[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় পাটের মোড়ক ব্যবহার না করায় জরিমানারাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের শিক্ষা উপবৃত্তি রেজিস্ট্রেশনের সময় বাড়ালঅপহৃত শিক্ষার্থীদের মুক্তি ও ধর্ষকের শাস্তি দাবিতে বান্দরবানে প্রতিবাদ সমাবেশবান্দরবানের লামায় বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের ৫ দিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরুপারভেজ হত্যার প্রতিবাদে খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় ছাত্রদলের মানববন্ধনখাগড়াছড়ির দীঘিনালায় ৭বিজিবি’র বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদানবান্দরবানের লামায় বাগান দখলের অভিযোগে সাতকানিয়ার শওকত হাজতেখাগড়াছড়ির রামগড়ে রংতুলি’র ঈদ, নববর্ষ ও বৈসাবি’র পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানখাগড়াছড়ির রামগড়ে দেশীয় অস্ত্র এলজি ও কার্তুজ উদ্ধারখাগড়াছড়িতে অপহৃত ৫শিক্ষার্থীর মধ্যে লংঙি ম্রো বান্দরবান উপজেলা আলীকদমের
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাঙ্গামাটিবাসীকে দেয়া প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নও হচ্ছে

জুগুলুক্যা পাহাড় ও পুরাতনবস্তীর হাজারো মানুষের স্বপ্নপূরণ হচ্ছে ৫ যুগ পর

৪৫

॥ মোঃ নুরুল আমিন ॥

অবশেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুত রাঙ্গামাটি শহরের রির্জাভ বাজারস্থ বিচ্ছিন্ন দুইটি দ্বীপে বসবাসকারী তিন হাজারেরও অধিক মানুষের স্বপ্নপূরণ হলো। সেই সাথে দীর্ঘ বছরের অপেক্ষার পালারও অবসান হতে চলেছে আগামী বছরের জুনেই। তাই আর নৌকায় চড়তে হচ্ছে না দ্বীপের মানুষের।

সরেজমিনে দেখা যায়, জুগুলুক্যা পাহাড় ও পুরাতনবস্তী এই দু’টি দ্বীপ হল ভিন্ন। আগে নৌকা ও বোটযোগে প্রতিনিয়ত শহরে যাতায়াত করতে চরম ভোগান্তিতে পড়তো দ্বীপে বসবাসকারী মানুষেরা। তাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল কবে একটি ব্রীজ নির্মাণ হবে। তাদের যাতায়াতের পথ কখন সুগম হবে? অবশেষে দীর্ঘ ৫ যুগ পর তাদের অধরা স্বপ্ন পূরণ হল। নির্মিত হলো দুটো দ্বীপের জন্য দুইটি ব্রীজ। দ্বীপ দুটো কাছাকাছি হওয়ায় ব্রীজ দুটো মিলেই যেন ওয়াই আকৃতির ব্রীজে রূপ নিলো। দুই দ্বীপের যোগসন্ধীর কারনে ব্রীজদুটিতে পর্যটকের তীক্ষ দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।

স্থানীয় অধিবাসীরা জানান, ১৯৬০ সালে কাপ্তাই বাঁধ দেয়া হলে বাঁধের উদ্ভাস্তু এলাকাবাসীকে পুরাতনবস্তী ও জুগুলুক্যা পাহাড় এলাকায় পূর্ণবাসিত করা হয়। তখন থেকে এলাকার স্থানীয় জনগনের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল যোগাযোগের জন্য একটি ব্রীজ। এরপর থেকেই স্থানীয়রা জনপ্রতিনিধিদের কাছে বিভিন্নভাবে তদবির করে আসলে রাঙ্গামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং, এমপি এর প্রচেষ্টায় এবং তাদের দুঃখ ও দুর্দশার কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাঙ্গামাটি সফরে আসলে ২০১৩ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ব্রীজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন। এটি রাঙ্গামাটির মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ৭টি প্রকল্পের মধ্যে আরো একটি প্রকল্প। যেটি অনেক জটিলতার পর অবশেষে বাস্তবায়নেরও শেষের পথে।

স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, যখন ব্রীজ ছিল না, তখন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও মূমুর্ষ রোগীদের নিয়ে নৌকা বা বোটের জন্য তাদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হতো। ব্রীজ নির্মাণ হওয়ার পর তাদের এ অপেক্ষা আর করতে হয় না। এখন অটোরিক্সা সহ ছোট যানবাহন তাদের বাড়ির সামনে চলে যায়। তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। একই এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম জানান, পুরাতনবস্তী ও জুগুলুক্যা পাহাড় এলাকা স্থাপিত হওয়ার পর থেকে নৌকা বা বোট দিয়ে যাতায়াত করতেন। যাই হোক, দীর্ঘ ৫ যুগ পর প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে এ ব্রীজগুলো নির্মিত হয়েছে। এটি তাদের জন্য অনেক সৌভাগ্যের ব্যাপার। তাদরে কোন জরুরি রোগী থাকলে আগে নৌকা বা বোট করে নিয়ে দৌঁড়ায়তে হতো। এখন এ কষ্ট দূর হয়েছে।

একই এলাকার আরেক বাসিন্দা মোঃ আব্দুল মান্নান জানান, পুরাতনবস্তী ও জুগুলুক্যা পাহাড় এলাকায় প্রায় তিন হাজারোও মানুষের বসবাস। ব্রীজ নিমার্ণের ফলে এই এলাকাগুলো শিক্ষা, চিকিৎসা, যাতায়াত এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে। তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার,পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। রিজার্ভ বাজার এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী মোঃ মঈন উদ্দিন সেলিম জানান, কাপ্তাই হ্রদ সৃষ্টি হওয়ার পর দীর্ঘ বছর পানিবন্দি ছিল পুরাতনবস্তি ও জুগুলুক্যা পাহাড় এলাকার মানুষ। প্রধানমন্ত্রীর এ প্রকল্পের ফলে ব্রীজ নির্মিত হওয়ার পর তাদের যত দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে। এখন শহরের সাথে খুব সহজে তাদের যোগাযোগ বেড়ে গেছে। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যে মানুষ লাভবান হচ্ছে। জুগুলুক্যা পাহাড় ও পুরাতনবস্তীর হাজারো মানুষের স্বপ্নপূরণ হচ্ছে ৫ যুগ পর। সেই সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাঙ্গামাটিবাসীকে দেয়া প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নও হচ্ছে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তুষিত চাকমা জানান, পার্বাত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার রিজার্ভ বাজারের সাথে জুগুলুক্যা পাহাড় ও পুরাতনবস্তী সংযোগের জন্য পিসি গার্ডার ফুট ব্রীজ নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পটি ডিপিপি অনুযায়ী মোট প্রকল্পের ব্যয় ১৭ কোটি ৬৩ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা। ব্রীজের দৈর্ঘ্য ৪.২০ মিটার এবং প্রস্থ ৪.১৫ মিটার। ব্রীজের নির্মাণের কার্যক্রম দ্রুতগতি চলমান রয়েছে এবং আগামী জুন ২০২২ সালে সমাপ্ত হবে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান (সচিব পদমর্যাদা) নিখিল কুমার চাকমা জানান, প্রধানমন্ত্রী সারা বাংলাদেশে যোগাযোগের ক্ষেত্রে যে অন্যন্য সৃষ্টি করে যাচ্ছেন। সেটি জুগুলুক্যা পাহাড় ও পুরাতনবস্তী সংযোগের জন্য অন্যতম একটি মাইলফলক। তিনি ব্রীজটি’র উদ্বোধনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী’র বদান্যতায় ও সানুগ্রহে যেদিন অনুমতি দিবেন। সেদিন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে ব্রীজটি শুভ উদ্বোধন করা হবে বলে তিনি জানান।