রামগড় হানাদার মুক্ত দিবস আজ
॥ খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি ॥
আজ ৮ই ডিসেম্বর। রামগড় হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও এদেশীয় দোসরদের সহায়তায় রামগড় উপজেলার ক্যাম্পে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট বহু নারীকে ধর্ষণসহ হাজার হাজার নিরীহ জনসাধারণকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
স্বাধীনতা যুদ্ধের সেই উত্তাল দিনগুলোতে রামগড়ের মানুষ গড়ে তুলেছিল সংগ্রাম কমিটি। রামগড় আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ১৯৭১সালের ১৬ মার্চ রামগড় বাজারের বনবীথি বোর্ডিংয়ে এই কমিটি গঠনের জন্য এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। মরহুম কাজী রুহুল আমীনকে আহবায়ক ও প্রয়াত সাংবাদিক সুবোধ বিকাশ ত্রিপুরাকে যুগ্ম আহবায়ক করে ২১ সদস্যবিশিষ্ট সংগ্রাম কমিটি গঠিত হয়। এই কমিটির অন্য সদস্যদের কয়েকজন হলেন, সুরেশ মোহন ত্রিপুরা (অবসর প্রাপ্ত জেলা তথ্য কর্মকর্তা), বনবীথির মালিক মংলাগ্য মারমা, আজিজুর রহমান, যতীন্দ্র কুমার নাথ, কংচাই চেীধুরী (হেড ম্যান)। কমিটি গঠনের পর পরই মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড শুরু করেন।
রামগড়ের স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ১৯৭১ সালে যুদ্ধকালীন সময়ে গেরিলা কৌশলে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য গোটা বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিল তারমধ্যে ১নং সেক্টরের আওতাধীন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের অবস্থিত পার্বত্য অঞ্চল রামগড় ছিল অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর।
দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামী মুক্তিযুদ্ধের লড়াইয়ের পর পাক-হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের পতনের পর ৮ ডিসেম্বর বিকেল বেলায় স্থানীয় মুক্তিযুদ্ধারা রামগড় প্রধান ডাকঘরের শীর্ষে লাল-সবুজের পতাকা উত্তোলন করে রামগড়কে হানাদার মুক্ত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ১নং সেক্টরের কমান্ডার হেমদারঞ্জন ত্রিপুরা, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মফিজুর রহমান, কালাচান দেববর্মন বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সেই উত্তাল দিনগুলোতে রামগড়ের মানুষ গড়ে তুলেছিল সংগ্রাম কমিটি।
দিবসটি উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নতুন করে করোনা মহামারি প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় এ বছরের আয়োজন স্বাস্থ্যবিধি মেনে র্যালী ও পুষ্পমাল্য অর্পণ এবং আলোচনা সভা করে সীমিত পরিসরে পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবিবা মজুমদার।