[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
বান্দরবানের লামায় প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণ ঘটনায় গ্রেফতার ১বান্দরবানে খিয়াং জনগোষ্ঠীর ভারসাম্যহীন নারী ধর্ষণের ঘটনায় প্রতিবাদরাবিপ্রবিতে মাদকবিরোধী বির্তক প্রতিযোগিতা ২০২৫ অনুষ্ঠিতরাঙ্গামাটিতে বজ্রপাতে যুবকের মৃত্যুবান্দরবানের লামায় খালের উৎপত্তিস্থলে ফ্যাক্টরি স্থাপনে স্থানীয়দের ক্ষোভপার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড যে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে তা সকলের কল্যাণের জন্যরাঙ্গামাটিতে নারী ও শিশু ধর্ষণ ও সহিংসতা বন্ধে সনাকের উদ্যোগে মানববন্ধনরাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ির সাজেকে ইউনিয়ন বিএনপির ইফতার ও দোয়া মাহফিলবান্দরবানের থানচিতে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিতবাঘাইছড়িতে জামায়াতের আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

রাঙ্গামাটিতে নারী ও শিশু ধর্ষণ ও সহিংসতা বন্ধে সনাকের উদ্যোগে মানববন্ধন

॥ পাহাড়ের সময় ডেক্স ॥
‘‘নারী ও শিশু ধর্ষণ ও সহিংসতা: বিচার চাই, নির্মূল কর- রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ’’ এই স্লোগানে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টান্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর সনাক রাঙ্গামাটি মানববন্ধন কর্মসূচীতে বলা হয়েছে জুলাই বিপ্লব পরবর্তী জনমানুষের বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার যে আকাঙ্খা এবং নারী পুরুষের সমানাধিকার প্রতিষ্ঠার ব্যপারে যে আশা করেছিলাম সেটাতো হচ্ছেনা বরং নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। রবিবার (১৬মার্চ) সকালে সনাক কার্যালয়ের সামনে টিআইবি’র নির্দেশনায় সারা দেশের ৪৫ টি অঞ্চলের ন্যায় রাঙ্গামাটিতেও সনাকের উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মানববন্ধনের সভাপতিত্ব করেন সনাক সভাপতি প্রফেসর বাঞ্ছিতা চাকমা। টিআইবি ইন্টার্ন রুনি চাকমা ও মোঃ মোস্তফা এর সঞ্চালনায় বক্তব্য প্রদান করেন ইয়েস সদস্য সামসুদ্দোহা উৎস, এসিজি সদস্য বাবুল মারমা, সনাক সদস্য অমলেন্দু হাওলাদার, সনাক সদস্য ও টিআইবি ট্রাস্টি বোর্ড মেম্বার অ্যাডভোকেট সুস্মিতা চাকমা। সভায় বক্তারা বলেন, দেশে নারী ও কন্যাশিশুর নির্যাতন ও ধর্ষণ নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি এর মাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গেছে। ঘরে-বাইরে, কর্মক্ষেত্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্রই এর ভয়াবহ শিকার হচ্ছেন কন্যাশিশুসহ সকল বয়সী নারী। নৃশংসতার মাত্রা ও সংখ্যা বিবেচনায় সারা দেশে নারীর প্রতি সহিংসতায় দেশবাসী আতংকগ্রস্থ সময় অতিবাহিত করছে। এ পরিস্থিতি অগ্রহণযোগ্য। নারী ও কন্যাশিশুর নির্যাতন ও ধর্ষণ, আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না পাওয়া, বিচার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতা প্রভৃতি কারণে সামাজিক জীবনে নিরাপত্তাহীনতার পাশাপাশি ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হচ্ছে যা সমতাভিত্তিক বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থার অন্তরায়।

মানববন্ধনে প্রফেসর বাঞ্ছিতা চাকমা সভাপতির বক্তব্যে আরো বলেন, তিনি ডিএমপি কমিশনারের সাম্প্রতিক যে বক্তব্য নারী ধর্ষণকে নারী নির্যাতন বলতে বলার বিষয়টি সমালোচনা করে বলেন, মাত্রাভেদে নারীদের উপর বিভিন্ন নির্যাতন করা হয় কিন্তু ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধকে নারী নির্যাতন বলতে বলা খুবই দু:খজনক। তিনি বলেন, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে সনাক, ইয়ুথ এনগেজমেন্ট অ্যান্ড সাপোর্ট (ইয়েস), অ্যাকটিভ সিটিজেন্স গ্রুপ (এসিজি)Ñএর সদস্যগণ সর্বদা সোচ্চার এবং তিনি নারী ও শিশু ধর্ষণ ও সহিংসতা বন্ধে প্রশাসন সহ সকল স্তরের মানুষকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।

নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ, সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও জেন্ডার সমতা, নারীর ক্ষমতায়নে সনাক, ইয়েস, এসিজি ও টিআইবি নিম্নলিখিত দাবিসমূহ উত্থাপন করা হয়- ১. বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও “নতুন বাংলাদেশ”- এর মূল চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে নারী ও শিশু ধর্ষণ এবং সব ধরনের যৌন নির্যাতন, সহিংসতা ও বৈষম্য প্রতিহত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং এসব অপরাধের সাথে জড়িতদের দ্রুততম সময়ে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের আওতায় আনার পাশাপাশি অপরাধের শিকার পরিবারকে সকল প্রকার সহায়তা প্রদান করা। ২. সকল ক্ষেত্রে ও পর্যায়ে নারীর অধিকার নিশ্চিত করা এবং এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় আইন সংস্কার ও বিদ্যমান আইনসমূহের কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করা। ৩. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রসহ সকল পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে নারীর নিরাপত্তা বিধান নিশ্চিত করা। ৪. সকল রাজনৈতিক দল ও তাদের অঙ্গসংগঠন, পেশাজীবী সংস্থা, সকল প্রকার সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে নারী পুরুষের সমঅধিকার ও সমমর্যাদার সুস্পষ্ট অঙ্গীকার ঘোষণাসহ চর্চা প্রতিষ্ঠার সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। ৫. টেকসই উন্নয়ন অর্জনের কর্মপরিকল্পনায় অভীষ্ট-৫ (জেন্ডার সমতা) ও ১৬ (শান্তি, ন্যায়বিচার ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান) কে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে নারীর প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতন বন্ধের পূর্বশর্ত হিসেবে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণসহ আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে। নারীর প্রতি সহিংসতা ও নানা অজুহাতে যত্রতত্র হেনস্থা রোধে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলার পাশাপাশি রাষ্ট্রকে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন। ৬. নারী ও শিশু নির্যাতনসহ সকল প্রকার নারী অধিকার হরণের ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সকল প্রতিষ্ঠানকে Ñ বিশেষ করে প্রশাসন, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও বিচারব্যবস্থায় দুর্নীতি প্রতিরোধ, শুদ্ধাচার, জবাবদিহিতা ও সার্বিক সুশাসন নিশ্চিত করা। ৭. জেন্ডার সমতা অর্জনের হাতিয়ার হিসেবে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে নারীর অভিগম্যতা নিশ্চিত, ইন্টারনেট ও প্রয়োজনীয় ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস সুলভ করা এবং বিশেষায়িত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। অনলাইনে সহিংসতা ও নির্যাতন থেকে নারীর সুরক্ষা নিশ্চিতে সচেতনতা বৃদ্ধিসহ বিশেষায়িত জাতীয় কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা। ৮. যে সকল ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পরিবারে, কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষাঙ্গনে বা সমাজে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ্যে কাজ করছেনÑতাদের উৎসাহিত, সঠিক প্রশিক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় নীতিগত সহায়তা ও সুরক্ষা প্রদান করা। ৯. মহামান্য উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে সকল প্রতিষ্ঠানে অভিযোগকারীর পরিচয় গোপন রাখার নিশ্চয়তাসহ নারীবান্ধব অভিযোগ প্রদান ও নিরসনের ব্যবস্থা থাকতে হবে; নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও যৌন হয়রানি বন্ধে ব্যক্তির রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক অবস্থান, মর্যাদা ও প্রভাব বিবেচনা না করে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে এবং নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলাগুলোর দ্রুত বিচার নিষ্পত্তি করা। ১০. নারীর প্রতি সকল ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধ ও নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিতে সাধারণ জনগণের ইতিবাচক মানসিকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কার্যকর প্রচারমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা। ১১. জাতীয় হেল্পলাইন ও অভিযোগ জানানোর হটলাইন নম্বরগুলোর প্রচার ও কার্যকরতা বৃদ্ধি।