[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
দীঘিনালায় যৌথবাহিনীর হাতে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ কর্মী আটকবান্দরবানে রিপোর্টার্স ইউনিটির ভবন জোড়পূর্বক দখলের অভিযোগবান্দরবানের থানচিতে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশমানিকছড়িতে চাঁদাবাজি করতে এসে জনতার হাতে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটকবরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগরাঙ্গামাটির লংগদুতে নৌকার কিছু নেতাকর্মী এখন ট্রাকে উঠে গেছেকাজে দীর্ঘসূত্রতা পরিহার এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে-পার্বত্য উপদেষ্টাসড়ক দুর্ঘটনায় কাপ্তাই বিএফআইডিসি এলপিসি শাখার কর্মচারী নিহতমানিকছড়ির নবাগত ইউএনও’র সাথে বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের শুভেচ্ছা বিনিময়খাগড়াছড়িতে বন্যাকবলিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

সীমান্ত ভ্রমণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আতিথেয়তায় মুগ্ধ

৬৬

॥ নিরত বরন চাকমা,বরকল ॥

দিনের শুরুটা ছিল বেশ ভালো। ভোরবেলায় ব্যাগ ঘুছিয়ে আমার কলিকের কাছ থেকে নেওয়া ক্যামরা হাতে নিয়ে বেরোলাম সীমান্ত ট্যুরে যাওয়ার উদ্দেশ্য করে। অবশ্য ট্যুরটা ছিল সরকারি একটা ট্যুর। আর ট্যুরের সবকিছুর উদ্যোগ নিয়েছিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুয়েল রানা মহোদয়। তাই সোমবার ভোর ৬টা ৪৫ মিনিটে আমি উপজেলা নির্বাহী কার্যালয়ে গিয়ে উপস্থিত হই। কারণ ট্যুরের উদ্দেশ্যে স্টেশন ছাড়তে হবে উপজেলা পরিষদের নৌ-ঘাট থেকে। সেজন্য সরাসরি সেখানে উপজেলাঘাটে যাই। সেখানে গিয়ে সফরসঙ্গী হিসেবে উপজেলা পরিষদের তিন চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আনসার বাহিনী ও অফিস স্টাফ ৬জন, উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, এলজিইডি সার্ভেয়ার, আইমাছড়া ইউপি বর্তমান ও নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান, থানার ওসি ও এএসআই, বোট চালক দুই জন এবং আমি নিরত বরণ চাকমা সহ উনিশ জন হলাম। আর সাথে শীতবস্ত্র বিতরণের জন্য একশটি কম্বল বোটে নেওয়া হলো। আমরা ঠিক ৭টা ৪৬ মিনিটে ঠেগা সীমান্তের উদ্দেশ্য বরকল উপজেলা পরিষদের ঘাট থেকে যাত্রা করলাম।

এরপর ছোট হরিণা বাজারে পৌনে ৯টায় পৌছলাম। সেখানে ছোট হরিণা ১২ বিজিবি জোন কমান্ডারের সহযোগিতায় একটা বিজিবি স্কট পেলাম। এবার তিনটি নৌবহরে(স্পিড বোট) ছোট হরিণা জোনের ঘাট থেকে আবার রওনা করলাম। যাওয়ার পথে ভালুক্যছড়ি এলাকায় পৌছতে আবহাওয়া পাল্টে গেল। আকাশের অবস্থা হলো মেঘাচ্ছন্ন এবং কুয়াশায় ঢাকা। কিছুদূর যেতে শুরু হলো গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। তখনও আমাদের বোট চলন্ত অবস্থায়। এভাবেই কিছু পথ পাড়ি দিয়েই আমরা ঠেগামুখ এলাকা ছাড়িয়ে ছোট নৌ রাস্তায়(ঠেগা নদী) ঢুকে পড়লাম। তখনও হালকা বৃষ্টি হচ্ছিল। এমন অবস্থায় একদিকে ভালো লাগছিল আরেকদিকে কেমন জানি অস্বস্তিবোধ হচ্ছিল। কারণ আমার সীটের সামনে ছিল আস্ত এক কম্বলের বস্তা। মনে হয় সব নিশ্বাস ওই কম্বলের বস্তা আটকে রাখছে। আর ভালো লাগছিল যে অনেক বছর পর আমার সাংবাদিকতা পেশায় প্রথমবারের মতো সরকারি সফরে একসাথে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদের তিন চেয়ারম্যান, থানা কর্মকর্তা, ইউপি চেয়ারম্যানদের সাথে ভ্রমণের সুযোগ পেয়েছি। ভাবতেও যেন মনে আত্মতৃপ্তি জেগে উঠে। আর একটা বিষয় হলো সীমান্ত এলাকা হিসেবে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সান্নিধ্যে পাবো। সবমিলিয়ে যেন মনে একটা আনন্দ অনুভব হচ্ছিল। কিন্তু বৈরি আবহাওয়ার জন্য মনের আনন্দটাকে নিরানন্দ করে দেয়। তারপরও নেমেছি যখন মন শক্ত করে যাচ্ছিলাম।

 

মনে মনে বলি আঃহ একটু যদি মেঘ ছাড়িয়ে বৃষ্টি থামিয়ে নীল আকাশ ভরা সূর্য আলোয় ঝলমল করতো খুব ভালো লাগতো। এই ভাবতে ভাবতে কয়েক ঘন্টা পথ পাড়ি দিয়ে পৌঁছে গেলাম খুব্বাং এলাকায়। সেখানে পৌঁছতেই নৌঘাটে লোকজনের ভীড়। আসলে তারা অতিথিদের অভ্যর্থনা দেয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আছে। এরপর একে একে এসে সফরসঙ্গীদের সকলের সাথে কৌশল বিনিময় করছে। তারপর আমাদের নিয়ে যাওয়া হলো খুব্বাং উচ্চ বিদ্যালয়ে। আমিও তাদের অনুসরণ করে বিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য এগোলাম। সেখানে এসে আমরা ওয়াশরুম গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। তখন দিনের ১১টা২৭ বাজছিল। প্রধান শিক্ষককের অফিসরুমে এসে আমরা বসে পড়লাম। আর আমাদের জলপানের ব্যবস্থাও তারা করে দিল। কিছুক্ষণ পর আবার বৃষ্টি নামতে শুরু করল। তাও আবার মাঝারি অবস্থায়।আমরা তখন অতিথিদের জন্য দেওয়া জলপান করছিলাম। সেই ফাকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিতেন দাও নিজের বিদ্যালয়ের সার্বিক অবস্থা এবং শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে উপজেলা প্রধানদের সাথে আলাপ করছিলেন। আর উপজেলা প্রধানরাও তার কথাগুলো মনযোগ দিয়ে শুনার চেষ্টা করছিলেন। সেই সাথে এলাকার মুরব্বিরাও এলাকার অবস্থা ও বিদ্যালয়ের অবস্থা সম্পর্কে সুর মিলিয়ে কথা বলার চেষ্টা করছিলেন। এদিকে বৃষ্টি পড়ছে। কোনো অবস্থাতেই থামছে না। আর আমদের প্রথম গন্তব্য স্থান ছিল আন্দারমানিক গ্রাম। কিন্তু বৃষ্টি জন্য নির্ধারিত সময়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কথা ছিল সেখানে প্রোগ্রাম শেষ করে আমরা খুব্বাং এসে থাকবো।কিন্তু বৃষ্টির জন্য সময় গড়িয়ে যাচ্ছে। এভাবে বৃষ্টি থামার অপেক্ষা করতে করতে সাড়ে বারোটা বেজে গেলো। তখনও সেখান থেকে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। কি এক খারাপ অবস্থায় পড়ে গেলাম। এমন সময় এক ভদ্রলোকের মাথায় বুদ্ধি আসলো। তখন তিনি বললেন বরং এক কাজ করি বাজারে গিয়ে দোকান থেকে কয়েকটি ট্রি পাল(প্লাস্টিক রেক্সিন) নিয়ে আসি। সকলেই বলে উঠলাম এটাই ভালো হবে। তারপর একজনকে দিয়ে বাজার থেকে বেশ কয়েকটি ট্রিপল নিয়ে আসা হলো। আমরা এবার যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি হলাম। যার যার ছাতা বের করে নৌঘাটে নেমে গেলাম। এবার সেখান থেকে টমটম নৌকায় উঠে পড়লাম। প্রত্যেক নৌকায় ছয় সাতজন করে উঠে বসলাম।

 

আমাদের স্পিড বোটগুলো খুব্বাং গ্রামে রেখে যেতে হলো। কারণ ঠেগা নদীর পানি কম। সেজন্য আমাদের টমটম দিয়ে যেতে হলো। আমাদের নৌকায় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শ্যাম কাকা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুচরিতা দিদি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয়ে কর্মরত টিটু দা, জ্ঞান্ত দা, আনসার একজন আমি ও টমটম চালক সহ সাতজন উঠে বসলাম। আমরা ছয়জনে ট্রিপল নৌকার দুপাশে ধরে এয়ারবাসের মতো ধরে রাখলাম। যাতে করে বৃষ্টিতে ভিজে যায়। আমার তখন মনে হচ্ছিল আমরা টমটমে চড়ছি না বিমানে চড়ে যাচ্ছি। কারণ বাইরে তাকিয়ে দেখার মতো কোনো সুযোগ নাই। বৃষ্টি তখনও পড়ছিল। এমন বৈরি আবহাওয়া উপেক্ষা করে আমরা যাচ্ছিলাম আন্দারমানিক এলাকায়। আমাদের নৌকা সবার আগে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল। নৌকা বহর ছিল মোট পাঁচটি। চারটি আমাদের সফরসঙ্গীদের আরেকটি বিজিবি স্কটের জন্য। আমাদের নৌকা কখনও খুব বেগে চলছিল, আর কখনও বাকে এসে মাঝে থামিয়ে চলে। তখন সবার পেটে ক্ষুধা অনুভব হয়। অর মাঝে মাঝে দিদি বলে উঠে আহঃ ক্ষুধা লাগছে। পৌছলে আমরা আগে খেতে বসবো। কাউকে অপেক্ষা করবো না। আমি শুধু ভাবছি কখন আন্দারমানিক পৌছাবো। এভাবে চলতে চলতে প্রায় দু’ঘন্টা পর গন্তব্য স্থানে পৌঁছে গেলাম। তখন দুপুর দুই টা তেরো মিনিট বাজলো। আন্দারমানিক বাজারে উঠে পেটে ক্ষিধে মেটানোর জন্য এক প্যাকেট বিস্কুট কিনে খেয়ে নিলাম। তখনও বাদবাকিরা এসে পৌঁছাইনি। তাদের অপেক্ষায় বসে রইলাম বাজারছেদে। কিছুক্ষণ পরে তারাও পৌঁছে গেল। আর তারা আসলে এলাকার লোকজন অতিথিদের বাজারছেদে বসিয়ে সাধ্যমত নাস্তা পানি দিয়ে পরিবেষণ করার চেষ্টা করলো। এরপর নাস্তা পানি খেয়ে গেলাম আন্দারমানিক নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। তখনও হালকা বৃষ্টি পড়ছিল। আমরা সেখানে গিয়ে কিছুক্ষণ রেস্ট করার পর আমাদের দুপুরের খাবার পরিবেষণ করা হলো। সারিবদ্ধ হয়ে খাবার টেবিলে বসে গেলাম। খাবারের ম্যানুতে দেখা গেল সব রাজকীয় খাবার। যেটা খেতে যায় সেটা সুস্বাদু ও মজার। খেলে তৃপ্তি লাগে। আমাদের খাবারের ম্যানুতে রাখা হয়েছে খাসির মাংস, মুরগী, বাঁধাকপি সিদ্ধ, পাহাড়ি ছড়ার(ঝর্ণা) চিংড়িমাছ, ডিম, সবজি। এসব খাবার ছিল লোকাল। আর রান্নাও ছিল অসাধারণ।গ্রামের মানুষ বলে কথা। পাহাড়ি এলাকার মানুষ গরীব হলেও মনে গরীব নয়। সরল মনের মানুষও বলা যায়। আতিথেয়তায় বেশ উদার। যাক, এরপর আমরা খাওয়া দাওয়া শেষ করে আন্দারমানিক নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করলাম। অনুষ্ঠান সভায় মিতালি চাকমার সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখলেন প্রধান শিক্ষক রাসেল চাকমা। তারপরে রাজেশ হেডম্যান বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন, এলাকার অবকাঠামো উন্নয়ন বিষয়গুলো উপজেলা প্রধানদের কাছে তুলে ধরেন। তার সাথে আরো তিনজন করল্যাছড়ি ও পেরা ছড়া এলাকাবাসীর পক্ষে তাদের এলাকায় মৌলিক সমস্যার কথা উল্লেখ সার্বিক সহযোগিতার দাবি জানান। তাদের দাবিকে গুরুত্ব দিয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, নির্বাহী কর্মকর্তা, বরকল মডেল থানার অফিসার, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও ইউপি চেয়ারম্যান বিভিন্ন বিষয়ের উপর বক্তব্য রেখে ভবিষ্যতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মৌলিক বিষয়গুলো গুরুত্ব রেখে এবং জনগণের চাহিদা অনুযায়ী উপজেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দেয়ার আশান্বিত করেন। এতে এলাকাবাসী সন্তুষ্ট হন।

 

অনুষ্ঠান শেষ হতে বেলা শেষ হয়ে গেলো। বাইরে অন্ধকার আর বৃষ্টিও হচ্ছিল হালকা। তখন ঘড়ির সময় ছিল ৫টা ৫৩ মিনিট। বৈরী আবহাওয়া কারণে আর যাওয়া হলোনা খুব্বাং। রাতেই থাকতে হলো আন্দারমানিকে। এতজন মানুষ একসাথে থাকার মতো কোনো বাড়ি নেই। তাই আমাদের রাখা হলো আলাদা করে। আমি থাকলাম স্কুলের পাশে রিটন দার বাড়িতে। বেশ যত্নসেবাও করা হলো আমাদের। আমি বাদে সেখানে দুই ইউপি চেয়ারম্যানও ছিল। রাতটা বেশ ভালোই কাটালাম। সকালের নাস্তাভাতের ব্যবস্থা করে দেয়া হলো স্কুলে। সেখানে খেয়েদেয়ে আমরা রওনা হলাম খুব্বাং উদ্দেশ্য। তার আগে উপজেলা দুই প্রধান ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখলেন। সবকিছু দেখার পর আমরা টমটমে উঠে বসলাম। এবার আমরা রওনা হলাম খুব্বাং গ্রামের উদ্দেশ্য। খুব দ্রুত গতিতে ড্রাইভার নৌকাটা চালালো। আসার সময় খুব একটা ভালো লাগছিলো। কারণ আকাশের অবস্থা খুবই ছিল ভালো। আগের দিনটার চেয়ে আবহাওয়াও তেমনটা খারাপ ছিল না। যার কারণে আসার সময় প্রাকৃতিক নৈসর্গিক দৃশ্য গুলো উপভোগ করছিলাম। আর মাঝে মাঝে ক্যামরা দিয়ে সেই দৃশ্যগুলো ক্যামরাবন্দী করার চেষ্টা করলাম। কিছুদূর পথ ফেলে আসার পর থমবাগ গ্রামে এসে থামল আমাদের টমটম।কারণ সেখানেও ভূষণ ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান এর নিমন্ত্রণ ছিল। তার সৌজন্যে উপজেলা দুই প্রধান ও আমি সহ কিয়াং (বিহার) ৭/৮জন মিলে সেখানে উঠে গেলাম। সেখানেও আমাদের নাস্তা পানি দিয়ে পরিবেশন করা হলো। আর তারাও এলাকার বাস্তব সমস্যাগুলো তুলে ধরে সহযোগিতা চাইলো উপজেলা প্রধানদের কাছে। সেখান থেকে আবার রওনা হলাম খুব্বাং। এভাবেই চলতে চলতে ১১টা ৪৬ মিনিটে খুব্বাং এলাকায় পৌঁছে গেলাম। সেখানে পৌঁছে আমরা সোজা গেলাম খুব্বাং উচ্চ বিদ্যালয়ে।

এরপর সেখান থেকে বাংলাদেশ ভারত মৈত্রী ভবন ঘুরে দেখানো হলো আমাদের। আর সেখানে একসাথে ফটোসেশন হলো। তারপর আমাদেরকে স্কুলে নিয়ে আসা হলো। আমরা স্কুল প্রধানের রুমে বসে একটু বিশ্রাম করলাম। কিছুক্ষণ পরেই একটি কক্ষে খাবার খাওয়ার জন্য নিয়ে যাওয়া হলো। খাবার টেবিলে বসে দেখলাম এখানেও রাজকীয় খাবারের আয়োজন। পেটপুরে খেলাম। তারা এমন আতিথেয়তা করলো সত্যি সাত জনমেও মনে থাকবে। খাওয়া দাওয়া শেষ, এবার অনুষ্ঠান মঞ্চে বসার পালা। তার আগে মুজিবর্ষ উপলক্ষে চারা রোপণ কর্মসূচি পালন করা হয়। পরবর্তী আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে দিয়ে অতিথি বরণ, স্বারক সম্মান প্রদান, উপহার প্রদান করেন খুব্বাং উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও এলাকার নেতৃবৃন্দ। এসময় তারা বিদ্যালয়ের যাবতীয় সমস্যাগুলো তুলে ধরে সহযোগিতা চেয়ে নেন উপজেলার দুই প্রধানের কাছে।

খুব্বাং এলাকাবাসীর দাবিকে প্রাধান্য দিয়ে সাধ্যমত সহযোগিতা দেয়ার চেষ্টা অব্যহত রাখবেন বলে আশান্বিত করেন দুই উপজেলা প্রধান। অনুষ্ঠান শেষ হলো ৩টা ৪৬ মিনিটে। এরপর সকলের কাছে বিদায় নিয়ে উঠে পড়লাম আমাদের স্পিডবোটে। তারপর আমরা সেখান থেকে ৪টায় বরকলের উদ্দেশ্য রওনা হলাম। আসার পথে স্পিডবোট থামিয়ে ঠেগামুখ বাজারে উপজেলা দুই প্রধান বাজার পরিদর্শনের জন্য উঠে দেখল। সেখানকার সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করার পর আবার বরকল উদ্দেশ্য রওনা। স্পিড বোট দুটো ঠেগাবসীর উপহারে এতটা লোড হলো যে, মানুষ বসার মতো অবস্থা ছিল না। ভারত সীমান্ত ভ্রমণে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আতিথেয়তায় সত্যি আমরা সকলেই মুগ্ধ হলাম।