[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
দীঘিনালায় যৌথবাহিনীর হাতে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ কর্মী আটকবান্দরবানে রিপোর্টার্স ইউনিটির ভবন জোড়পূর্বক দখলের অভিযোগবান্দরবানের থানচিতে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশমানিকছড়িতে চাঁদাবাজি করতে এসে জনতার হাতে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটকবরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগরাঙ্গামাটির লংগদুতে নৌকার কিছু নেতাকর্মী এখন ট্রাকে উঠে গেছেকাজে দীর্ঘসূত্রতা পরিহার এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে-পার্বত্য উপদেষ্টাসড়ক দুর্ঘটনায় কাপ্তাই বিএফআইডিসি এলপিসি শাখার কর্মচারী নিহতমানিকছড়ির নবাগত ইউএনও’র সাথে বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের শুভেচ্ছা বিনিময়খাগড়াছড়িতে বন্যাকবলিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

ঐতির্হ্যরে বাঁশ-বেত শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে উদ্যোগ নিতে হবে

৪২

আধুনিক যন্ত্রপাতির ছোঁয়ায় পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকেও ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে কারুকাজ সম্বলিত বাঁশ ও বেত শিল্প। কারুকাজে ব্যবহৃত বনরাজি ও গ্রাম বাংলার আশপাশের বনজ সম্পদগুলো হাতের নাগালের বাইরে চলে যাওয়া এবং বিলুপ্ত হওয়ার পথে আর সহজ লভ্যতার অভাবেও বাঁশ ও বেত নির্ভর হস্ত শিল্প এর অধিকাংশ সংকুচিত হয়ে এসেছে। পুরনো এই ঐতিহ্যবাহী গুরুত্বপুর্ন শিল্প আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। ক্রমবর্ধমান বাড়ির পাশে বাঁশঝাড় কিংবা বেত বনের ঐতিহ্য গ্রাম বাংলার চিরায়ত রূপ তেমন আর দেখা যায় না। কিন্তু বনাঞ্চলের বাইরেও এখন যেভাবে গ্রামীণ বৃক্ষরাজি উজাড় হচ্ছে তাতে হারিয়ে যাচ্ছে এ জাতীয় গাছপালা। এক সময় এ দেশেরই বিস্তীর্ণ জনপদে বাঁশ-বেতে তৈরি হতো হাজারো আকর্ষনীয় পণ্য। ঘরের কাছের ঝাড় থেকে তরতাজা বাঁশ-বেত কেটে গৃহিণীরা তৈরি করতেন হরেক রকমের জিনিস। কালের বিবর্তনে এখন সেই বাঁশ ও বেতের তৈরি পণ্যের কদর সমাজ থেকে অনেকটা মুছে যাচ্ছে বললেই চলে। এখন ঐতিহ্য হারাতে বসেছে এই শিল্পটি।

দেখা যায়, গ্রামীণ জনপদের মানুষ গৃহস্থালি, কৃষি ও ব্যবসা ক্ষেত্রে বেত ও বাঁশের তৈরি সরঞ্জামাদি ব্যবহার করত। বাসা-বাড়ি কিংবা অফিস-আদালত সবখানেই ব্যবহার করা হতো বাঁশ ও বেতের তৈরি আসবাবপত্র। এখন প্রযুক্তির ছোয়া লাগার যুগে বাঁশ ও বেত শিল্পের তৈরি মনকারা বিভিন্ন জিনিসের জায়গা করে নিয়েছে স্বল্প দামের প্লাষ্টিক ও লোহার তৈরি পন্য। তাই বাঁশ ও বেতের তৈরি মনকারা সেই পন্যগুলো এখন হারিয়ে যাওয়ার পথে। কদর না থাকায় গ্রামগঞ্জ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বাঁশের তৈরী বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় আকর্ষনীয় আসবাবপত্র। অভাবের তাড়নায় এই শিল্পের কারিগররা দীর্ঘদিনের বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে আজ অনেকে অন্য পেশার দিকে ঝুঁকেছে। এরপরও শত অভাব অনটনের মাঝে জেলায় হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার আজও পৈতৃক এই পেশাটি ধরে রেখেছেন।

জেলার বিভিন্ন এলাকায় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একসময় এ অঞ্চলের অনেক মানুষ বাঁশ-বেত দিয়ে বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু বর্তমানে বাঁশ-বেত নেই বললেই চলে। এছাড়া তৈরি পণ্যের ন্যায্য মজুরিও পাওয়া যাচ্ছে না। উপযুক্ত রক্ষনাবেক্ষণ ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব এবং বাজারে প্লাষ্টিক সামগ্রীর দাপটে চারু শিল্পের চাহিদা দিন-দিন কমে যাওয়ার কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে বেত ও বাঁশের তৈরী চারু-কারু শিল্প। তাই খাগড়াছড়ি প্রসিদ্ধ বাঁশ-বেত এর শিল্পীরা তাদের ভাগ্যের উন্নয়ের জন্য এবং বাপদাদার আমলে রেখে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী পেশা ছেড়ে বেছে নিচ্ছে অন্য পেশা। প্রযুক্তি আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় বাঁশ-বেত শিল্প হয়তো আগামী দিনে এ অঞ্চলে খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়ে যাবে। প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে মুক্তি পেতে তাদের জন্য বাঁশ-বেত বাগান ও রিজার্ভ বন টিকিয়ে রাখা অত্যান্ত জরুরী। তারপরও তিন পার্বত্য জেলার বিভিন্ন উপজেলার গুটি কয়েক আদিবাসী মানুষও জীবন ও জীবিকার তাগিদে বাঁশ আর বেতের শিল্পকে আঁকড়ে ধরে রেখেছেন। তাই ঐতির্হ্যরে বাঁশ-বেত শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে উদ্যোগ নিতে হবে।