॥ বান্দরবান প্রতিনিধি ॥
অবৈধভাবে ফসলি জমির মাটি ইটভাটায় বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সিয়াম এর বিরুদ্ধে। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দিনের পর দিন এসব করে যাচ্ছে। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ইটভাটায় মাটি বিক্রি চলছে তাঁর রমরমা ব্যবসা। প্রশাসনের কোন অনুমতি ছাড়া প্রতিদিন ভাড়ী বাহনের মাধ্যমে মাটি আনা হচ্ছে ইটভাটায়। যার ফলে ক্ষতি হচ্ছে ফসলি জমি সেই সাথে সড়ক ও তীব্র ধুলাবালির কারনে স্বাস্থ্য ঝুকিঁতে পড়েছে এলাকাবাসীরা।
জানা গেছে, এই ছাত্রলীগ নেতা গত কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধভাবে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করে চলছে রমরমা ব্যবসা। চেমির মুখ পাড়া এলাকায় একটি স্থানে পাহাড় কেটে মুকসুদ কোম্পানি নামে ইটভাটায় মাটি বিক্রি করে এসেছেন। সেখানে মাটি সরবরাহ করতে ব্যবহার করা হয়েছিল ৮টি ট্রাক ডাম্পার। স্কেভেটর প্রতিঘন্টায় ভাড়া নিতেন ১২শত টাকা। একই চিত্র রেইছা গোয়ালিয়া সড়কে রত্মপুর এলাকায়। সেখানে দুটি স্থানে মাটি সরবরাহ কাজে দুটি স্কেভেটর ও ৬টি ট্রাক ডাম্পার ব্যবহার করছেন। তবে সেই মাটি সরবরাহে সার্বক্ষণিক পরিদর্শনে থাকেন ছাত্রলীগের এই নেতা বলে স্থানীরা জানেিয়ছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিশাল এলাকা জুড়ে ফসলের জমি কাটার কারণে ধ্বংসের মুখে পড়েছে পরিবেশ। প্রতিদিন দুটি জায়গা থেকে ফসলের জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি সরবরাহ করা হচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়। সেসব মাটি সরবরাহ করতে কয়েকটি ডাম্পার ট্রাক ব্যবহারও করছেন এই ছাত্রলীগের নেতা। যার ফলে সড়কে থাকা বসতঘর গুলো বালু ধুলোতে অতিষ্ঠ। তাছাড়া অল্প বৃষ্টি হলে কাদা ও স্যাঁতসেঁতে সড়কের পরিণত হয়। এতে নানা সমস্যা পড়তে হয় পথচারী ও শিক্ষার্থীদের। শুধু একটি স্থানে নয় বেশ কয়েকটি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার দাপটে এভাবে অবৈধভাবে মাটি বিক্রির ব্যবসা করে আসছেন এই নেতা। এছাড়াও সাঙ্গু নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বান্দরবান সদর উপজেলায় ৩নং সদর ইউনিয়নের রেইছা-গোয়ালিয়া খোলা সড়কের রত্মপুর এলাকার। সেখানে বিশাল এলাকার জমি জুড়ে স্কেভেটর সাহায্যে খনন করা হচ্ছে মাটি। সেসব মাটি ইটভাটায় সরবরাহ করতে ব্যবহার করা হয়েছে ৬ থেকে ৭টি ট্রাক (ডাম্পার)। প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় সেসব ট্রাক দিয়ে মাটি সরবরাহ করা হচ্ছে ইটভাটায়। তাছাড়া ট্রাক চালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালাণোর কারনে যেকোন সময় দূর্ঘটনার শিকার হতে পারে পথচারী ও শিক্ষার্থীরা। তাই এসব অবৈধ কাজ বন্ধ করে দিতে প্রশাসনের প্রতি পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন স্থানীয়রা। লম্বাঘোনা এলাকার বাসিন্দা মোরশেদসহ কয়েকজন জানান, ক্ষমতা দাপট দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সিয়াম নামে এক নেতা ফসলের জমি খনন করে ইটভাটায় মাটি বিক্রি করছে। যার কারণে সড়কের ধুলোবালিতে হাটাচলা খুবই সমস্যা হয়ে পড়েছে। এতে ভোগান্তিতে রয়েছে সড়কের পাশে বসবাসকারীরা। মাটি সরবরাহকারী ট্রাক (ডাম্পার) চালক শাহেদ বলেন, ইটভাটায় মাটি দিচ্ছে সিয়াম। দুটি স্থানে মাটি সরবরাহ দিতে ৬টি ট্রাক ডাম্পার ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতি গাড়ি কত টাকা সেটি সিয়াম বলতে পারবে।
এব্যাপারে কথা হয় সদর উপজেলার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সিয়াম সাথে। তিনি বলেন, বীর বাহাদুর নির্দেশনা রয়েছে অবৈধভাবে টেন্ডারবাজী, দখলবাজি ও চাঁদাবাজি কোন কিছু করা যাবে নাহ। তাই আমি এই মাটির ব্যবসা করছি। আমি গাড়ি দিয়েছি আর এই মাটি কাজল বাবুর ইটভাটায় দিচ্ছি। অনুমতি ছাড়া মাটির ব্যবসা করছেন সেটা কি অবৈধ নয় এমন প্রশ্নের জবাবে ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ভাই কি করব বলেন, কি ব্যবসা করব যা করি সব অবৈধ ব্যবসা। আর এসব ব্যবসা না করলে কিভাবে সংগঠন চালাবো।
এবিষয়ে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে হাবিবা মীরা বলেন, আপনাদের মাধ্যমে খবর পেয়েছি। অবৈধভাবে মাটি যে কাটুক না কেন তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।