মোবাইল চার্জ দিয়ে বাড়ি ফেরার সময় অপহৃত হন
খাগড়াছড়িতে নিখোঁজের ৫ দিন পর মধ্যবয়সী নারীর মরদেহ উদ্ধার
॥ দহেন বিকাশ ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি ॥
খাগড়াছড়িতে নিখোঁজের ৫ দিন পর হাত পা বাধা অবস্থায় এক মধ্যবয়সী মহিলার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৫ মে) সকালে জেলা সদরের ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের কলাবন এলাকার পাহাড়ী ঝোপঝাড় থেকে ঈশ্বরী বালা ত্রিপুরা নামে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত ঈশ্বরী পেরাছড়া ইউনিয়নের চন্দ্র কুমার পাড়ার কাঠ ব্যবসায়ী দ্রোণর্চায্য ত্রিপুরার স্ত্রী বলে পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর হাসান। তিনি জানান, ঘটনার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে।
এদিকে স্থানীয় ও প্রত্যদর্শীর সূত্রে জানা যায়, ঈশ্বরী বালা ত্রিপুরা গত ১১ মে শনিবার রাত ১১টায় বাইরে মোবাইল চার্জ দিয়ে নিজ ঘরে ফেরার সময় নিখোঁজ হন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে না পেয়ে তার পরিবার খাগড়াছড়ি সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করলে পুলিশ নিখোঁজ নারীর অনুসন্ধান শুরু করে। পরে বুধবার (১৫ মে) সকাল ৮টার দিকে নিহতের দেবরের মেয়ের স্বামী বিবেকানন্দ ত্রিপুরা’র মোবাইল নম্বর থেকে নিহতের স্বামীর মোবাইলে ফোন দিয়ে নিহতের মরদেহ কলা বাগান নামক এলাকার উচুঁ পাহাড়ে সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
নিহতের স্বামী দ্রোণর্চায ত্রিপুরা জানান, গেল শনিবার রাতে বাড়িতে বিদ্যুৎ না থাকায় সন্ধ্যা ৭ টার দিকে পাশের বাড়িতে মোবাইল চার্জ দিতে যান ঈশ্বরী। রাত ৯ টায় ওই বাড়ি থেকে নিজের বাড়িতে ফেরার জন্য বের হয়ে নিখোঁজ হন। আশপাশে খোঁজাখুঁজি করে না পাওয়ায় গেল সোমবার সদর থানায় সাধারণ ডায়েরী করা হয়। পরে বুধবার সকালে একজন ফোন করে মরদেহের সন্ধান দিলে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে।
পেরাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার কিশোর ময় ত্রিপুরা জানান, নিহতের গায়ে থাকা পোষাক খুলে হাত পায়ে বেঁধে শ্বাসরোধ করে ঈশ্বরীকে হত্যা করা হয়। নিহতের স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিতে এমন ঘটনা বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিকট এক আত্মীয়কে সন্দেহ করা হচ্ছে। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এদিকে এ ঘটনায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েজকজন জানান, প্রাথমিকভাবে সন্দেহভাজন ব্যক্তি বিবেকানন্দ ত্রিপুরা জুয়া খেলায় আসক্ত এবং ঋণগ্রস্ত। জুয়াকে কেন্দ্র করে নিহতের শরীরে পরিহিত প্রায় দেড় লাখের অধিক টাকার সমমূল্য স্বর্ণ অলংকার হাতিয়ে নেওয়ার জন্য এমন কাজ করেছেন বলে ধারণা তাদের। তবে তার সাথে আরো কয়েকজন জড়িত থাকতে পারে বলেও জানান তারা।
এ বিষয়ে খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ তফিকুল আলম জানান, তদন্তের পর হত্যাকাণ্ডের কারণ জানা যাবে সেই সাথে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।