[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক সদস্য আলীম বহিষ্কারখাগড়াছড়ির দীঘিনালায় নানান আয়োজনে নববর্ষ উদযাপনবাঘাইছড়িতে উপজেলা প্রশাসনের নববর্ষ উদযাপনরাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বিএনপির শোভাযাত্রামাটিরাঙ্গায় বর্ণিল আয়োজনে উপজেলা প্রশাসনের বর্ষবরণ শোভাযাত্রাখাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় বর্ণিল আয়োজনে বাংলা নববর্ষ বরণ করেছে বিএনপিবান্দরবানের থানচিতে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হচ্ছে সাংগ্রাই উৎসবখাগড়াছড়ির রামগড়ে গাঁজাসহ এক মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতারইসরাইল কর্তৃক ফিলিস্থিনে গণহত্যার প্রতিবাদে রাঙ্গামাটিতে ওয়ার্ল্ড পীস্’র মানববন্ধনঢাকা রমনা লেকে ফুল ভাসিয়ে ফুলবিঝু উৎসব পালন করলেন পার্বত্য উপদেষ্টা
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

একটি অংশ দিতেও চান প্রধাণমন্ত্রীর হাতে

স্বপ্নের ‘পরী পালং খাট’ কোটি টাকায় বিক্রি করতে চান উদ্যোক্তারা

১৫৮

।। মোঃ ইসমাইল হোসেন, মানিকছড়ি ।।
মানুষের জীবনে নানা রকম স্বপ্ন থাকে। আর সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে মানুষ নিড়লসভাবে কাজও করে যায়। স্বপ্ন বাস্তবায়নে কঠোর পরিশ্রমও করে যায় দিনের পর দিন, রাতকে রাত কিংবা বছরকে বছর। তেমনি এক কাঠ মিস্ত্রী স্বপ্ন দেখেছিলেন নিজের মনের মত করে একটি “পরী পালং খাট” বানাবেন। তাই এক মালিকের বাসার আসবাবপত্র বানাতে এসে তাকে তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের কথা জানান। পাশাপাশি বাসার মালিকও তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সাড়া দিয়ে কাঠ মিস্ত্রীর কঠোর পরিশ্রম আর বাসার মালিকের অর্থ দুটো মিলে বানিয়েছেন স্বপ্নের “পরী পালং খাট”। যেটি বানাতে সময় লেগেছে প্রায় ৩ বছর ২ মাস। বর্তমানে এটির কাজ শেষ হয়েছে।

বলছিলাম খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলাধীণ জালিয়পাড়া এলাকার কাঠ মিস্ত্রী কাঞ্চণ মিয়া ও মোঃ নুরুন্নবী’র কথা। বাসার মালিকের ডাক নাম ডা. নুরুন্নবী। পেশায় একজন ব্যবসায়ী। আর কাঠ মিস্ত্রী কাঞ্চণ মিয়া একই এলকার বাসিন্দা। দুজনে মিলে দীর্ঘ ৩ বছর ২ মাস কঠোর পরিশ্রমে বানিয়েছেন তাদের স্বপ্নের “পরী পালং খাট”। খাট তৈরির কাজ শেষ করে বাইরে বের করলেই সেটি স্থানীয়দের নজড় কাড়ে। যার ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ লোক মুখে এর কারুকার্য্যের কথা ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানের লোকজন এটি দেখতে ভির জামাচ্ছেন তার বাড়িতে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নুরুন্নবী ও মিস্ত্রী কাঞ্চণ মিয়া দুজনে মিলে যে “পরী পালং খাট” টি বানিয়েছেন সেটি সরাসরি না দেখলে বুঝার উপায় নেই যে তারা দুজন শিল্পের কি পরিমান মেধা খাটিয়ে এ ধরণে কারুকাজের মাধ্যমে খাটটিকে তৈরি করেছেন। কাঠ মিস্ত্রী কাঞ্চণ মিয়া জানান, আমি দেশের বিভিন্ন স্থানে কাঠ মিস্ত্রীর কাজ করেছি। কাজ করতে গিয়ে আমি এক সময় স্বপ্ন দেখেছি যে কোনো ডিজাইন অনুসরণ না করে আমার মনের মত করে মেধা ও শ্রম দিয়ে একটি “পরী পালং খাট” তৈরি করব। আর তাই নুরুন্নবী ভাইয়ের বাসার আসবাবপত্রের কাজ করতে এসে তাকে আমার স্বপ্নের কথা জানালে তিনিও আমার স্বপ্নকে বাস্তবায়নের আশ^াস দেন। তার অর্থ ও আমার মেধা ও শ্রমকে কাজে লাগিয়ে প্রায় ৩ বছর ২ মাস সময় ব্যয় করে এই খাটটি বানিয়েছি। যার ফলে আমার স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়েছে। তাছাড়া খাটের সৌন্দর্য্য দেখতে বর্তমানে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে অসংখ্য মানুষ এসে ভির জমাচ্ছেন। আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমি খুবই গর্বিত। পুরো খাটটিতে ছোট-বড় সবমিলিয়ে ১৬টি পরী রয়েছে। যার মধ্যে ৪টি বড়। সেই ৪টি পরীর হাতে একটি করে প্রজাপতী স্থাপন করা হয়েছে। যেগুলোকে যে দিকে ইচ্ছে সেদিকে ঘুরানো যাবে।

 

খাটের মালিক নুরুন্নবী জানান, কাঞ্চাণ মিয়া তার স্বপ্নের কথা জানালে আমি রাজি হই। তাকে কাজ শুরু করতে বলি। সেও অলসতা না করে মেধা ও কঠোর শ্রম দিয়ে কাজ করে অত্যান্ত দৃষ্টিনন্দন এই পরী খাটটি বানিয়েছেন। এতে তার প্রায় তিন বছর দুই মাস সময় লেগেছে। ৮৫ ফুটেরও বেশি সম্পূর্ণ সেগুন কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে খাটটিকে। বার্ণিশ মিস্ত্রী বাবদ প্রায় ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তাছাড়া মিস্ত্রীর মুজুরী বাবদ প্রায় ১০ লাখের কাছাকাছি খরচ হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যামসহ লোক মুখে খাটের সৌন্দর্যের কথা ছড়িয়ে পড়লে। দেশের বিভিন্নস্থান থেকে মানুষ এসে দেখে যাচ্ছে। কত হলে খাটটি বিক্রি করব তাও জানতে চাচ্ছে। ইতোমধ্যে অপরিচিত কোনো একব্যক্তি ঢাকা থেকে ৭০ লাখ টাকা দামে কিনতেও আগ্রহ প্রকাশ করেছে। খাটটি কত টাকা হলে বিক্রি করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও জানান, খাটটির কোনো নির্ধারিত মূল্য নেই। যে বেশি টাকা দিবে তার কাছে “পরী পালং খাট”টি তুলে দিতে চাই। পাশাপাশি খাটের পেছনে খরচ বাদ দিয়ে লাভের একটি অংশ অসহায়-হতদরিদ্র মানুষের কল্যাণে ব্যয় করার জন্য মাননীয় প্রধাণমন্ত্রীর তুলে দেয়ার কথাও জানান তিনি ।

ইউপি সদস্য মোঃ আরমান হোসেন জানান, বর্তমান সময়ে নতুন ডিজাইনের অনেক সুন্দর সুন্দর খাট তৈরি হচ্ছে। কিন্তু এমনটি সত্যি বিরল। দুজন মিলে পরী খাটের পেছনে যে মেধা, শ্রম ও অর্থ ব্যয় করেছে এবং নান্দনিক একটি আধুনিক মানের খাট তৈরি করেছেন তাতে তারা দুজনই প্রশংসার দাবীদার। আশা করছি তারা তাদের মেধা ও শ্রমানুযায়ী ভালো মূল্যে খাটটি বিক্রি করতে পারবে। খাটটিকে তৈরি করতে প্রতিনিয়ত স্বচোখ্যে দেখেছেন মোঃ শাহিন আলম। তিনি জানান, খুব কাছ থেকে দেখেছি এবং উপলব্ধি করেছি। কিভাবে তারা দুজন পরিশ্রম করে এটিকে দাড় করিয়েছেন। কাঞ্চণ মিয়ার দিনরাত কঠোর পরিশ্রম ও নুরুন্নবীর সার্বিক সহযোগিতার ফলে এটি এখন আলোচিত। সকলে এসে একনজড় দেখে যাচ্ছে খাটের সৌন্দর্য্য। তাদের নিয়ে আমরা এলাকাবাসী সত্যিই গর্বিত।

প্রতিবেশি মোঃ নুরুল ইসলাম বলেন, তাদের দৃষ্টিনন্দন কাজের সঠিক মূল্য পেলে যেমন মালিক পক্ষ বা উদ্যোক্তাদের আগ্রহ যেমন বাড়বে পাশাপাশি যারা কাজের সাথে সম্পৃক্ত আছেন (কাঠ মিস্ত্রী) তারাও এমন কারুকার্য্যে তাদের কাজকে ফুটিয়ে তোলার আগ্রহ প্রকাশ করবেন।