উন্নয়নের অন্তরালে অবনতিগুলোর ব্যবস্থা নিন
পার্বত্য চুক্তির পর তিন পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নে সরকারের উন্নয়ন চিন্তায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতেই সমতলের চেয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের আনাচে কানাচে যথেষ্ট উন্নয়ন হয়েছে এবং এখনো তার অব্যাহত রয়েছে। মূলত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে এখানে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। শিক্ষা,স্বাস্থ্য ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে এখন অনেক এগিয়ে। কিন্তু কোন কোন উন্নয়ন সরকারের অর্থের অপচয়, মানুষের কল্যাণের বিরুদ্ধে গিয়েও ঠেকেছে আবার কোথাও কোথাও মানুষ উন্নয়ন বঞ্চিতও রয়ে গেছে।
দেখা যায়, উন্নয়নকে কেন্দ্র করে অপ রাজনৈতিক কর্মকান্ডকে পাকাপোক্ত করতে অনেক উন্নয়ন কাজ পিছিয়ে পড়েছে, কোথাও কোথাও ধীর গতির কারনে এবং অপরিকল্পিত প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে অর্থের অপচয় হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও কাজ না করেও অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগও উঠেছে। সরকারের অর্থের অপচয় এবং কাজ না করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হয়েছে বা হচ্ছে, যার কারনে সরকারের উন্নয়ন চিন্তার বিরূপ প্রতিফলন ঘটছে। নেতৃত্বকে অতি লোভ লালসায় আবদ্ধ রাখার কারনে একদিকে অর্থের অপচয়-আত্মসাৎ অন্যদিকে সরকারের উন্নয়ন চিন্তাকে হেয় করা হচ্ছে। যার কারনে মানুষও তার অধিকার বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ সরকারের উন্নয়ন চিন্তায় এবং বরাদ্দে কৃপণতা নেই বলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন। কিন্ত পার্বত্য এলাকায় উন্নয়ন কাজ নিয়ে রাজনৈতিক হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে উল্টো সার্বিক অবনতির পরিস্থিতিকে পাকাপোক্ত করা হচ্ছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) ড. শেখ মোঃ রেজাউল ইসলাম সম্প্রতি রাঙ্গামাটি সফরে আসলে জেলা পরিষদের এক সভায় তিনিও বলেছেন পার্বত্য এলাকার উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সরকারের সদিচ্ছার কোনো অভাব নেই। পার্বত্য এলাকার মানুষ অনেক কষ্ট করে ফসল ও কৃষিপণ্য উৎপাদন করলেও ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেনা। এ অঞ্চলের কৃষি, শিক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে এখানকার মানুষের সুপরামর্শ ও মতামত নিয়ে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করলে কাঙ্খিত উন্নয়ন সম্ভব। ব্যাপক উন্নয়নের লক্ষ্যে ক্ষুদ্র শিল্পও স্থাপন করা যায়, সম্বয়ের মাধ্যমে নানাবিধ উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নেয়া যায়।
লক্ষ্য করা যাচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি নানান প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজে নানান অভিযোগ আসছে। কোথাও কোথাও কাজ না করেও দলীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারি অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এখানে সমন্বহীনতা, স্থান, কাল, পাত্র সঠিক যাঁচাই বাচাই না থাকায় এসব হচ্ছে। এসব বিষয়গুলো জানতে বা তথ্য চাইতে গেলে প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক সময় অসহায়ও মনে হচ্ছে। পার্বত্য চুক্তির পর আঞ্চলিক পরিষদ পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যতম উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান হলেও এ পরিষদকে সম্পূর্ন পাশ কাটিয়ে এবং সমন্বয় না করে উন্নয়ন কাজ করতে গিয়ে নানান জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। উন্নয়ন কাজগুলো রাজনৈতিক দৃষ্টিকোন দিয়ে বিবেচনা করায় উন্নয়ন ধীরগতি এবং বহু প্রকল্পের হয়ে যাচ্ছে নয়-ছয়। তাই পার্বত্য চট্টগ্রামের ব্যাপক উন্নয়নের অন্তরালে যেসব অবনতিগুলো রয়েছে তার ব্যবস্থা নিতে হবে জরুরী।