মানবতার কল্যাণে নার্সিং সহকারী সাজু বড়ুয়া
আনসার ভিডিপিতে সেবা দিয়ে পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
পার্বত্য চট্টগ্রামে জনপ্রতিনিধিসহ অন্যান্য সামাজিক নেতৃবৃন্দ এবং আইনসৃংখলাবাহিনী যেমন মানুষের কল্যাণে কাজ করছেন তেমনি সরকারের আনসার ভিডিপি এর সদস্যরাও সমাজের প্রত্যেক সেক্টরে উন্নয়নের কাজে এগিয়ে যাচ্ছেন। এ বাহিনীর কোন কোন সদস্য পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার সহ সম্মাননা সনদ। তাদের একজন হলো আনসার ভিডিপি’র নার্সিং সহকারী সাজু বড়ুয়া।
জানা গেছে, সাজু বড়ুয়া, ২০০৬ সালের ২৩ ডিসেম্বের চাকুরীতে যোগদান করেন এবং প্রথমে তিনি শেরপুর জেলার নলীতাবাড়ী ১৪ আনসার ব্যাটালিয়নে। পরে এ ব্যাটালিয়নের অধীনে গাজীপুরস্থ আনসার ভিডিপি একাডেমীতে চিকিৎসা বিষয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা কোর্স সফলভাবে সম্মন্ন করেন। পরে তিনি ২০০৯ সালে ১৬ ব্যাটালিয়ন খাগড়াছড়িতে বদলী হন। উক্ত ব্যাটালিয়নের অধীন ৫ ফিল্ড এ্যাম্বুলেন্সে খাগড়াছড়ি সেনানিবাস এ প্রাথমিক চিকিৎসা ক্যাডারে অংশ গ্রহন করে সেখানেও সাফল্য অর্জন করেন। এ বিষয়ে তাঁর বাহিনীতেও যথেষ্ট সুনাম রয়েছে।
সাজু বড়ুয়া জানান, তিনি ২০১৬ সালে রাঙ্গামাটির হাজাছড়া ও সুভলং বদলী হওয়ার পর এলাকায় নিজ সদস্যদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের কল্যানেও কাজ করেন। বর্তমানে সদরস্থ ২৯ আনসার ব্যাটালিয়নের অধীন রাঙ্গামাটি জেলা আনসারও ভিডিপি কার্যালয়ে নার্সিং সহকারী হিসেবে কর্মরত। তিনি এখানে দীর্ঘ ৬ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি জানান, ২০১৭ সালে রাঙ্গামাটিতে ভুমি ধ্বসের পর বিভিন্ন এরাকায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কল্যাণে অন্যান্যদের পাশাপাশি নিজেও কাজ করেছেন। ভয়ানক পাহাড় ধ্বসে নিহতদের উদ্ধারের পাশাপাশি আহতদের পরম মমতা দিয়ে সেবা করেছেন। সে সময় তিনি সদর উপজেলার টিভি ভবন এলাকার শিমুলতলীতে পাহাড় ধ্বসে নিহত হিল আনসার সদস্য জিয়া সহ তার স্ত্রী ও এক মেয়েকে উদ্ধার করে নিজ উদ্যোগেই হাসপাতালে ভর্তি করান বলে এ প্রতিবেদককে জানান। তিনি জানান, সাবেক জেলা কমানড্যান্ট মোঃ আব্দুল আওয়াল এর সহযোগীতায় পাহাড়ী এলাকায় যেখানে বিশুদ্ধ পানির অভাব সেখানের মানুষের মাঝে বিনামূল্যে পানি বিশুদ্ধ করণ ট্যাবলেট বিতরণ করে সুনাম অর্জন করেন। এছাড়াও তিনি আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের মাঝেও পানি বিশুদ্ধ করণ ট্যাবলেট বিতরণ। জেলার অধীন যে সকল ব্যাটালিয়ন আছে সেখানে কর্মরতরা অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি নিজ উদ্যোগে দ্রুত সেবা দিতে কাজ করেন।
সাজু বড়ুয়া আরো জানান, ২০২০ সালে মহামারি করোনা-১৯ ভাইরাস এ আক্রান্তদের নির্ভয়ে সেবা দিয়েছেন। কর্মস্থলে দায়িত্ব পালনের সময় যে সব আনসার কর্মকর্তা, কর্মচারী, সদস্য, সদস্যাদের করোনা পজিটিভ হয়েছে তাদেরকে আইসোলেশনে থেকেও সেবা দিয়েছেন। বর্তমানে সবাইকে টিকা গ্রহনের কাজে সহযোগীতা করছেন। তিনি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে নিজ কর্মরত কার্যালয়ের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে সচেতন রাখতে এখনো কাজ করে চলেছেন। রাঙ্গামাটিতে ২হাজার ৯শত ভিডিপি সদস্যদের শাররীক অসুস্থতার সময় সার্বিক সহযোগীতা করেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি তাঁর বাহিনীতে যেমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তেমন সাধারনের মাঝেও তাই করেছেন।
সাজু বড়ুয়া জানান, তাঁর এসব প্রশসার পিছনে কাজ করেছে আনসার ও ভিডিপিতে চাকুরী পাওয়ার আগে ২০০৩ সালে তিনি পল্লী চিকিৎসক এর পরীক্ষায় পাশ করেন। সে সময়ও তিনি নিজের কাজের পাশাপাশি গ্রামের অসহায় মানুষের কল্যাণে সেচ্ছাশ্রম দিয়েছেন। ২০০৬ সালে আনসার ব্যাটালিয়েন চাকুরী পাওয়ার পর এ দায়িত্ব যেন আরো বেড়ে গেছে। তাই দেশ ও মানুষের কল্যাণে সর্বদা সচেষ্ট বলে তিনি উল্লেখ করেন।