॥ মোঃ আবুল হাসেম, মাটিরাঙ্গা ॥
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও পবিত্র ঈদ-উল আজহার ছুটিতে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। পর্যটকরা ঈদের বাড়তি আনন্দ উপভোগ করতে বেড়াতে ছুটে এসেছেন পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে।
২জুলাই ঈদের চতুর্থ দিনে মাটিরাঙ্গার পর্যটন স্পটগুলোগুলোতে পর্যটকের ভিড় লক্ষ্য করা গেলেও সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে বাহিরের পর্যটকের চেয়ে স্থানীয় পর্যটকের সংখ্যা একটু বেশি। তবে হোটেল, মোটেল ও পর্যটন কেন্দ্রের দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রতিনিধিরা আগামীর ছুটির দিনগুলোতে জেলার বাইরের পর্যটকদের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশা প্রকাশ করছেন।
এদিকে ঈদের আগের দিন থেকে শুরু হওয়া বৈরি আবহাওয়ার দরুন পর্যটকদের অনেকে আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্রে আসতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। এরপরেও যারা বিনোদনপ্রিয় যত বৈরি আওহাওয়া হোক না কেনো তারা ছুটছেন এসব পর্যটনকেন্দ্রে ।
মাটিরাঙ্গার প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত জল পাহাড়েও বিনোদন প্রেমিদের আনাগোনা লক্ষ্য করা গেছে। নতুন করে সাজানো হয়েছে বিনোদন কেন্দ্রটি, একটি ঝুলন্ত সেতু নির্মান করা হয়েছে এ বছর। দৃষ্টিনন্দন এ সেতুটি পর্যটকদের বিনোদনের নতুন মাত্রা যোগ করছে। এখানে সকাল থেকে শুরু হয়ে দিনের শেষ ভাগ পর্যন্ত স্থানীয়রা এ জল পাহাড়ের তাদের সন্তানদের নিয়ে একটুখানি ঈদের বাড়তি আনন্দ উপভোগ করেন।
খাগড়াছড়ি জেলায় অনেকগুলো পর্যটন কেন্দ্র থাকলেও সবকিছুকে ছাপিয়ে পর্যটকদের অপার আকর্ষণে টানে বদলে যাওয়া মাটিরাঙ্গার আলুটিলার পর্যটন, পর্যটনে এ্যম্ফিথিয়েটার, কুঞ্জ ছায়া, ব্যতিক্রমী ব্রিজ। এছাড়াও রহস্যময় গুহা ও রিছাং ঝর্ণায় প্রাণ জুড়ে যায় পর্যটকদের।
আলুটিলার দুই পাহাড়ের মধ্যে সংযোগ স্থাপনে ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ‘মাউন্টেন ব্রিজ’ ইতিমধ্যেই দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। জেলার বাইরের পর্যটকদের পাশাপাশি জেলা শহর এবং বিভিন্ন উপজেলার সব বয়সী নারী-পুরুষদের কাছেও ঝুলন্ত প্রকৃতির সেতু দুইটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
হোটেল ব্যবসায়ী সমিতি’র সভাপতি কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া বলেন, অন্যান্য ঈদের চেয়ে এবারের ঈদে বাইরের পর্যটকের সংখ্যা তেমন নেই। আমরা আশা করছি ঈদের বাকি ছুটির দিন গুলোতে পর্যটকের সংখ্যা কিছুটা হলেও বাড়বে।
কপি হাউস এন্ড রেস্টুরেন্ট ও জুস কর্ণারের তত্তাবধায়ক মো.সাদিকুর রহমান জানান, গত কাল থেকে পর্যটক আসতে শুরু করেছে। তবে এবার স্থানীয় পর্যটকের সমাগম বেশি।
তাছাড়া শহরের অদূরে রিসাং ঝর্ণা পর্যটকদের বিনোদনের নাতুন মাত্রা যোগ করে। এখানে প্রকৃতিতে তৈরি এই ঝর্ণাটি তে হাজার হাজার পর্যটক আসে নয়ানাভিরাম এই ঝর্ণাটির পানির ফোয়ারার স্রোতধারা দেখার জন্য একইসাথে নিজেকে সেই পানিতে গা ভিজিয়ে নিয়ে শান্তির পরশ পাবার আশায় ছুটছেন অনেকে।
ঘুরতে আসা পর্যটরকরা জানান, তারা পাহাড়ের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে আসেন খাগড়াছড়িতে।
চট্রগ্রাম থেকে গুরতে আসা চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জামাল জানান, এ বছর বাহিরের পর্যটকদের সংখ্যা কম থাকলেও আমরা বরারবরের মতো ঈদ পরবর্তী সময়গুলো বন্ধুদের সাথে কাটাতে আলুটিলায় চলে আসছি। বেশ উপভোগ করছি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বেশ ভাল সময় কেটেছে।
খাগড়াছড়ি হোটেল গাইরিং এর ম্যানেজার সীমা ত্রিপুরা জানান, তাদের হোটেলের রুম বুকিং রয়েছে। ঈদের পর দিন থেকে পর্যটকেরা আসতে শুরু করেছে।
খাগড়াছড়ি টুরিস্ট পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শরণ বড়ুয়া জানান, বাইরের পর্যটক ও স্থানীয় পর্যটকরা যেন নিরাপদে ঘুরতে পারেন, সেই তারা যেন সুস্থভাবে ও নিরাপদে ফিরে যেতে পারেন সে ব্যবস্থা জেলা পুলিশ ও ট্যুরিস্ট পুলিশ।
বর্তমানে খাগড়াছড়ি একটি পর্যটন নগরী শহর, ভবিষ্যতে খাগড়াছড়িতে যেন আরো বহু পর্যটকের আগমন ঘটে এর সৌন্দর্য বর্ধনের প্রশাসন আরো কাজ করবে এমনটাই প্রত্যাশা পর্যটকদের।