[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে হেডম্যান মংথোয়াইলা এর বিরুদ্ধে নানান অভিযোগকামাল হোসেন ছিলেন একজন অকুতোভয় নির্ভীক সাংবাদিকবান্দরবানের থানচিতে হেডম্যান পাড়ার কালভার্ট গ্রামবাসীদের মরণফাঁদরাঙ্গামাটির রাজস্থলীতে মোবাইল নেটওয়ার্ক বিপর্যস্ত জনগনের মাঝে ক্ষোভকাপ্তাই কর্ণফুলী সরকারি কলেজ এর অধ্যক্ষ আর নেইচট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি রাঙ্গামাটির দুই থানা পরিদর্শনগণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারে জাতীয়তাবাদী দলের কোন নেতাকর্মী আর পিছ পা হবে নারাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে মোবাইল নেটওয়ার্ক নিয়ে ভোগান্তিতে স্থানীয় বাসিন্দারাদুর্নীতির বিরুদ্ধে তরুণ প্রজন্মকে সৎ ও নৈতিক শিক্ষায় গড়ে তোলা জরুরিখাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়িতে কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা ও বৃত্তি সহায়তা প্রদান
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে হেডম্যান মংথোয়াইলা এর বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ

॥ ‎নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রতিনিধি ॥
‎বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারি ইউনিয়নের ২৮০ নং আলীক্ষ্যং মৌজার হেডম্যান মংথোয়াইলা মার্মা’র বিরুদ্ধে অবৈধ ভাবে মৌজাবাসীর পাহাড় ও জমি দখল, ভূয়া রিপোর্ট, নামে বেনামে বহিরাগত লোকজনকে জমি, পাহাড় লীজ প্রদান, মৌজাবাসীকে হুমকিসহ একাধিক অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। তার অত্যাচারের অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে উক্ত মৌজা ছাড়াও পাশাপাশি মৌজার বাসিন্দারাও।

‎তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আওয়ামীলীগের দোসর বিগত ২০১৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি মৌজার হেডম্যান হিসাবে মংথোয়াইহ্লা মার্মা নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে তার বিরুদ্ধে নিজ মৌজার বাসিন্দা ২৮২ নং কামিরছড়া মৌজা ও ২৮১ নং কৈয়ারঝিরি মৌজার বাসিন্দারা অন্যায়, অত্যাচার, মোটা অঙ্কের ঘুষ আদান-প্রদান ও জায়গা দখল, ডাকাতিতে ইন্দনসহ বিভিন্ন অভিযোগ করছে। গ্রামবাসীরা তার অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতে প্রশাসনের মুখাপেক্ষি হলেও কোন প্রতিকার পাননি। যারা এসব নিয়ে তার বিরুদ্ধে কথা বলেছে,তাদের দেখানো হতো, খুন,গুম ও অপহরণের ভয়, মিথ্যা মালার হুমকি ধামকি এই সব।

‎আলীক্ষ্যং মৌজার স্থানীয় তামাক চাষী আরিফুল ইসলাম জানান, হেডম্যান মংথোয়াইহ্লা মার্মার মুহুরি আব্দুর রশিদ গত বছর আমাদের প্রত্যেক তামাক চুল্লী থেকে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেছে। আরো জানা গেছে, তিনি ২৭৮ নং বাইশারী মৌজার স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার পরও তিনি আলীক্ষ্যং মৌজার হেডম্যান। ২০১৪ সালে হেডম্যান নিয়োগ পাওয়ার পরপরই তিনি নিজের ভোটার পরিচয় পরিবর্তন করে আলীক্ষ্যং মৌজার বাসিন্দা হিসাবে নিজেকে দেখালেও বর্তমানে কক্সবাজার জেলার ঈদগড় ইউনিয়নে বৈদ্যপাড়াতে স্থায়ী ভাবে বসবাস করেন। হেডম্যান নিয়োগ পাওয়ার পর তিনি আওয়ামীলীগে যোগদান করেন এবং বাইশারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কক্সবাজারের রামু ও নাইক্ষ্যংছড়ির শীর্ষ সন্ত্রাসী ডাকাত শাহীনের সাথে সম্পর্কের কারনে তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। ডাকাত শাহীনের বিশ্বস্ত সহযোগী মংথোয়াইহ্লা মার্মা’র মুহরি আব্দুর রশিদ ও জয়নাল আবেদীনকে দিয়ে তিনি নানা অপকর্ম সংগঠিত করে আসছেন। জয়নাল আবেদীন স্থানীয় ডাকাত শাহীনের আত্মীয় বলেও জানান স্থানীয়রা।

‎১১,২১৯ একর জায়গা জুড়ে আলীক্ষ্যং মৌজার এলাকা, এরমধ্যে ৭০০ একর জায়গা বন বিভাগের। রাবারের জন্য বরাদ্দকৃত জায়গা ৮১ টি প্লটের মধ্যে ৫ টি বাতিল ও ৩২ টি মেয়াদ উত্তীর্ণ। তবে অধিকাংশ জায়গা বিভিন্ন রাবার কোম্পানি ও প্রভাবশালীদের সাথে যোগসাজশে অবৈধভাবে রাবার প্লট তৈরি করেছেন হেডম্যান মংথোয়াইলা মার্মা, ফলে স্থানীয় মৌজাবাসীরা চাষাবাদ করতে পারছেনা তার মধ্যে রাবার প্লট মালিক ও কোম্পানির লোকজন হুমকি দিচ্ছে বলে জানা গেছে।

‎কামিয়াছড়া মৌজার মাছিবর পাড়ার স্থায়ীয় বাসিন্দা চাইসুইচিং মার্মা, অংচিং মার্মা বলেন, যুগ যুগ ধরে এখানে চাষাবাদ করে আসছি কিন্তু কয়েক বছর ধরে হেডম্যানের ক্যাডার জয়নাল ও তার ভাই হেলাল আমাদের জায়গাগুলো দখল করে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এর আগেও তাদের যোগসাজশে কয়েক দফায় ডাকাতি হওয়ার পর এই গ্রাম থেকে সবাই পালিয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, কিছুদিন আগে আমার বড় ছেলে উখ্যা মার্মাকে হেডম্যান ফোনে প্রাণনাশের হুমকিও দিয়েছে। ডাকাতি ও প্রাণনাশের হুমকির কারনে ১৩ মাস বোনের বাড়িতে আমরা আশ্রয় নিয়েছিলাম।
‎স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, অভিনব কৌশলে স্থানীয়দের জায়গা দখল করছে হেডম্যান, তিনি আলীক্ষ্যং মৌজার সাবেক হেডম্যান চহ্লামং মার্মার সিল স্বাক্ষর ব্যবহার করে অনেকগুলো ভুয়া রিপোর্ট দিয়েছেন। গত বছরে ১০ অক্টোবর সাবেক হেডম্যান চহ্লামং মার্মা’র জাল সিল স্বাক্ষরসহ ধরা পড়ে হেডম্যানের মুহুরি আব্দুর রশিদ ও জয়নাল আবেদীন।

‎বাইশারী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও বাজার কমিটির সভাপতি আব্দুল করিম বলেন, গত বছর মংথোয়াইলা হেডম্যানের মুহুরিকে জাল সিল স্বাক্ষরসহ হাতেনাতে আটক করার পর ৪টি হেডম্যান রিপোর্ট ও সাবেক হেডম্যানের সিল স্বাক্ষরগুলো আগুনে পুড়িয়ে দিয়ে মুছলেখা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

‎এই বিষয়ে ২৮০ নং আলীক্ষ্যং মৌজার হেডম্যান মংথোয়াইলা মার্মা বলেন, আমি বান্দরবানে রাজার বাড়িতে পড়াশোনা করেছি, আমাকে হেডম্যান বানানো হয়েছে। তবে আমি কারো জায়গা দখল ও ফোনে হুমকি দেয়নি, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। যদি অবৈধ ভাবে জমি দখল, নামে বেনামে রাবার প্লটও দেওয়া হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।

‎এই বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, মংথোয়াইলা হেডম্যান এর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।