বৃষ্টি ও কাঁদাপানি মাড়িয়ে ঋতুপর্ণার অসুস্থ মাকে দেখে গেলেন রিজভী
॥ ইকবাল হোসেন ॥
গত ১৭ বছর ধরে উন্নয়নের যে বুলি উড়ানো হয়েছে, তার প্রমাণ তো আজকে আমরা এখানে এসে দেখতেই পেলাম। একটা-দুইটা পদ্মা সেতু করলেই উন্নয়ন বলে বুলি আওড়ানো হতো। এতোদিন আমাদেরকে যে উন্নয়নের গল্প শোনানো হয়েছে, সেটি যে ভাওতাজি আর প্রতারণা ছিলো তার প্রমান ঋতুপর্ণার এই গ্রামের বাড়িতে এসে নিজ চোখে দেখেই বুঝতে পারলাম। বুধবার (৯ জুলাই) সকালে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড় ঋতুপর্ণা চাকমার মায়ের অসুস্থতার খবরে তার গ্রামের বাড়িতে এসে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কথা বলেন।
এই নেতা বৃষ্টি, দূর্গম পাহাড়ি পথের কাদাপানির ছড়া মাড়িয়ে ঋতুপর্ণার বাড়ি রাঙ্গামাটির কাউখালী উপজেলার দুর্গম মগাছড়ি গ্রামে সফরসঙ্গীদের সাথে নিয়ে ছুটে আসেন। মগাছড়ি গ্রামে পৌঁছে রুহুল কবির রিজভী ঋতুপর্ণার মা ভুজোপতি চাকমার সঙ্গে কথা বলেন। তিনি তার স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নেন। তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দেন ভুজোপতি চাকমার কাছে। এ সময় ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ পক্ষ থেকে ১ লাখ টাকা এবং জেলা বিএনপি থেকে ১ লাখ টাকা দেওয়া হয় ভুজোপতি চাকমাকে। এছাড়াও কেমোথেরাপি দেওয়ার জন্য প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা করে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ থেকে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। ঋতুপর্ণা চাকমা’র ‘মা’ ভুজোপতি চাকমা ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে ইতোমধ্যে তিনি তিনটি কেমো নিয়েছেন। প্রতি ২১ দিন অন্তর অন্তর তাকে চট্টগ্রাম নিয়ে কেমোথেরাপি দিতে হচ্ছে। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মীর হেলাল উদ্দিন, আমরা বিএনপি পরিবার-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, জেলা বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ জেলা ও উপজেলার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, জাতীয় নারী ফুটবলের দলের খেলোয়াড় ঋতুপর্ণা চাকমার মা অসুস্থ। এই খবর শুনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দ্রুত ঋতুপর্ণা চাকমার মায়ের সঙ্গে দেখা করার নির্দেশনা দেন। নির্দেশনা পেয়ে বুধবার (৯জুন) সকালে মগাছড়ি গ্রামে তার বাড়িতে আসলাম। ঋতুপর্ণা চাকমার মায়ের সঙ্গে দেখা করে তার রোগমুক্তির প্রার্থনা করেছি। তাঁর জন্য দেয়া তারেক রহমানের সহযোগিতা পৌঁছে দিয়েছি।
এসময় ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনার সরকারের সমালোচনা করে গ্রামের সড়ক নিয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির অন্যতম এই নেতা বলেন, পাহাড়ি এই এলাকায় উন্নয়নের কোনো ছৌয়া-ই লাগেনি। না আছে কোনো রাস্তা-ঘাট, না আছে কোনো যোগাযোগ ব্যবস্থা। এরাতো আর বাংলাদেশের বাইরের কেউ না। শুধু দুয়েকটা পদ্মাসেতু আর ফ্লাইওভার দেখিয়ে গত ফ্যাসিষ্ট সরকার মানুষের সাথে যেভাবে প্রতারণা করেছে আজ সেটা প্রমাণিত। তিনি বলেন, ঋতুপর্না অসাম্প্রদায়িক চেতনার মূলমন্ত্রকে ধারণ করে গোটা দেশকে আলোকিত করেছে। রিজভী বলেন, বিগত ফ্যাসিষ্টের আমলে শোষণ, জুলুম নির্যাতনের মাধ্যমে দেশের প্রতিভাকে ঢেকে রাখার চেষ্ঠা করা হয়েছিলো। সেই অবস্থা থেকে উত্তরন ঘটিয়ে উম্মোচিত করে প্রতিভাগুলোকে প্রদীপের আলোর সামনে নেওয়ার কোনো ব্যবস্থা আমরা এখনো দেখছিনা।