॥ মিল্টন চাকমা, মহালছড়ি ॥
সামান্য বৃষ্টি হলেই পাহাড়ি ঢলের পানিতে ডুবে যায় মহালছড়ি সরকারী কলেজ এলাকা । পানি কলেজের প্রতিটি কক্ষেতেও ঢুকে প্রতি বছর প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র ও ফার্ণিচারের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এদিকে ঢলের পানি নেমে আসলে ২৪ মাইল নামক জায়গা প্লাবিত হয়। ফলে খাগড়াছড়ি-রাঙ্গামাটি- মহালছড়ি সদরের সাথে সকল যানবাহন চলাচল ২-৩ ঘন্টা বন্ধ থাকে। এ সময় পথচারীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়।
শনিবার (২৪ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে মহালছড়ি কলেজে গিয়ে দেখা যায়, সামান্য বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে মহালছড়ি কলেজ ও মহালছড়ি সদরে যাওয়ার একমাত্র সড়কটি পানিতে তলিয়ে গেছে। স্থানীয় এক পথচারী কান্তি মারমা বলেন, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত পথচারী ও স্থানীয় জনসাধারণের এ ভোগান্তি পোহাতে হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিলেও আজ অবধি কোন সুফল পাওয়া যায়নি।
অপর দিকে স্থানীয় কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী, পথচারী এবং ব্যবসায়ী মহল অভিযোগ করেন প্রতিবছর বর্ষা আসলেই তাদের খুবই ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। এসময় স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরা চরম কষ্ট করে নিজেদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হয়। বর্তমানে করোনার কারনে গত বছর থেকেই এখনো স্কুল কলেজ বন্ধ রয়েছে। পথচারীরা জানান, বৃষ্টি হলেই এই ত্রী-রাস্তার চলাচল খুবই কষ্টের হয়ে দাঁড়ায়। একটু অসাবধান হলেই বিপদে পড়তে হয়। অপর দিকে স্থানীয় ব্যবসায়ী মহল জানান, রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি এবং মহালছড়ি এই ত্রি-রাস্তার মধ্যে জনসমাগম হলে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্টান গড়ে ওঠে এতে অনেকের জীবন ধারনও হয়। কেউ কৃষি কাজ, কেউ চাকরীরস্থানে কেউবা যায়াতাতের বিরতীর সময় এখানে বসে খাওয়া দাওয়া করেন আবার অনেকেই নানা পন্য ক্রয়ও করেন। কিন্তু বর্ষা আসলেই সবাই অনেক কষ্টের মধ্যে পড়ে যায়। স্থানীয় উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানগুলো জনস্বার্থে এর দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া দরকার বলে জানান।
মহালছড়ি সরকারী কলেজ এর অধ্যক্ষ ফরিদুল আলম চৌধুরী খাল খনন না হওয়াকে দায়ী করে বলেন, পার্শ্ববর্তী খালটি খনন না করায় ২০১৫ সাল হইতে বর্তমান পর্য্যন্ত এ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম এলেই কলেজের আসবাবপত্র, কক্ষের ফ্লোরসহ একাডেমিক ভবনের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। তিনি আরো বলেন, খাল খননের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। কিন্ত আজ অবধি খাল খনন করার কোন লক্ষন দেখতে পাচ্ছিনা। খাল খনন না হওয়া পর্য্যন্ত এর ভোগান্তি শেষ হবে না বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এ বিষয়ে মহালছড়ি উপজেলা পরিষদ এর ভাইস চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে খাল খননের জন্য গত বছর পরিদর্শনে এসেছিলেন এবং অতি দ্রুত খাল খননের কাজ করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্ত এরপর থেকেই আজ অবধি কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। তিনি আরো বলেন, নিজ উদ্যেগে যতটুকু সম্ভব খালের উপড় পড়ে থাকা ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করেছি। সবটুকুতো আর তাঁর একার পক্ষে সম্ভব নয়। তাপরও তিনি এর প্রতিকারের জন্য সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলবেন বলে জানান।