মসজিদের ইমামকে রাজকীয় বিদায় জানালেন এলাকাবাসী

‎॥ মোঃ ইসমাইল, পানছড়ি ॥
‎‎এই বিদায়ে কোনো দুঃখ নেই, কারণ আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে আলাদা হচ্ছি। আল্লাহ আমাদের আবার একত্র করুন জান্নাতুল ফেরদৌসে। এই আবেগঘন উদ্ধৃতি দিয়েই শুরু হয় শহিদ ইকবাল জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা তাওহিদুল ইসলাম সাহেবের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। দীর্ঘ ৯ বছর সততা ও আন্তরিকতাকে সঙ্গ দিয়ে ইমামতির দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। শনিবার (১ নভেম্বর) সকাল ৯টায় তাঁর বিদায় উপলক্ষে এক আবেগঘন সম্মাননা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এলাকার যুব সমাজ। এতে এলাকাবাসী কান্নাভেজা চোখে ফুলেল ভালোবাসায় বিদায় জানান এই শ্রদ্ধেয় আলেমকে।

‎মাওলানা তাওহিদুল ইসলামুধুই মসজিদের ইমাম ছিলেন না; ছিলেন এলাকার ধর্মীয়, সামাজিক ও নৈতিক জাগরণের এক বাতিঘর। সুমধুর ক্বেরাত, হৃদয়ছোঁয়া খুতবা এবং বিনয়ী আচরণ দিয়ে তিনি এলাকার সকল শ্রেণির মানুষের মনে স্থায়ী জায়গা করে নেন স্বল্প সময়েই। নারী-পুরুষ, ছোট থেকে বড় সব বয়সী মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেন ইসলামের শিক্ষার আলো।

‎বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে ইসলামি আদর্শে উদ্বুদ্ধ করতে তাঁর ভূমিকা ছিল অনন্য। তাঁর শিক্ষাদান, উপদেশ ও জীবনদর্শন এলাকার ধর্মপ্রাণ মানুষকে উৎসাহিত করেছে সঠিক পথে চলতে। তাই বিদায়ের মুহূর্তে আবেগ সংবরণ করতে পারেননি কেউই। মসজিদের আঙিনা জুড়ে ছিল শত মানুষের কান্না, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার এক অপূর্ব সমারোহ।

‎বিদায় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন মসজিদের ইমাম ও মোল্লাপাড়া এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সহ মসজিদ কমিটির অনেকেই। বক্তারা বলেন, মাওলানা তাওহিদুল ইসলামের মতো আলেম সমাজে বিরল। তাঁর খেদমত, ইলম ও আখলাক সত্যিই অনুকরণীয়। তিনি আমাদের হৃদয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন এলাকার যুব সমাজ। তারা বলেন, তিনি শুধু একজন ইমাম ছিলেন না, ছিলেন নৈতিক অভিভাবক। তাঁর অবদান এলাকার জন্য এক অমূল্য ধন। তিনি ছিলেন আমাদের আলোর দিশারী।

‎বিদায়ের সময় ফুল দিয়ে সাজানো একটি গাড়িতে সম্মানের সঙ্গে মাওলানা তাওহিদুল ইসলামকে বিদায় জানান এলাকাবাসী। ছোট শিশুরাও চোখের জল ধরে রাখতে পারেনি। সেই সময়টাতে পুরো মসজিদ প্রাঙ্গণে সৃষ্টি হয় এক হৃদয়বিদারক ঘটনা।