খাগড়াছড়িতে সামাজিক উৎসব ‘বৈসাবি ও বাংলা নববর্ষ’ শুরু
বৈষম্যহীন বাংলাদেশ ও হিংসা-বিদ্বেষহীন পার্বত্য অঞ্চল চাই: পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী
॥ দহেন বিকাশ ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি ॥
বৈষম্যহীন একটি রাষ্ট্র ও হিংসা-বিদ্বেষহীন পার্বত্য অঞ্চল চাই। আমরা চাই পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বহু ভাষাভাষী, বহু সম্প্রদায়ের মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য সকলে মিলে একসাথে কাজ করতে হবে। পার্বত্য এলাকা সারা বিশ্বের মধ্যে সম্প্রীতির একটা বড় উদাহরণ হবে উল্লেখ করে শুক্রবার (৫এপ্রিল) সকালে জেলা টাউন হল প্রাঙ্গনে বৈসাবি শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এম.পি।
খাগড়াছড়িতে পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব শুরু হয়েছে ‘বৈসাবি’। প্রথম দিন বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট। এ ছাড়া পানি খেলা প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়নের কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো. আমান হাসান, এসপিপি, এনডিসি, পিএসসি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গুইমারা রিজিয়নের কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল রাইসুল ইসলাম, এসপিপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি; খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মোঃ সহিদুজ্জামান, ডিজিএফআইয়ের কমান্ডার কর্নেল আব্দুল্লাহ মোঃ আরিফ, এএফডব্লিউসি, পিএসসি; খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মুক্তা ধর, বিজিবির খাগড়াছড়ির সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল মোঃ নাজমুল হক, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন চৌধুরী, সেনা রিজিয়নের খাগড়াছড়ি জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্ণেল আবুল হাসনাত জুয়েল, পিএসসি; এনএসআই’র খাগড়াছড়ির যুগ্ম পরিচালক ফিরোজ রাব্বানী, খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী।
প্রধান অতিথি ও উদ্বোধক প্রতিমন্ত্রী বলেন, বৈসাবির মতো উৎসব পাহাড়ের বাসিন্দাদের মাঝে সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরও সুদৃঢ় করবে বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, এম.পি। তিনি বলেন, “পার্বত্য অঞ্চলের বৈসাবি ঘিরে যে আনন্দ কাজ করে সেটা আজকে সকলের উপস্থিতিই প্রমাণ করে।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী বলেন, শান্তিপূর্ণ ও বর্ণিলভাবে বৈসাবি উদ্যাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে পার্বত্য শান্তি চুক্তি হয়েছে বলেই পার্বত্য এলাকায় শান্তি ফিরেছে মানুষ উৎসব উদ্যাপন করতে পারছে।
খাগড়াছড়ির ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) জিতেন চাকমা বলেন, বৈসাবিকে কেন্দ্র করে ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে বর্ণিল আয়োজন করা হয়েছে। এখানে পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী খাবারের স্টল দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পানি খেলাসহ প্রতিদিনই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি গড়য়া নৃত্য ও ঐতিহ্যবাহী নৃত্য পরিবেশ হবে বলে জানান তিনি।
এ সময় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ইনস্টিটিউটের শিল্পীরা ঐতিহ্যবাহী নৃত্য পরিবেশন করেন। শোভাযাত্রাটি টাউন হল থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটে গিয়ে শেষ হয়। নেচে-গেয়ে শোভাযাত্রায় নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে অংশ নেয় নারী, শিশুসহ তরুণ-তরুণীরা। শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে উচ্ছ্বসিত তারা।