্যটকরা নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারবে।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরিজি বলেন, পর্যটন নগরী বান্দরবানের সৌন্দর্য দেখতে বছরের পুরোটা সময়ই পর্যটকের আগমন ঘটে। তাছাড়া বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আমাদের জেলা প্রশাসন পরিচালিত সব পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে প্রবেশ মূল্য ফ্রি করে দেওয়া হয়েছে দর্শনার্থীদের জন্য। কোনো রকম প্রবেশ ফি ছাড়াই একদিনের জন্য সব দর্শনার্থীরা পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে প্রবেশ করতে পারছে বলে জানান।