[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
যেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় সেখানেই যেন আলোর নিচে অন্ধকারবান্দরবানের থানচিতে এবার গ্রামে ফিরল বম জনগোষ্ঠীর আরো এক পরিবারবান্দরবানে সেনাবাহিনীর অভিযানে অস্ত্র সরঞ্জামসহ ৯ জন আটক, জনমনে স্বস্তি‘কারিগরি শিক্ষা নিলে বিশ্বজুড়ে কর্ম মিলে’ কাপ্তাই এ সেমিনার অনুষ্ঠিতচিকিৎসক সংকটে বান্দরবানের থানচি হাসপাতালে সেবা বঞ্চিত মানুষখাগড়াছড়িতে তিন দিনব্যাপী জাতীয় ফল মেলা ২০২৫ অনুষ্ঠিতলংগদু সেনা জোনের উদ্যোগে সহিংসতা প্রতিরোধে কর্মশালাথানচিতে স্থানীয়ভাবে উদ্ভাসিত লাগসই প্রযুক্তি প্রয়োগ ও সম্প্রসারণ শীর্ষক সেমিনারখাগড়াছড়ির দীঘিনালায় কালোজাম কেজি ১শত ৪০ টাকারাঙ্গামাটির রাজস্থলী উপজেলার অনেক গ্রাম বিদ্যুতের আলো থেকে বঞ্চিত
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের অন্তর্বতি পরিষদ গঠনে বিতারিত চাকমা

চেয়ারম্যান হলেন রাঙ্গামাটিতে অংসুই, খাগড়াছড়িতে মংসুই, বান্দরবানে ক্য শৈ হ্লা মারমা

৩৯৪

॥ নিজস্ব প্রতিবদক ॥

অবশেষে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের অন্তবর্তি পরিষদ গঠন করেছে সরকার। রাষ্ট্রের নির্বাহী প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদন স্বাপেক্ষে মাহামান্য রাষ্ট্রপতির আদেশ প্রদানের পর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব সজল কান্তি ভৌমিক স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে পরিষদ পুনর্গঠনের কথা জানানো হয়। পরিষদ সমুহ গঠনের পর পরই বৃহস্পতিবার বিকালে স্ব-স্ব পরিষদে বার্তা দেয়া হয়েছে বলে বিশ্বস্ত সুত্রে জানা গেছে।

এদিকে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠনের সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে পরিষদ নেতৃবৃন্দের তালিকা প্রকাশ করার সাথে সাথে কারো কারো আনন্দের প্রকাশ ঘটলেও কারো কারোতে কপালেও ভাঁজ পড়েছে। অপর দিকে তিন পরিষদেই চেয়ারম্যান পদে মারমা জাতি গোষ্টির প্রতিনিধি করাতে পার্বত্য চট্টগ্রামের বৃহত্তর জাতি গোষ্টি চাকমা জনগনের মাঝে ক্ষোভেরও দানা বাঁধছে। পরিষদ গঠন নিয়ে আনন্দ আর কপালে ভাঁজ পড়া এবং বিতারিতদের অভিযোগ আপত্তিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ লেখা লেখি শুরু হয়েছে। অনেকের মতামতের মধ্যে তিন জেলার মধ্যে মাদার ডিস্ট্রিক্ট রাঙ্গামাটিতে অন্তত চাকমা জাতি গোষ্টি থেকে একজনকে চেয়ারম্যান করা হলে কিছুটা পরিপূর্নতা পেতো। খাগড়াছড়িতে সংখ্যা গরিষ্টে ত্রিপুরা জাতিগোষ্টি বেশী হওয়ায় সেখানেও ত্রিপুরা জাতিগোষ্টির একজনে চেয়ারম্যান করা হলে সামঞ্জস্যতা থাকতো। বর্তমানে তিন জেলা পরিষদে মারমা জনগোষ্টি থেকে চেয়ারম্যান মনোনিত করাতে তা দূরদর্শিতার অভাব বলে মনে করা হচ্ছে।

বিভিন্ন গণমাধ্যমেও তিন জেলা পরিষদ গঠনের সংবাদে দেখা যায়, মহামান্য রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব সজল কান্তি ভৌমিক স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে পরিষদ পুনর্গঠনের মধ্যে রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মারমা জাতি গোষ্টির অংসুই প্রু চৌধুরী। তিনি রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদে বিগত গঠিত দুই পরিষদেই টানা সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এখানে সদস্য হিসেবে যারা দায়িত্ব পেয়েছেন বরকল উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি সবীর কুমার চাকমা, তিনিও বিগত পরিষদের সদস্য ছিলেন, তবে তিনি উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহন করাতে পদত্যাগ করতে হয়েছিল। বাঘাইছড়ি থেকে প্রিয় নন্দ চাকমা, জুরাছড়ি থেকে প্রবর্তক চাকমা, নানিয়ারচর থেকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এলিপন চাকমা, রাঙ্গামাটি সদর থেকে আবারো জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক হাজী মোঃ মুছা মাতব্বর, যুবলীগ নেতা বিপুল ত্রিপুরা, মহিলা আওয়ামীলীগ নেত্রী ঝর্ণা খীসা, হিন্দু জনগোষ্ঠির বাদল চন্দ্র দে, লংগদু উপজেলা থেকে গুলশাখালির সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুর রহিম ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য জানে আলমের স্ত্রী মোঃ আছমা বেগম, কাপ্তাই উপজেলা থেকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অংসুচাইন চৌধুরী ও দিপ্তীময় তালুকদার, রাজস্থলী থেকে নিউচিং মারমা, বিলাইছড়ি থেকে গত পরিষদ সদস্য রেমলিয়ানা পাংখোয়া।

অপর দিকে, খাগড়াছড়িতে চেয়ারম্যান হলেন, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা মংসুই প্রু চৌধুরী এবং সেখানে সদস্যরা হলেন, জেলা আওয়ামীলীগ এর আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট আশুতোষ চাকমা, জেলা কমিটির সদস্য, নিলোৎপল খীসা, শুভমঙ্গল চাকমা, লক্ষ্মছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি, রেম্রাচাই চৌধুরী, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, মংক্যচিং চৌধুরী, গুইমারা ইউনিয়ন আওয়ামীলগের সভাপতি, মেমং মারমা, জেলা আওয়ামীলীগে সাধারণ সম্পাদক, নির্মলেন্দু চৌধুরী, জেলা আওয়ামীলীগ এর আব্দুল জব্বার, মাইন উদ্দিন, খোকনেশ্বর ত্রিপুরা, পার্থ ত্রিপুরা জুয়েল, হিরনজয় ত্রিপুরা, শতরূপা চাকমা ও জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদিকা শাহিনা আক্তার।

অন্য দিকে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদে তৃতীয় বারের মতো আবারো ক্য শৈ হ্লা মারমাকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে। পরিষদের অন্যান্য সদস্যরা হলেন, ক্যা সা প্রু, শৈহ্লাচিং বাশৈচিং মারমা (থানচি), ধুংড়ি মং মারমা (আলীকদম), কাঞ্চন জয় তংচঙ্গ্যা (রোয়াংছড়ি), সিংইয়ং ম্রো, সত্যহা পানহি ত্রিপুরা, ক্যানে ওয়ান চাক, জুয়েল বম (রুমা), লক্ষী পদ দাশ, মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বাহাদুর, শেখ মাহাবুবুর রহমান (লামা), সিইং খুমি, তিং তিং ম্যা ও ফাতেমা পারুল।

১৯৯৭ সালে পার্বত্যচুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর স্থানীয় সরকার পরিষদ আইন সংশোধন এবং নাম পরিবর্তন করে পার্বত্য জেলা পরিষদ করা হয়। একই বছর আবারো আইন সংশোধন করে পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠান না হওয়া পর্যন্ত সরকার মনোনীত একজন উপজাতিকে চেয়ারম্যানসহ পাঁচ সদস্যের অন্তর্বতীকালীন পরিষদ গঠনের বিধান করা হয়। পরে জনআপত্তি এবং আগ্রহের কারনে আবারো আইন সংশোধন করে একজন উপজাতি চেয়ারম্যান ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ১৪ জন সদস্য নিয়ে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট পরিষদ গঠনের বিধান করা হয়।

এসব মিলিয়ে তিন জেলার রাজনৈতিক বিজ্ঞ মহল মনে করছেন, মেয়াদ উত্তির্নের পর জেলা পরিষদ গঠন সরকারের নিয়মিত একটি পরিবর্তন। তবে প্রত্যেক পরিষদে কেউ কেউ পূর্বে ছিল আবারো তাদেরকে পরিষদে রাখাতে বাদ পড়াদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে। কিন্তু যাই হয়েছে মাদার ডিস্ট্রিক্টে অন্তত একজন চাকমা জাতি গোষ্টির প্রতিনিধিকে এবং খাগড়াছড়িতে ত্রিপুরা জাতিগোষ্টির প্রতিনিধিকে চেয়ারম্যান করা হলে সুন্দর দেখাত, তবে এখন হয়ে গেছে অনেকটা এক পেশে।