আলীকদমে দূর্গম স্কুলগুলোতে অনুপস্থিত থেকেও বেতন তুলছেন শিক্ষকরা
॥ সুশান্ত কান্তি তঞ্চঙ্গ্যাঁ, আলীকদম ॥
বান্দরবানের আলীকদম উপজেলাধীন ৪ নং কুরুকপাতা ইউনিয়নের দূর্গম এলাকার জাতীয়করণকৃত প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত না থেকে নিয়মিত বেতন ভাতা উত্তোলনসহ নানা অভিযোগ উঠেছে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে।
দূর্গম দোছড়ি এলাকার স্থানীয় কারবারি ও লোকজন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দাখিল করেন।
মংপং ম্রো কারবারি, মেনক ম্রো কারবারি, রেংরই ম্রো কারবারি,মাংক্রাত ম্রো,লক্ষিমনি কারবারি, ববিরত কারবারি বলেন, আমাদের দূর্গম এলাকার বিদ্যালয় গুলোতে শিক্ষকরা নিয়মিত স্কুল না করে প্রতি মাসে বেতন ভাতা উত্তোলন করেছেন। আমাদের কোমলমতি শিশুরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে নিয়মিত। তারা মাসের শেষে এসে স্কুলের হাজিরা খাতা আর বেতন খাতায় স্বাক্ষর করে আবার চলে যায়। তারা আরও বলেন, যদি বিদ্যালয়ে নিয়মিত শিক্ষক উপস্থিত থাকতে না পারে তা হলে এখানে সরকারি স্কুল রাখা কোন প্রয়োজন নেই বলে জানান।
বিজয় ত্রিপুরা,বদলই ম্রো,হাজিরাং ত্রিপুরা,চংলক ম্রো,ক্যামপ্রে ম্রো অভিযোগ করে বলেন,এ এলাকার স্কুল গুলোর মধ্যে মেনকিউ মেনক পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,রুইপা রামজুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,পায়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,পারাও পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খিদুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,ডর মেনরাইপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাইতুমনিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,রাংলাই দাংলিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,কমচঙ ইয়ুংছা মাওরুমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা বিগত ২০১৭ সাল থেকে এই বিদ্যালয় গুলোতে চাকরি করে আসছে। তখন থেকেই শিক্ষকরা স্কুলে ঠিক মতো আসেনা। নিয়মিত পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা হয়না বলে জানান।এই এলাকার ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের শিক্ষকদের মধ্যে কয়েকজন ছাড়া বাকি কোন শিক্ষক কে চিনেন না বলে জানান।
তারা আরও বলেন, সদর এলাকার বিদ্যালয় গুলোর মত বেশি ছাত্র-ছাত্রী নাই এরপরও শিক্ষকরা নিয়মিত পাঠদান করাতে পারেন না কেন। বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হয়েও কি ভাবে তারা নিয়মিত বেতন ভাতা নেন? ৪ নং কুরুকপাতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ম্রো বলেন, আমার ইউনিয়নের আওতাধীন দূর্গম এলাকায় যে প্রাইমারি স্কুলগুলো আছে সে বিদ্যালয় গুলোতে শিক্ষকরা নিয়মিত উপস্থিত থাকেন না বলে জানান। তিনিও আরও বলেন, নিয়মিত স্কুল ক্লাস না হওয়ার কারণে কোমল মতি শিশুরা স্কুল থেকে ঝড়ে পড়ছে এবং সুশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলেন।
আলিকদম উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ কামাল হোসেন বলেন, কিছুদিন হলো মাত্র যোগদান করেছি। বিদ্যালয়ে যদি শিক্ষকরা নিয়মিত উপস্থিত না থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
বান্দরবানের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোফাজ্জল হোসেন খান বলেন, বিদ্যালয় গুলোতে যদি নিয়মিত শিক্ষকরা উপস্থিত না থাকে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।