[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
দীঘিনালায় যৌথবাহিনীর হাতে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ কর্মী আটকবান্দরবানে রিপোর্টার্স ইউনিটির ভবন জোড়পূর্বক দখলের অভিযোগবান্দরবানের থানচিতে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশমানিকছড়িতে চাঁদাবাজি করতে এসে জনতার হাতে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটকবরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগরাঙ্গামাটির লংগদুতে নৌকার কিছু নেতাকর্মী এখন ট্রাকে উঠে গেছেকাজে দীর্ঘসূত্রতা পরিহার এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে-পার্বত্য উপদেষ্টাসড়ক দুর্ঘটনায় কাপ্তাই বিএফআইডিসি এলপিসি শাখার কর্মচারী নিহতমানিকছড়ির নবাগত ইউএনও’র সাথে বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের শুভেচ্ছা বিনিময়খাগড়াছড়িতে বন্যাকবলিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

পার্বত্য চট্টগ্রামের সংরক্ষিত বন রক্ষায় কঠোর হতে হবে

৪৯

এক সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছিলো বনবনানীর এক বিরাট সম্ভার বলা যায় বিশাল বিশাল বনের মজবুত। তাই পার্বত্য চট্টগ্রামকে বলা হতো দুষণমুক্ত অক্সিজেনের বিরাট ভান্ডার। বিরাট এ বনবনানীকে নিয়ে ব্যবসা আর দখল দারিত্বের প্রতিযোগীতার কালের ক্রমে মানুষের নানান অত্যাচারে বনবনানীর এ বিরাট সম্ভার বা দুষণমুক্ত অক্সিজেনের স্থান অনেক কমে আসছে। তিন পার্বত্য জেলার কোথাও না কোথাও বন ধ্বংস হয়েই চলছে। সংরক্ষিত বনের গাছ কেটে নিত্য পাচার করা হচ্ছে। পাচারকারী চক্রয় হয় রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় নব বনবিভাগের ছত্রছায়ায়। তেমনি বান্দরবানের আলীকদম ও থানচি এলাকায় দুর্গম সংরক্ষিত বন এবং অভয়ারণ্যের প্রাচীন বহু গাছ কেটে পাচার করছে চোরকারবারীর দল। গত দু’মাসে আলীকদম ও থানচি পাহাড়ী বনাঞ্চলের শতাব্দীর প্রাচীন গাছগুলো সাঙ্গু সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও মাতামহুরী রির্জাভ থেকে অবৈধভাবে কেটে পাচার করা হচ্ছে। গত কয়েক বছরে বনের প্রায় একশত একর জমির গাজ কেটে নিয়ে সম্পূর্ণ খালি করা হয়েছে। এলাকার স্থানীয় জনসাধারন বন উজারের বিষয়ে দীর্ঘ দিন ধরে অভিযোগ করে কিন্তু অদৃশ্য শক্তির কারনে কোটি কোটি টাকার গাছ পাচার হচ্ছেই।

প্রত্যক্ষদর্শী ও থানচির স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, বান্দরবান শহর ও চট্টগ্রামের কাঠ ব্যবসায়ীদের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট গত কয়েক বছর ধরে শীতের মৌসুমে এই পাহাড়ি বন থেকে গাছ পাচার করে আসছে। অথচ এসবের বিরুদ্ধে কখনই ব্যবস্থা নেয়নি বন বিভাগ। সব সময়ই তারা ‘জনবল ঘাটতি’র অজুহাত দেখিয়ে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে তারা পাহারা দিতে পারছে না বলে জানান। আবার অনেকেই অভিযোগ করেছেন জানা সত্বের বনের গাছ লুটপাটে বন কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নীরব রয়েছে। এদিকে, বাংলাদেশ স্পেস রিসার্চ অ্যান্ড রিমোট সেন্সিং অর্গানাইজেশনের (স্পারসো) নেওয়া এবং বিশ্লেষণ করা স্যাটালাইট চিত্রগুলো থেকে দেখা যায়, বৃহৎ বনাঞ্চলের অন্তত ২৪টি স্পট থেকে গাছ কাটা হচ্ছে। স্পারসোর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ মাহমুদুর রহমান সাঙ্গু সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ৮৬৭ হেক্টর (দুই হাজার একরও বেশি) এলাকার একটি চিত্র বিশ্লেষণ করেছেন। যার মধ্যে অন্তত ৪০ হেক্টর (প্রায় ১০০ একর) জায়গার সব গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। ড. মোঃ মাহমুদুর জানান, ২০১৬, ২০১৯ এবং ২০২০ সালে তোলা চিত্রগুলো দেখলে এটা স্পষ্ট হয় যে প্রতি বছরই গাছ কেটে বন খালি করা হচ্ছে।

স্থানীয় গ্রামের লোজনের জানান, প্রতিদিনই বৃক্ষনিধন করা হয় সংরক্ষিত পাহাড়ী বনাঞ্চলে। তাদের কেউই নাম প্রকাশে আগ্রহী নন। তারা বলেন, সংরক্ষিত বনের অন্দরমানিক, ডুংডুং পাড়া, মিলিঙ্গা পাড়া, ম্রংগং পাড়া, নরিষা জিরি, বড়মাদোক জিরি এবং সিঙ্গাপা মৌজা জিরি, আলীকদম উপজেলার তৈনফা মৌজা, মাংঙ্গু মৌজা, মাতামহুরী এলাকা, থানচি সড়কের ২ পাহাড় থেকে নির্বিচারে কেটে নিয়ে যাচ্ছে গাছ। পেট্রোল চালিত বৈদ্যুতিক করাত দিয়ে নির্বিচারে শতবর্ষ পুরানো গাছও কেটে পাচার হয়ে গেছে। থানচি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান চা সা থোয়াই মারমা অভিযেগ করেছেন গত কয়েক মাসে চোরাকারবারিরা সাঙ্গু সংরক্ষিত বন থেকে প্রায় ৩০ হাজার ফুট গাছ কেটে ফেলেছে। অবৈধভাবে এসব গাছ কেটে সাঙ্গু নদী দিয়ে বান্দরবান হয়ে ঢাকা এবং চট্টগ্রামে পাচার হচ্ছে। এবাবেই দিনের পর দিন সংরক্ষিত অঞ্চলের বিরাট বিরাট গাছ কেটে পাচার হয়ে থাকলেও বন বিভাগের নীরবতা পাচার কাজকে সহযোগীতা করার মতো বলে অনেকেই জানিয়েছে। কিন্ত কথা হলো দায়িত্বরতরা যদি এভাবেই নীরবতা থাকেন তাহলে সংরক্ষিত বনের চরম ক্ষতি হতেই থাকবে। জনবল সংকট বলে দায়িত্বকে অবহেলা করা যাবে না। যেটুকুই আছে সেটুকুই দিয়ে বন রক্ষা করতে হবে। পাচারকারীদের দমন করতে হবে। তাই কর্তৃপক্ষকে কঠোর হতে হবে।