[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
নওমুসলিম জীবন চাকমা (আবু বক্কর) কর্তৃক প্রতারণার শিকার অমর বিকাশ চাকমারোয়াংছড়িতে উপকার ভোগীদের মাঝে শিক্ষা ও পুষ্টিকর খাবার সামগ্রী বিতরণকাপ্তাই সেনাজোন কর্তৃক দরিদ্র পরিবারের মাঝে ছাগল ও হাঁস-মুরগী বিতরণদীঘিনালায় অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধাররাজস্থলীতে বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস পালিতআমরা হাল ছাড়বো না, রাজস্থলীতে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের কর্মবিরতিকঠিন চীবর দান বুদ্ধ ধর্মে বৌদ্ধদের সর্বশ্রেষ্ট দানলামায় ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ফার্মেসিতে মোবাইল কোর্ট এর জরিমানাচলতি ডিসেম্বরেই পার্বত্য চট্টগ্রামে ই-লার্নিং স্কুল চালু করা হবে- পার্বত্য উপদেষ্টাতথ্য অফিসের আয়োজনে বাঙ্গালহালিয়ায় নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

১০৭ জন বিশিষ্ট নাগরিকের স্বাক্ষরে টাস্কফোর্স চেয়ারম্যানকে স্মারকলিপি প্রদান

অভ্যন্তরীণ পাহাড়ি উদ্বাস্তুদের দীর্ঘমেয়াদি ত্রাণ ও যথাযথ পুনর্বাসন দাবি

৭৮

॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥

অভ্যন্তরীণ পাহাড়ি উদ্বাস্তুদের দীর্ঘমেয়াদি ত্রাণ ও যথাযথ পুনর্বাসন। বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী, নারী প্রধান পরিবারকে ভিজিএফ-এর আওতায় আনা। উদ্বাস্তুদেরকে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের অধীন নিয়মিত মাসিক রেশনিং-এর আওতায় আনা সহ করোনাকালীন সমস্যার উত্তোরণের স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদের পদক্ষেপ গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের ১০৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক। সেই সাথে রবিবার (৪অক্টোবর) ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী পুনর্বাসন ও অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু পুনর্বাসন বিয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, এমপির কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছেন।

স্মারকলিপিতে দাবী করা হয়, অভ্যন্তরীণ পাহাড়ি উদ্বাস্তুদের দীর্ঘমেয়াদি ত্রাণ ও যথাযথ পুনর্বাসনসহ যাঁরা বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী, নারী প্রধান পরিবার ইত্যাদি তাঁদেরকে ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে ভিজিডি ও ভিজিএফ-এর আওতায় আনা, ভারত প্রত্যাগত পাহাড়ি শরণার্থী ও পার্বত্য চট্টগ্রামে অভিবাসিত বাঙালি পরিবারদের অনুরূপ অভ্যন্তরীণ পাহাড়ি উদ্বাস্তুদেরকে ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের নিয়মিত মাসিক রেশনিং-এর আওতায় আনা, অভ্যন্তরীণ পাহাড়ি উদ্বাস্তুদের ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্দেশ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন কর্তৃক অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ, ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী ও পুনর্বাসন সম্পর্কিত টাস্ক ফোর্সের কর্ম পরিধি বিস্তৃত করা ও বছরে একবার অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসন কার্যক্রম সম্পর্কিত অগ্রগতির প্রতিবেদন প্রকাশ করা।

স্বারকলিপিতে আরো বলা হয়, করোনাকালীন সময়ে সরকারের প্রশংসনীয় ত্রাণ কার্যক্রম সত্ত্বেও মাঠ পর্যায়ের কিছু সমস্যার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশের খাদ্য নিরাপত্তার চাহিদাপূরণ হতে পারেনি। দুর্গম পাহাড়ের অধিকাংশ পরিবার দিন-মজুর ও জুম চাষী হওয়ায় তাদের অধিকাংশের এক সপ্তাহ কিংবা তারও কম দিন চলার মতো খাদ্য মজুদ থাকে। এসময়ে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বিতরণকৃত ত্রাণ ও আর্থিক সাহায্য কদাচিৎ এ সব এলাকায় পৌঁছাতে পেরেছে। এছাড়া তারা এলাকার পানীয় জল, যোগাযোগের জন্য রাস্তা ও যানবাহন, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবা থেকেও বঞ্চিত রয়েছেন। এই প্রেক্ষাপটে পাহাড়ে যে অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু জনগোষ্ঠীরা রয়েছেন তাঁদের অবস্থা সহজে অনুমেয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে আশির দশকে অভিবাসিত বাঙালি পরিবার কিংবা ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চুক্তির আওতায় ভারত প্রত্যাগত পাহাড়ি শরণার্থীদের মতো তাঁরা কোনো নিয়মিত রেশনিং সুবিধা পান না।

টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান এর নিকট দেয়া স্বারকলিপিতে বিশিষ্টজনদের মধ্যে স্বাক্ষর করেছেন চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিস্টার রাজা দেবাশীষ রায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান, শিক্ষাবিদ প্রফেসর মংসানু চৌধুরী, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, সাবেক সদস্য নিরুপা দেওয়ান, পার্বত্য চট্টগ্রামের বন ও ভূমি অধিকার সংরক্ষণ আন্দোলনের সাধারন সম্পাদক সুদত্ত বিকাশ তঞ্চঙ্গ্যা, একই সংগঠনের বান্দরবান চ্যাপ্টার প্রধান জুয়ামলিয়ান আমলাই, খাগড়াছড়ি কলেরজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. সুধীন কুমার চাকমা, প্রফেসর বোধিসত্ত্ব চাকমা, প্রফেসর মধু মঙ্গল চাকমা, সাবেক যুগ্ম সচিব উ ক্য জেন প্রমুখ। এছাড়া সংগঠনের মধ্যে রয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম হেডম্যান নেটওয়ার্ক, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী হেডম্যান ও কার্বারি নেটওয়ার্ক, খাগড়াছড়ি জেলা কার্বারি এসোসিয়েশন, সাজেক ইউনিয়ন কার্বারি এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ইন্ডিজেনাস পিপলস নেটওয়ার্ক অন ক্লাইমেট চেঞ্জ এন্ড বায়োডাইভার্সিটি (বিপনেট), বম সোশ্যাল কাউন্সিল, মালেইয়া ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস্ কাউন্সিল (বি.এম.এস.সি.) ও ত্রিপুরা স্টুডেন্টস ফোরাম, বাংলাদেশ (টি.এস.এফ.)।

অপর দিকে এসব দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন বিশিষ্ট মানবারধিকার কর্মী এ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, নিজেরা করি এর সমন্বয়ক খুশী কবির, বিশিষ্ট আইনজীবি ব্যারিস্টার সারা হোসেন, গবেষক ড. স্বপন আদনান, ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা ও ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব অস্ট্রেলিয়া প্রফেসর ড. বীণা ডি’কস্টা। রবিবার পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা ঐক্য জেন ও শিক্ষাবিদ মধু মঙ্গল চাকমার নেতৃত্বে খাগড়াছড়িতে টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যানের বাস ভবনে এই স্মারকলিপি প্রদান করেন।

উল্লেখ্য, ১৯৮০ ও ১৯৯০ দশকে তৎকালীন বিরাজমান অস্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাহীনতার কারণে ৮০ হাজার পাহাড়ি পরিবার অভ্যন্তরীণভাবে উদ্বাস্তু হয়েছিলেন। বর্তমান বাস্তবতায় এখনো যাঁরা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি মোতাবেক নিজ বসতভিটায় ফেরত যেতে পারেননি, এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন। অভ্যন্তরীণভাবে উদ্বাস্তুদের মধ্যে বড় অংশ রয়েছেন রাঙ্গামাটি জেলার সাজেক, বাঘাইছড়ি, আইমাছড়া, মইদং, দুমুদুম্যা, ফরুয়া ও বরথলী ইউনিয়নে, খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা, পানছড়ি, মাটিরাঙ্গা, গুইমারা ও রামগড় উপজেলায়, এবং বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়ি, রুমা, লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায়।