[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
দীঘিনালায় যৌথবাহিনীর হাতে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ কর্মী আটকবান্দরবানে রিপোর্টার্স ইউনিটির ভবন জোড়পূর্বক দখলের অভিযোগবান্দরবানের থানচিতে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশমানিকছড়িতে চাঁদাবাজি করতে এসে জনতার হাতে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটকবরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগরাঙ্গামাটির লংগদুতে নৌকার কিছু নেতাকর্মী এখন ট্রাকে উঠে গেছেকাজে দীর্ঘসূত্রতা পরিহার এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে-পার্বত্য উপদেষ্টাসড়ক দুর্ঘটনায় কাপ্তাই বিএফআইডিসি এলপিসি শাখার কর্মচারী নিহতমানিকছড়ির নবাগত ইউএনও’র সাথে বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের শুভেচ্ছা বিনিময়খাগড়াছড়িতে বন্যাকবলিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

ম্রো জাতি গোষ্ঠির আদি বাস্তুভিটা রক্ষা করুন

৫৫

বান্দরবান চিম্বুক এলাকায় প্রায় ৮শ থেকে ১ হাজার একর জমি বেদখল করে ‘ম্যারিয়ট হোটেল ও এমিউজম্যান্ট পার্ক’ নামে পাঁচতারা হোটেল ও পর্যটন স্পট নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরুর মাধ্যমে শতবছরের বংশ পরম্পরায় বসবাস করে আসা ম্রো আদিবাসীদের বাস্তুভিটা উচ্ছেদের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পাঁচতারা হোটেল ও পর্যটন স্পট নির্মাণের প্রতিবাদে চিম্বুক পাহাড়বাসীর উদ্যোগে কালচারাল শো ডাউন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। গত রবিবার সারাদিন কাপ্রু পাড়ায় চিম্বুক ও থানছি সড়কে সামনে কালচারাল শো ডাউনের অংশ হিসেবে চিম্বুক পাহাড়ে বসবাসরত প্রায় ২৫টি পাড়ার বাসিন্দা সকাল থেকেই সেখানে জড়ো হতে থাকেন। পরে ম্রো জনগোষ্ঠীর পাঁচ শতাধিক শিশু ও নারী-পুরুষ বিভিন্ন দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্লুং, নের তমম্, মং, প্রুই, তিতেং এর সুরে সুরে প্রায় ৬০০ ম্রো নারী-পুরুষ নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে নীল পাহাড় থেকে কাপ্রু পাড়া বাজার পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেন।

জানা গেছে, পাড়াবাসীরা শত শত বছর ধরে এখানে বসবাস করে আসছেন। সেখনে যোগাযোগ ব্যবস্থা আগের তুলনায় অনেক ভালো হয়েছে। ম্রোদের অস্তিত্ব এবং সংস্কৃতি ধরে রাখতে হলে নিজেদের ভূমি রক্ষা করা দরকার কিন্তু পর্যটন স্থাপনা হয়ে গেলে ছেলেমেয়েরা আর স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারবে না বলে ম্রো জাতি গোষ্ঠিরা অভিযোগ করছেন।১৯৯০ সালে সেনাবাহিনী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করতে সাড়ে ১১ হাজার একর ভূমি অবৈধভাবে অধিগ্রহণ করেছে সে সব ভূমিগুলোরও অধিকাংশই ম্রো আদিবাসীদের ছিল। চিম্বুক পাহাড় এবং কয়েকটি উপজেলা ছাড়া আর কোথাও ম্রো জনগোষ্ঠী নেই। অথচ দখলে পর দখল হয়ে আসার পরও আবার বিশাল এলাকা নিয়ে পর্যটন স্থাপনা করলে ম্রোদের অস্তিত্ব আরও হুমকির মুখে পড়বে। তাঁরা চিম্বুক পাহাড়ে আদিকাল থেকেই জুমচাষ করে বসবাস করে আসছেন। জানা গেছে, সেখানের রামাক্রী পাড়া ২০০৬ সালে পার্শ্ববর্তী টংকাবতি এলাকা থেকে অনেকেই উচ্ছেদ হয়েছিল। এখন চিম্বুক পাহাড়ে এসেও যদি উচ্ছেদ হতে হয় তাহলে তাঁরা কোথায় যাবে। জুমচাষের জমি দখল করে পর্যটন স্থাপনা এবং পাঁচ তারকা হোটেল করা হলে সেখান থেকে চলে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।

সচেতন মহল বলছেন রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে জনসমর্থন নিয়ে ভূমি অধিগ্রহণ করা যেতেই পারে। কিন্তু এ পাঁচতারা হোটেল ও পর্যটন স্পট তৈরীর প্রক্রিয়াটি ব্যক্তি বা ব্যবসায়ের স্বার্থে ভূমি বেদখল করে প্রায় ৭০ থেকে ১১৬ টি ম্রো আদিবাসী গ্রামের প্রায় ১০ হাজার জনের উদ্বাস্তু হওয়ার দিকে ঠেলে দেওয়া কখনোই কাম্য নয়। বে-আইনিভাবে ভূমি বেদখল কওে ম্রো জাতি গোষ্ঠির সম্পদ হনন করে পাঁচতারা হোটেল ও পর্যটন শিল্পের স্থাপনা নির্মান এর যোগ্য কারনও নেই। উন্নয়ন প্রত্যেকের প্রয়োজন তবে কারো ক্ষতি করে নয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে কেউ কোন উন্নয়ন মুলক প্রতিষ্ঠান করতে চাইলে প্রশাসনিক এবং আইন সম্মতভাবে করতে পারে কিন্তু জোর জবরদস্তিতে কারোই উন্নয়ন হবে না। বরং প্রত্যেকেরই সবদিক থেকেই ক্ষতির সম্মুক্ষিণ হতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন ম্রো জতি গোষ্ঠিকে এবং তাঁদের বাস্তুভিটা রক্ষায় সহযোগীতার হাত না বাড়ালে নিজের আদিনিবাসেই তারা পরাধীন হয়ে যাবে। সুতরাং ম্রো জাতি গোষ্ঠির আদি বাস্তুভিটা রক্ষা করুন।