রাঙ্গামাটি শ্রী শ্রী লোকনাথ যোগাশ্রমের (মন্দির) ব্যবস্থাপনায় অনিয়মের অভিযোগ

॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
রাঙ্গামাটি শহরের ভেদভেদীস্থ শ্রীশ্রী লোকনাথ যোগাশ্রমের (মন্দির) ব্যবস্থাপনায় নানান অনিয়ম এবং সেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। বর্তমান কমিটির পদস্থরা অর্থ সম্পাদককের দায়িত্বকে পাশ কাটিয়ে একছত্রভাবে যোগাশ্রমের (মন্দির) আয়-ব্যয় নিজেরাই করছে বলে অর্থ সম্পাদক এ অভিযোগ এনে তাঁর ফেসবুকেও অভিযোগগুলো প্রচার প্রকাশ করছেন। যোগাশ্রমের (মন্দির) এর অতীত এবং বর্তমানের অর্থ সম্পাদক রনজিত কুমার ধর এসব অভিযোগগুলো উত্তাপন করেছেন।

তাঁর অভিযোগে বিষয়গুলোতে জানা যায়, গত ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং তারিখ ভেদভেদীস্থ শ্রীশ্রী লোকনাথ যোগাশ্রমের (মন্দির) এর সাধারণ সভায় রনজিত কুমার ধর-কে অর্থ সম্পাদক নির্বাচিত করার পর সচ্চতার সাথে নিজ দায়িত্ব পালন করে আসছে। ধর্মীয় এ প্রতিষ্ঠানের ভক্ত-অনুরাগীদের অনুদানের অর্থে পরিচালিত বিধায় ভক্ত এবং অনুরাগিরাও এ প্রতিষ্ঠানের ভালোমন্দ জানার অধিকার রাখে। কিন্তু সাধারণ সভার পর তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হলেও অদ্যবধি অতীত এবং বর্তমানের কোন হিসাব অর্থ সম্পাদককে বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। গঠনতন্ত্রের আলোকে মন্দির পরিচালনা করার কথা হলেও কমিটির বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এসববিষয় এড়িয়ে চলে নিজেরাই নিজেদের একক সিদ্ধান্ত কমিটির অন্য নেতৃবৃন্দদের উপরও চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

অর্থ সম্পাদক রনজিত কুমার ধর আরো জানান, গঠনতন্ত্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আশ্রম পরিচালনায় খরচের হিসাবগুলো ভাউচারের মাধ্যমে, প্রতিমাসের আয়-ব্যয় হিসাব অর্থ সম্পাদকের নিকট হস্তান্তর বা জমা দিতে হবে। পূর্বের যাবতীয় রশিদ বহি রেজিস্টারেও লিপিবদ্ধ সহকারে অর্থ সম্পাদকের নিকট বুঝিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত থাকলেও তাও করা হয়নি আজো। বর্তমানে সভাপতি কূশল চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ পালিত রাজা কর্তৃক গঠনতন্ত্র মোতাবেক পরিচালিত হচ্ছেনা বিধায় বর্তমান কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক অঞ্জন ধর ও সাংগঠনিক সম্পাদক মিটু চৌধুরীর যৌথ স্বাক্ষরিত গত ০৮/৪/২৫ ইং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টার বরাবরেও একটি অভিযোগ লিখিত আকারে আবেদন করা হয়। তিনি আরো জানান, বর্তমান ৫১ সদস্য বিশিষ্ট পরিচালনা কমিটিতে অর্ন্তভুক্ত সদস্যদেরও এই কমিটির প্রতি অনাস্থা জানিয়ে বর্তমানে তিন জন পদত্যাগও করেছেন।
অর্থ সম্পাদক আরো জানান, বর্তমান কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিজেদের মনগড়াভাবে মন্দির ব্যবস্থাপনার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন যা সকল সদস্য এবং ভক্তবৃন্দরাও নানানভাবে আপত্তি জানিয়ে আসছে। ভক্তবৃন্দদের কাছ থেকে অনুদান বা চাঁদার মাধ্যমে আয় এর যেমন হিসাব দেননা তেমনি খরচ এর হিসাবও কারো জানা নেই। অগনিত এসব অভিযোগ বর্তমান কমিটির সকল সদস্য সহ দাতা এবং ভক্তবৃন্দরা এগিয়ে না আসলে ভেদভেদীস্থ শ্রীশ্রী লোকনাথ যোগাশ্রমের (মন্দির) পরিচালনা যেমন প্রশ্নবিদ্ধ হতে থাকবে তেমনি ভক্তসাধারনের মাঝেও তিক্ততা বিরাজ করবে। তাই সকলের স্বতন্ত্র সহযোগীতা প্রয়োজন এ প্রতিষ্ঠানের সুনাম সুরক্ষার্থে। এছাড়াও সহ অর্থ সম্পাদক এবং কনিমিটির অধিকাংশ সদস্যই শ্রীশ্রী লোকনাথ যোগাশ্রমের (মন্দির) এর স্থাবর অস্থাবর সকল সম্পদের হিসাব দ্রুত প্রদান পূর্বক বর্তমান কমিটিকে বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠন করার জন্যও আহ্বান জানিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে বর্তমান কমিটির সভাপতি কূশল চৌধুরী এর সাথে যোগাযোগ করা হলে এসব অভিযোগের বিষয়গুলি মনগড়া বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নতুন কমিটি গঠন হওয়ার পর থেকেই যথারীতি আয়-ব্যয় এর হিসাব অভিযোগকারী অর্থ সম্পাদক রনজিত কুমার ধর নিজের এবং অপর দুই সহকারীর স্বাক্ষর সমেত কমিটির সভায় লিখিত আকারে প্রদান করে আসছেন যা সকল নথি আমার কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। তবে চলতি বছরের সর্বশেষ মে-জুন-২৫ এর আয়-ব্যয় উত্তাপিত হয় নাই কেননা কমিটির সভা না হওয়াতে। বরং তাঁর কাছে মন্দিরের ৩টি রশিদ বই এবং ভক্তদের দেওয়া অর্থও তার কাছে মজুদ রয়েছে বলে জানান। তিনি যে অভিযোগগুলো উত্তাপন করেছেন এবং তার নিজস্ব ফেসবুক এ লিখছেন এসব অভিযোগ তাঁর মনগড়া এবং উদ্দেশ্য প্রনোদিত।