রাঙ্গামাটি পৌরসভায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদায় সংবর্ধনা
অবসরের পর প্রাপ্য আদায়ে বারান্দায় বারান্দায় ঘুরতে হবে কেন
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
সারাজীবন পরিশ্রম করে নগহরবাসী এবং পৌরসভার সেবা করার পর অবসর জীবনে এসে নিজের প্রাপ্য আদায়ে বারান্দায় বারান্দায় ঘুরতে হবে কেন। এখনো গ্রাচুইটি ও ভবিষ্যৎ তহবিলে টাকা সঠিকভাবে পায়না কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। পরিশ্রম করেও নিজেদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় রাঙ্গামাটি পৌর কর্মচারী সংসদ কর্তৃক আয়োজিত বিদায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং কর্মচারী সংসদ নেতৃবৃন্দরা এসব কথা বলেন।
পৌরসভা সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত বিদায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে একেএম বশির আহমেদ, সভাপতি, রাঙ্গামাটি পৌর কর্মচারী সংসদ এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন, মোঃ আকবর হোসেন চৌধুরী, মেয়র, রাঙ্গামাটি পৌরসভা, মোঃ ইসমাইল উদ্দিন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, রাঙ্গামাটি পৌরসভা, প্যানেল মেয়র, জামাল উদ্দিন ও কালায়ন চাকমা, সচিব সুমন চৌধুরী। অনুষ্ঠান পরিচালনা করে কর্মচারী সংসদ এর সাধারণ সম্পাদক সনদ বড়ুয়া। এছাড়া অনুষ্ঠানে বিদায়ী কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উমেশ রায়, সচিব, শংকর প্রসাদ বড়ুয়া, লাইসেন্স পরিদর্শক, মোঃ নুরুল আমিন, কর আদায়কারী, মিহির দাশ, ক্যাশিয়ার, অনিল দাশ ও শিব প্রসাদ চাকমা, অফিস সহায়ক এবং জমাদার সুধির ও রতন দাশকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। সেই সাথে সেবব্রত বড়ুয়া, স্বাস্থ্য পরিদর্শক, প্রনব চাকমা, স্বাস্থ্য কর্মচারীকে মরোনত্তর সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে।
আলোচনা সভা শুরুতে প্রধান অথিতি ও বিশেষ অথিতি বিদায়ী ও মরোনত্তর কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে সম্মাননা ক্রেস্ট এবং উত্তরীয় প্রদান করেন। এসময় সেবব্রত বড়ুয়া এর পক্ষে তাঁর ভাগিনা মিলটন বড়ুয়া, সম্পাদক ও প্রকাশক, সাপ্তাহিক পাহাড়ের সময়, এবং প্রনব চাকমা’র পক্ষে তাঁর পরিবার সম্মাননা ক্রেস্ট এবং উত্তরীয় গ্রহন করেন।
পরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেছেন, কর্মকর্তা কর্মচারীদের উন্নয়নে পৌর পরিষদ যথেষ্ট আন্তরিক। তবে একে অন্যের বিরুদ্ধে না গিয়ে প্রত্যেককে মুষ্টিবদ্ধ হয়ে থাকতে হবে। তিনি বলেন, নেতৃত্বে নতুনরা আসবে কিন্তু সব কিছু আপনাদেরই হাতে তাই প্রশাসনিক নিয়ম কানুনকে মেনে চলতে হবে। ইতমধ্যে পৌরসভা উন্নয়নে বেশ কিছু প্রজেক্ট হাতে নেয়া হয়েছে। আমরা আপনাদের অধিকার প্রতিষ্টায় একমত রয়েছি। তাই অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজেরও গতি বাড়াতে হবে।
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তাঁর বক্তব্যে বলেছেন, প্রশাসনিক কাজের অবশ্যই পৌর বিধি মেনে করতে হবে। কিন্তু বহুলাংশে দেখা যায় বিধি মানা হচ্ছে না বা ভুল ব্যখ্যা থেকে যাচ্ছে। পৌরসভায় নিজেদের প্রচেষ্টায় আয় বাড়ালে সেটা নিজেরাই ভোগ করবেন। আপনাদের সুবিধাগুলো আদায়ক করতে টেক্স আদায়েও জোর দিন। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চলছে কিন্তু তাঁদের ট্রেড লাইসেন্স ফি বহু বকেয়া এমন কি সঠিক তথ্যও দায়িত্বরতদের কাছে পাওয়া যায় না। সুতরাং নিজেদের কাজে আরো বেশী সচেতন এবং সচেষ্ট হতে হবে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রাপ্য দিতে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
শুরুতেই রাঙ্গামাটি পৌর কর্মচারী সংসদ নেতৃবৃন্দ তাদের বিভিন্ন পাওনার বিষয়ে বক্তব্য তুলে ধরেন। তাঁরা বলেন, ভবিষ্যৎ তহবিলে ৬০ লক্ষ এবং অবসরউত্তোর গ্রাচুইটি বকেয়া রয়েছে ১ লক্ষ ৯২ হাজার টাকা। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা টানা পরিশ্রম করে গেলেও অদ্যবধি এসব বকেয়া ভোগ করতে পারছেনা। যেটুকু পাচ্ছেন তাও এককালীনও নয়। এরপরও সকলেই শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা চাই আমাদের প্রাপ্যগুলো যথাসময়ে পেতে। তাঁরা প্রশ্ন রেখে বলেন, সারাজীবন পরিশ্রম করে নগহরবাসী এবং পৌরসভার সেবা করার পর অবসর জীবনে এসে নিজের প্রাপ্য আদায়ে বারান্দায় বারান্দায় ঘুরতে হবে কেন।
ই-পিসি/আর