রাঙ্গামাটিতে মারমা জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাই ‘জল উৎসব’ অনুষ্ঠিত
বিশ্বের দরবারে আমাদের দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরবো: পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, এমপি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য দেশের বহু ভাষাভাষি মানুষের মাঝে ঐক্যের বন্ধন সুদৃঢ় করা। পার্বত্য চট্টগ্রামে বৈসাবি উৎসব যুগ যুগ ধরে পালিত হয়ে আসছে। এটি শুধু সংস্কৃতিকই নয় এখানে ধর্মের অংশও জড়িত রয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে (১৬এপ্রিল) বৈসাবির অন্যতম মারমা জনগোষ্ঠীর উৎসব সাংগ্রাই জল উৎসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মারমা সাংস্কৃতিক সংস্থা (মাসাস) কর্তৃক রাঙ্গামাটি মারি স্টেডিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সাংগ্রাই জল উৎসব এর আহ্বায়ক ও রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী এর সভাপতিত্বে গেষ্ট অব অনার ছিলেন, অর্থ প্রতিমন্ত্রী বেগম ওয়াসিকা আয়েশা খান, এমপি, উদ্বোধক ছিলেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার, এমপি, জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের জ্বরতী তঞ্চঙ্গ্যা, এমপি, রাঙ্গামাটি ৩০৫পদাতিক ডিভিশনের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সোহেল অহমেদ, এসপিপি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, বিজিবি উপমহাপরিচালক কর্ণেল মোঃ আনোয়ার লতিফ খান, পিপিএম বার ও পিএসসি, সেক্টর কমান্ডার, ডিজিএফআই এর পরিচালক কর্ণেল আনোয়ারুল ইসলাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এর ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ কারুন আর রশিদ (উপসচিব), জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান, পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ, (পিপিএম বার)। এছাড়াও অনুষ্ঠানে সেনা বাহিনী এবং প্রশাসনের উচ্চ পদস্ত কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মারমা সাংস্কৃতিক সংস্থা (মাসাস) এর প্রধান উপদেষ্ঠা চিংকিউ রোয়াজা।
প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা আরো বলেন, আমাদের এ দেশ বহুভাষাভাষি মানুষের দেশ, এ দেশ আমাদের সকলের। দেশের বহুভাষাভাষি মানুষের মাঝে ঐক্যের বন্ধন সুদৃঢ় করতে প্রধানমন্ত্রী নিরন্তর কাজ করে চলেছেন। তাই আমরা সবাই মিলে দেশের উন্নয়নে মুলশ্রোতধারার সাথে এগিয়ে যাবো। তিনি ফুল বিজুর কথা উল্লেখ করে বলেন, ১২ এপ্রিল আমরা নদীতে ফুল ভাসিয় গঙ্গাদেবীকে শ্রদ্ধা জানিয়ে সকলের মঙ্গল কামনা করেছি। মানব সমাজের যত ময়লা আবর্জনা নদীতে ফেলছি গঙ্গাদেবী সবকিছু গ্রহন করে তাই তার থেকে ক্ষমা চেয়ে নতুন বছরে সবার জন্য আশির্বাদ প্রার্থনা করি। সাংগ্রাই জল উৎসবের সবাই মিলে যেভাবে একত্রিত হয়েছেন আগামীতেও আমরা একত্রিত থেকে প্রত্যেকের জন্য শান্তি এবং উন্নয়নের কাজে সামিল হবো। বিশ্বের দরবারে আমাদের দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরবো।
দীপংকর তালুকদার এমপি বলেন, আমরা ১১ তারিখ ঈদ পালন করেছি, ১৩ তারিখ ফুল বিজু পালন করেছি এবং ১৪ তারিখ নববর্ষ পালন করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসনিা পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের জন্য বিশেষ দৃষ্টি রাখার কারনে এখন অনেক এগিয়েছে।
রিজিয়ন কমান্ডার বলেন, রাঙ্গামাটি এখন নানান রঙে ভাসছে। আমরাও আনন্দিত যে এ ধরনের অনুষ্ঠানে যোগদান করতে পেরে। সম্প্রীতির বন্ধনে আগামীতেও আমরা চাই সবাই এক সাথে এগুতে।
পরে প্রধান অতিথি সহ সকল অতিথিবৃন্দ সাংগ্রাই জল উৎসবের উদ্বাধন করেন। সদর সহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে মারমা জন গোষ্ঠী সহ অন্যান্য জনগোষ্ঠীর মানুষ স্ব-স্ব ঐতির্হ্যরে পোষাকে অনুষ্ঠানে হাজারো দর্শনাথীর ভীর জমে ষ্টেডিয়াম মাঠে। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন মারমা সাংস্কৃতিক সংস্থা (মাসাস) এর শিল্পীবৃন্দ।
এদিকে জেলা প্রশাসন সহ পুলিশ ও আইনসৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে অনুষ্ঠান স্থলের নিরাপত্তায় কড়া নজরদারী রাখেন।