পড়ায় অমনোযোগী এবং প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারায়
থাপ্পড়ে ছাত্রী আহত, অনুতপ্ত শিক্ষক ক্ষমা চেয়েছেন সকলের কাছে
॥ মোঃ ইসমাইল, পানছড়ি ॥
খাগড়াছড়িতে শিক্ষকের থাপ্পড়ে ছাত্রী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক অনুতপ্ত। ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন সকলের নিকট। রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার লোগাং বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আশাদন চাকমার থাপ্পড়ে গুরুতর আহত হয়ে পানছড়ি হাসপাতালে ভর্তি হয় সুজনা আক্তার (১৫) নামের এক শিক্ষার্থী।
জানা যায়, পড়ায় অমনোযোগী থাকায় এবং প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারায় রাগে তাকে চড় মারলে তাঁর নাকের নাক ফুলে লেগে নাক থেকে রক্ত বের হয়ে যায়। পরে তাকে পানছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ঘটনাটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে তদন্তের জন্য বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌমিতা দাশের তত্বাবধানে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ জসিম উদ্দিন সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) একটি বোর্ড সভার আয়োজন করেন।
বোর্ড সভায় অভিযুক্ত শিক্ষক আশাদন চাকমা বলেন, আমি অদ্য রবিবার নিয়মিত সকালে ১ম ঘন্টায় ১০ম শ্রেণীর বাংলা ২য় পত্র ক্লাস নিতে যাই, যেখানে পাঠ্য বিষয় ছিলো ‘কারক ও বিভক্তি’। আমার ক্লাস চলাকালীন ঐ ছাত্রী টা অমনোযোগী ছিলো এবং তার বান্ধবীদের সাথে সে এই বিষয়ে আমার ক্লাসে অন্যমনস্ক ছিলো। পরক্ষনেই আমি তার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম আমি যে বিষয় টা নিয়ে আলোচনা করলাম সেটা কি কারক? কিন্তু সে এটার উত্তর দিতে পারলো না। অপরদিকে আমি বললাম এটা অপাদান কারক। তার এই অমনোযোগী বিষয় টা মানতে না পেরে আমি রাগের বসে তাকে থাপ্পড় মারি। যা তার নাকের নাক ফুলে লেগে নাক থেকে রক্ত বের হয়ে যায়। যা নিয়ে আমি সত্যি লজ্জিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী। ভবিষ্যতে এমন কাজ আর কখনোই করবো না বলে অঙ্গীকারবদ্ধ হলাম।
ছাত্রী শিক্ষকের কথায় একদম নিশ্চুপ ছিলো। চুপ থেকে ঘটনার বিবরণীতে প্রমান করে এতে তাঁর সম্মতি আছে। তবে সে এই বিষয়ের উপর বলে, উনি আমাকে জোড়ে থাপ্পড় মারছে যা আমি প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করি। কিন্তু এর পূর্বে ঐ শিক্ষক আমাকে কখনো মারে নাই।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ জসিম উদ্দিন শিক্ষার্থীর পিতামাতার নিকট ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনি কোনো সিদ্ধান্ত নিবেন কিনা জানতে চাইলে শিক্ষার্থীর পরিবার বলেন, তাঁরা কোনো অভিযোগ করবে না। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক বলেন, তিনি লজ্জিত হয়ে সকলের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন এবং এমন আর হবেনা বলেও জানিয়েছেন তাই বিষয়টি আপাতত এভাবেই থাক। তিনি এবং প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ছাত্রীর চিকিৎসা খরচ বহন করকরা হবে।
সর্বশেষ সবার সিদ্ধান্তক্রমে ঔষধ খরচ আর ভবিষ্যতে যেন এমন কার্য আর না হয় তার উপর ভিত্তি করে অভিযুক্ত শিক্ষক আশাদন চাকমা দ্বারা একটি লিখিত মুচলেখা নেওয়া হয়। তিনি স্বীকার করেন এটি তার ভুল ছিলো। ভবিষ্যতে এমন কাজ আর কখনোই হবে না বলে সবার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেন অভিযুক্ত শিক্ষক আশাদন চাকমা।