[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
দীঘিনালায় যৌথবাহিনীর হাতে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ কর্মী আটকবান্দরবানে রিপোর্টার্স ইউনিটির ভবন জোড়পূর্বক দখলের অভিযোগবান্দরবানের থানচিতে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশমানিকছড়িতে চাঁদাবাজি করতে এসে জনতার হাতে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটকবরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগরাঙ্গামাটির লংগদুতে নৌকার কিছু নেতাকর্মী এখন ট্রাকে উঠে গেছেকাজে দীর্ঘসূত্রতা পরিহার এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে-পার্বত্য উপদেষ্টাসড়ক দুর্ঘটনায় কাপ্তাই বিএফআইডিসি এলপিসি শাখার কর্মচারী নিহতমানিকছড়ির নবাগত ইউএনও’র সাথে বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের শুভেচ্ছা বিনিময়খাগড়াছড়িতে বন্যাকবলিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদী থাকবেনা

রাঙ্গামাটিতে বারি-১ জাতের মাল্টা চাষে আগ্রহ বেড়েছে

৯২

॥ বিনয় চাকমা ॥

রাঙ্গামাটিতে অন্যান্য কৃষি ফসলের পাশাপাশি সুস্বাদু পুষ্টিকর রসালো ফল মাল্টা চাষে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। এজন্য জেলার বিভিন্ন এলাকায় মাল্টা চাষের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে চাষিদের। এখানকার মাটি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মাল্টার আবাদ ভালো হয়েছে এবং দাম ভালো পাওয়ায় সুস্বাদু পুষ্টিকর রসালো ফল মাল্টা চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা। চাষিরা বলছেন, নতুন জাতের ফল ও ফসলের প্রতি সবারই আগ্রহ থাকে। স্থানীয় ভাবে উৎপাদন করা যেকোনো ফলের প্রতি ক্রেতাদেরও আগ্রহ থাকে এবং দামও ভালো পাওয়া যায়। এ কারণে কৃষকরা মাল্টা চাষের প্রতি আগ্রহ বাড়িয়েছেন। এছাড়া মাল্টা চাষে আবহাওয়া অনুকূলে ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ সহিষ্ণু।

রাঙ্গামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় মোট ২১০ হেক্টর জমিতে বারি-১ মাল্টা আবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে মাল্টা গাছে ফলন হয়েছে ১০৮ হেক্টর জমিতে তার মধ্যে সদর ১০ হেক্টর, নানিয়ারচর ২০ হেক্টর, কাউখালী ১০ হেক্টর, বরকল ১২ হেক্টর, জুরাছড়ি ৫ হেক্টর, লংগদু ১৮ হেক্টর, বাঘাইছড়ি ১১ হেক্টর, কাপ্তাই ১৪ হেক্টর, রাজস্থলী ৪ হেক্টর, বিলাইছড়ি ৪ হেক্টর।

কৃষি বিভাগ বলছে, মাল্টা একটি সুস্বাদু ফল। জেলায় সুস্বাদু এ পুষ্টিকর রসালো ফল চাষ করা হচ্ছে। এলাকার বেকার যুবকরাও অন্যান্য ফসল চাষের পাশাপাশি মাল্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। ভালো দাম পাওয়ার আশায় কৃষকদের নতুন ফল ও ফসলের প্রতি আগ্রহ থাকে। জেলার কয়েকটি এলাকায় ভারমিক পদ্ধতিতে বারি-১ মাল্টা চাষের উপযোগী জমিতে চাষ করা হচ্ছে। যেখানে কৃষকরা ধানের পাশাপাশি মাল্টা চাষ শুরু করেছেন। তবে দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ মাটিতে ভালো জাতের মাল্টা গাছের চারা রোপণ করতে পারলে এবং নিবিড় পরিচর্যায় মাল্টার ফলন ভালো হয়।

গত ১৩ বছর ধরে রাঙ্গামাটিতে মাল্টা চাষ শুরু হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের উদ্যোগী করা হচ্ছে এবং চাষিদের সার্বিক সহযোগিতাও করা হচ্ছে। গত বছর সুস্বাদু রসালো এ মাল্টা স্থানীয় বাজারে স্বল্প আকারে বিক্রি করা হয়েছিল। কোনো ধরনের রাসায়নিক প্রয়োগ ছাড়াই জমি থেকে মাল্টা বিক্রি করা হয়েছে। ক্রেতারা স্থানীয় এসব ফল কিনতেও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন। স্বাদও মোটামুটি ভালো বলে জানা গেছে।

সাপছড়ি ইউনিয়নের বোধিপুড়র গ্রামের মাল্টা চাষি হেম কুমার চাকমা বলেন, তাঁর জমিতে প্রথমে ধান চাষ করতাম এরপর ২০১৩ সালে প্রথমে আঁখ চাষ করে এতে লোকসানে পড়তে হয়েছে। কোনো ফল বা ফসলের দাম একবার পাওয়া গেলে কৃষকরা পরের বছর ঝাঁপিয়ে পড়ে সেটা আবাদ করতে। এতে একই ফসল বাজারে থাকায় দাম কম পাওয়া যায়।

তিনি বলেন, নতুন প্রযুক্তিতে নতুন ফসলের দিকে আগ্রহ বেড়েছে। ২০১৪ সালে এক একর জমিতে কৃষি অফিস থেকে প্রদর্শনীতে নিয়ে ও নিজে কিছু বারি-১ জাতের মাল্টার চারা দিয়ে শুরু করেছি। বাগানে প্রায় ১০৯ টি মাল্টার গাছ আছে। মাল্টা চাষে কৃষি অফিস থেকে সার্বিক পরামর্শ দিচ্ছেন। প্রথম দফায় ২০১৭ সালের অক্টোবরে প্রায় ১০- ২০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় দফায় ৫০-৫৫ হাজার টাকা, তৃতীয় দাফায় ৬০-৭০ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি করেছি। এ বছর গাছে প্রচুর ফলন হয়েছে। মাল্টা চাষে তেমন খরচ বা শ্রম দিতে হয় না।

রাঙ্গামাটির বিলাইছড়িপাড়া এলাকার কৃষক মনিন্দ্র চাকমা বলেন, প্রায় ৩ একর জমিতে মাল্টা চাষ করা হয়েছে। মাল্টা চাষের প্রতি আগ্রহ বাড়ার কারণ হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ছিল এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে সব জমিতেই চাষ করবেন। তাই আমি আমার জায়গাতে একটি মিশ্র ফলের বাগান করার চেষ্টা করি আর জেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় বাগানে মিশ্র ফলের চাষ শুরু করি। বারি – ১ জাতের মাল্টা একটি নতুন একটি ফসল। তুলনামূলকভাবে অন্যান্য ফসল থেকে ঝামেলা ও পরিশ্রম কম। এছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভেঙে যাওয়ার কোনো সম্ভবনা থাকে না। এবছর আরও জেলা কৃষি অফিসের প্রকল্পের মাধ্যমে বারি-১ জাতের মাল্টার চারা ৪৫০ টি রোপণ করিছি।

রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আপ্র“ মারমা বলেন, ‘মাল্টা একটি পুষ্টিকর ফল। মাল্টা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে। বাজারে এর চাহিদা বেশি থাকায় ভালো দাম পেয়ে কৃষকরা লাভবান হয়েছেন। আগামীতে এর আবাদ আরও বাড়ানো হবে।’

রাঙ্গামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক পবন কুমার চাকমা বলেন, কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের মাল্টা চাষে উদ্বৃদ্ধ করা হচ্ছে। গত ২০০৭ সাল থেকে মাল্টা চাষ শুরু হয়েছে। এ জেলায় প্রায় মোট ২১০ হেক্টর জমিতে মাল্টা আবাদ করা হয়েছে। এছাড়া ৮ উপজেলায় প্রায় ৩০টি প্রদর্শনী লেবু জাতীয় উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আমাদের এলাকার জমি মাল্টা চাষের জন্য উপযোগী এবং আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। বারি-১ লাভজনক ও সুস্বাদু ফল হওয়ায় চাহিদা বেশ

ই-পিসি/আর