নানিয়ারচরে বুড়িঘাটে বিদ্যুৎ বঞ্চিত ৪৫ পরিবার
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও ডিজিটাল বাংলাদেশে এখানো বিদ্যুৎ সেবা থেকে বঞ্চিত রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম। এতে প্রায় ৪৫ পরিবারের বসবাস। ঐ গ্রামগুলোতে বিদ্যুৎ সেবা না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখা। এমনকি মোবাইলের চার্জ এবং ডিজিটাল সেবা পেতে প্রায় ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে যাতায়াত করতে হয় নানিয়ারচর উপজেলা সদরে। এতে এদের ৪ থেকে ৫শত টাকা খরচ হয়। তাদের এলাকার পাশ দিয়ে বুড়িঘাট ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হলেও কেন তাদের এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হচ্ছে না এমন প্রশ্নে ঘুরপাক খাচ্ছে গ্রামবাসীর কাছে। তাই দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপনের জন্য প্রধামন্ত্রীর কাছে জোর দাবি জানান গ্রামবাসী।
স্থানীয়রা জানান, নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট ইউনিয়নের ৫,৬ ও ৭ নং টিলায় (গ্রাম) এখানো বিদ্যুতের আলো পৌছায়নি। গ্রামগুলোর পাশে রয়েছে একটি উচ্চ বিদ্যালয় ও প্রাইমারি স্কুল। বিদ্যুৎ না থাকায় ডিজিটাল যুগে স্কুলগুলোতেও ব্যাহত হচ্ছে আধুনিক শিক্ষা কার্যক্রম। তাঁরা অভিযোগ করেন, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তাদের পাশ^বর্তী বেশ কয়েকটি টিলায় (গ্রাম) বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। এই বিদ্যুৎ সংযোগ আগে তাদের দেওয়ার কথা ছিল।
আরেকজন স্থায়ী বাসিন্দা মোঃ কবির হোসেন জানান, বাংলাদেশ সরকার দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে দেয়ার লক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু ডিজিটাল বাংলাদেশে নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট ইউনিয়নের ৫,৬ ও ৭ নং টিলায় (গ্রাম) এখানো বিদ্যুতের আলো পৌছায়নি। বিদ্যুতের জন্য ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনাসহ সবকিছুর জন্য সমস্যা পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর। তাই দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
বুড়িঘাট ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য নেকজান বেগম জানান, তাদের ৫,৬ ও ৭নং টিলায় বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়ায় এলাকাবাসি তাঁর কাছে অভিযোগ করেছে। তাদের পাশ দিয়ে অন্য অন্য এলাকাগুলো বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। কেন তাদের এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হচ্ছে? তাই তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য দাবি করেন।
বুড়িঘাট ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা মোঃ ফারুক অভিযোগ করেন, ২০১৬ সাল থেকে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য বিভিন্ন দফতরে আবেদন করে আসছেন বুড়িঘাট ইউনিয়নের বাসিন্দারা। ইতিপূর্বে বিদ্যুৎ সংযোগের ১১টি খুঁটি স্থাপনের জন্য ২২ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আরও ৩টি খুঁটির জন্য ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন ঠিকাদার।
টাকা নেওয়ার ব্যাপারে বিদ্যুৎ বিতরণের ঠিকাদার মোঃ আবু তাহেরের কাছে প্রতিবেদক জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন। প্রতিবেদককে পিডিবি’র প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়।
নানিয়ারচর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব হাওলাদার জানান, উপজেলার প্রতিটি ঘরে ও প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে সরকার দ্রুতগতিতে কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি বর্তমান প্রকল্পের আওতায় ৪৫ পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করতে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ ও পিডিবি বরাবর দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।
এবিষয়ে তিনটি পার্বত্য জেলার বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পের (রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান দায়িত্বে) নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাইফুর রহমান জানান, বিদ্যুৎ সংযোগের সমস্যা নিয়ে এলাকাবাসী তাঁর কাছে এসেছেন। এলাকাবাসীদের বলা হয়েছে, পাশ^বর্তী এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া শেষ হলে বা ওখানে যদি বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে যায়,তাহলে তাদের সংযোগ দেয়া হবে। এলাকাবাসির কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে কেন,এমন প্রশ্নে তিনি জানান, এরকম অভিযোগ তাঁর কাছে নেই। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।