সাধু সাধু ধ্বণিতে মুখোরিত হয়ে রাজবন বিহার প্রাঙ্গণ
রাঙ্গামাটিতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রবারণা পূর্ণিমা পালন
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
দেশের সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে সারাদেশের ন্যায় রাঙ্গামাটিতেও যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য্যে ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা পালন করা হয়েছে।
রবিবার (৯ অক্টোবর) সকালে রাঙ্গামাটির রাজবন বিহার প্রাঙ্গনে বুদ্ধ পতাকা উত্তোলন, ভিক্ষু সংঘের পিণ্ডদান ও প্রাতঃরাশ, বুদ্ধমূর্তি দান, পঞ্চশীল গ্রহণ, অষ্টপরিস্কার দান, বুদ্ধপূজাসহ নানান ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আচার শেষে দেব-মানবের তথা সব প্রাণীর হিতার্থে ধর্মদেশনা দেওয়া হয়।
স্বধর্ম প্রাণ দায়ক-দায়িকাদের উদ্দেশে ধর্মীয় দেশনা দেন, রাজবন বিহারের ভিক্ষু-সংঘের প্রধান শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাথের। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন জায়গা থেকে শতশত ধর্মপ্রাণ নর-নারীদের সাধু সাধু ধ্বণিতে মুখোরিত হয়ে উঠে পুরো বিহার প্রাঙ্গণ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডে চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ এর চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী, সাবেক উপমন্ত্রী মনিস্বপন দেওয়ান, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরুপা দেওয়ান, রাজবন বিহার পরিচালনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অমিয় কান্তি খীসা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বলেন, প্রবারণা পূর্ণিমার মধ্যদিয়ে বুদ্ধের অহিংসা পরম নীতি মেনে চলে সকল প্রকার মিথ্যা দৃষ্টি পরিহার করে লোভ, হিংসা, মোহ সংঘাতসহ যাবতীয় খারাপ কাজ পরিহার করে সৎ পথে চলতে ও মৈত্রীপূর্ণ মনোভাব নিয়ে একে অপরে সুখে-শান্তিতে বসবাস করার হিতোপদেশ প্রদান করেন।
সন্ধ্যায় আকাশে ফানুষ বাতি উত্তোলন ও প্রজ্জ্বলন করা হবে হাজার প্রদীপ আর এর মধ্য দিয়ে প্রবারণা উৎসব শেষ হবে।
উল্লেখ্য বৌদ্ধ ধর্মীয় ভিক্ষুরা তিন মাস বর্ষাবাসের শেষ দিনটিতে প্রবারণা পূর্ণিমা হিসেবে উদযাপন করে থাকে। প্রবারণা হল আত্মশুদ্ধি ও অশুভকে বর্জন করে সত্য ও সুন্দরকে বরণের অনুষ্ঠান। এর পর থেকে দীর্ঘ একমাস ধরে আয়োজন চলবে প্রধান ধর্মীয় উৎসব কঠিন চীবর দানোৎসব (ভিক্ষুদের গেরুয়া রংয়ের বস্ত্র প্রদান অনুষ্ঠান)। গত কাল প্রত্যক বিহারে বিহারে এ উৎসব ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য্যে পালন করা হয়। বিকালে সকলের মঙ্গল কামনায় ফানুস বাতি উত্তোলন করা হয়।