[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
দীঘিনালায় সমলয় চাষাবাদের বোরো ধান কর্তন কার্যক্রম উদ্বোধনরাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে ২৫০০ পরিবারের মাঝে বিজিবি ’র খাদ্যশস্য বিতরণলংগদুতে ট্রলি দূর্ঘটনায় এবার চালকেরও মৃত্যু হয়েছেখাগড়াছড়ির দীঘিনালায় মৎস্য চাষীদের মাঝে মৎস্য খাদ্য বিতরণবান্দরবানের লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর বেহাল দশা, মাত্র ২ জন চিকিৎসকবাঘাইছড়িতে বায়তুশ শরফ মাদ্রাসায় বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণগৌতম বুদ্ধ ২৫৬০ বছর আগে জগতে আবির্ভূত হয়েছিলেনহৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জসিম মারা গেছেনখাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়িতে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ (মূল) দলের সদস্য আটকখাগড়াছড়ির দীঘিনালায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

কোন বৈষম্য নয়, তিন জেলা পরিষদে সকল সম্প্রদায় হতে সদস্য নিয়োগ করতে হবে

আদিবাসী হতে হলে ভূমি সন্তান ও হাজার বছরের ঐতিহ্য-সংস্কৃতিকে ধারণ করতে হয়

৩৩

॥ মোঃ নুরুল আমীন ॥
পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রায় সকল উপজাতি সম্প্রদায় প্রতিবেশী ভারত, মিয়ানমার ও চীন থেকে অষ্টদশ (১৭২৭-১৭৩০) শতকের দিকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে বসবাস শুরু করে। স্মরণাতীত কাল পূর্বেও ঘটেনি। তারা মাত্র কয়েকশ বছর পূর্বে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী অভিবাসী। অথচ আদিবাসী হতে হলে ভূমি সন্তান হতে হয় এবং হাজার বছরের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধারণ করতে হয়। সমতা ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে চলতি টার্মে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে একজন বাঙালি নিয়োগ দেয়া আপামর বাঙালি জনগন জোরদাবি জানাচ্ছে। তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে সদস্য নিয়োগের ক্ষেত্রে জনসংখ্যা অনুপাতে সকল সম্প্রদায় হতে সদস্য নির্বাচিত করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে ৫১ শতাংশ বাঙালি জনসংখ্যা হিসেবে পার্বত্য জেলা পরিষদে নূন্যতম ৫০ শতাংশ সদস্য বাঙালি জনগোষ্ঠী হতে নিয়োগ করতে হবে। আর কোন বৈষম্য আমরা মানতে চাই না।

শুক্রবার (২৮আগষ্ট) সকালে রাঙ্গামাটি শহরের জিমনেসিয়াম মাঠে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, চাকরি, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড সহ সকল ক্ষেত্রে পাহাড়ের বাঙালিদের সাথে বৈষম্য দূর করে জনসংখ্যা অনুপাতে বন্টন করার দাবিতে ও সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি মুক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম গঠনের দাবিতে এবং রাষ্ট্র বিরোধী দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ পিসিসিপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ (পিসিএনপি) কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে কাজী মজিবর রহমান এ কথা বলেন।

মহাসমাবেশে পিসিসিপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সি: সহ-সভাপতি মোঃ আসিফ ইকবাল ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ হাবীব আজম এর পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ (পিসিএনপি) কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান কাজী মজিবর রহমান, প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন পিসিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব ও বাঘাইছড়ি পৌরসভার সাবেক মেয়র আলমগীর কবির, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পিসিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এডভোকেট পারভেজ তালুকদার, পিসিএনপি রাঙ্গামাটি জেলা সভাপতি শাব্বির আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক মোঃ সোলায়মান, পিসিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল মাহমুদ,প্রচার সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, পিসিসিপি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম, পিসিসিপি খাগড়াছড়ি জেলা সভাপতি সুমন আহম্মেদ, পিসিসিপি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি আবু আইয়ুব আনসারী, পিসিসিপি চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি গিয়াস উদ্দিন। এছাড়াও সচেতন রাঙ্গামাটিবাসীর পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন মোঃ কামাল উদ্দিন, মোঃ নুরুজ্জামান ও মোঃ নাছির উদ্দিন।

প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে কাজী মজিবর রহমান আরো বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, মায়ানমার ও চীন হতে পার্বত্য চট্টগ্রামে অভিবাসী হিসেবে এসে বসতিস্থাপন করলে ভূমি সন্তান হওয়া যায় না। মূলত আদিবাসী স্বীকৃতির নামে আলাদা রাষ্ট্র “জুম্মল্যান্ড” প্রতিষ্ঠার স্বপ্নে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত কতিপয় উপজাতীয় ও দেশীয় কুচক্রী মহল। এইসব কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের প্রতিহত করতে হবে। তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল প্রতিষ্ঠান ও সংস্থায় সর্বোচ্চ পদে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী হতে পদায়ন করা হয়ে আসছে। জাতীয় ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের সভাপতির পদসহ সকল সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, উপ-মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীর পদসমূহ শুধুমাত্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য নির্ধারিত। উন্নয়ন বোর্ড এর চেয়ারম্যানের পদটি পাহাড়ি-বাঙালি উভয়ের জন্য নির্ধারিত থাকলেও এই পদেও সবসময় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী হতে পদায়ন হয়ে আসছে।

অন্যান্য বক্তারা বলেন, বৈষম্যমূলক ও বিশেষ উদ্দেশ্য প্রনোদিত পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন সংশোধন এবং অসহায় ও ভূমিহীনদের মাঝে ভূমি বন্দোবস্তি চালু করতে হবে। ষড়যন্ত্রমূলক এবং একটি বিশেষ শ্রেণী গোষ্ঠীর পার্বত্য চট্টগ্রামের সরকারি খাস ভূমি দখল এবং বনজ সম্পদ ধ্বংসের পায়তারার অংশ হিসেবে চালু করা ভিলেজ কমন ফরেস্ট (ভিসিএফ) বা পাড়াবন প্রকল্প অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে বিছিন্নবাদী সশস্ত্র সংগঠন কর্তৃক সশস্ত্র সংঘাত, হত্যা, গুম, অপহরণ, চাঁদাবাজি, নির্যাতন, নিপীড়ন বন্ধ করতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং শান্তি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে। উপজাতিরা সমগ্র বাংলাদেশে জমি ক্রয়, বসবাস, চাকরি ও ব্যবসা করতে পারে।

বক্তারা বলেন, একই ভাবে তিন পার্বত্য জেলায় অন্য ৬১ জেলার নাগরিকদের সীমিত আকারে বিশেষ বিবেচনায় শিল্প কারখানা স্থাপন কিংবা ব্যবসায়ীক বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে জমি ক্রয় করে বসবাস করার সুযোগ দিতে হবে। স্থায়ী বাসিন্দা সনদ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রীতা প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে। সরকারি চাকরি, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, উপবৃত্তি ইত্যাদির ক্ষেত্রে বৈষম্য মূলক উপজাতি কোটার পরিবর্তে জনসংখ্যার অনুপাতে অনগ্রসর কোটা চালু করে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও বাঙালিদের জন্য সমহারে কোটা নির্ধারণ করতে হবে।

এর আগে সদর সহ বিভিন্ন উপজেলা হতে আসা জনসাধারণ পৌরসভা চত্বর থেকে হাজার হাজার ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে জিমনেশিয়াম মাঠে গিয়ে মহাসমাবেশে যোগ দেয। সমাবেশের শুরুতেই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত হওয়া সকল শহীদদের মাগফিরাত কামনায় ও বন্যার্তদের জান মাল রক্ষায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।