লামায় যৌন হয়রানীর দায়ে চেয়ারম্যান জসিমের বিরুদ্ধে পরোয়ানা
॥ বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি ॥
লামা উপজেলা ৪নং আজিজ নগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনসহ আরও দুইজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছে নারীও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল। সোমবার (২৩ মে) দুপুরে বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল জসিম উদ্দিন চেয়ারম্যানসহ আরও দুইজনের বিরুদ্ধে এই গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন।
জানা গেছে, বান্দরবান লামা উপজেলায় ইয়াছমিন আক্তার নামে এক মহিলা গত ৩০ আগষ্ট তাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালে মামলায় দায়ের করেন। মামলার তদন্তের শেষে অভিযোগের সত্যতা পায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল। পরে বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল (জেলা ও দায়রা জজ) বিচারক মোহাম্মদ সাইফুর রহমান সিদ্দিক আজিজনগর জসিম উদ্দিন চেয়ারম্যানসহ অন্য দুইজন আসামীদেরকে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন।
তারা হলেন, ৪নং আজিজ নগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন (৪৮), মোস্তাক আহম্মদ (৩৫) ও সাইফুল ইসলাম (৩৫)।
বাদির পক্ষে নিয়োজিত সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট কাজী মহতুল হোসাইন যত্ন জানিয়েছেন, ঐ নারীর অভিযোগটির সত্যতা প্রমাণ হওয়ার কারণে বাদি আদালতে হাজির হয়ে আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতার ও কঠিন শাস্তি দাবি করেছেন। পরে বিজ্ঞ বিচারক নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল আসামীদের বিরুদ্ধের গ্রেফতারী পরোয়ানার আদেশ দেন।
এদিকে মামলার এজাহার তথ্যনুযায়ী, জমি জায়গায় নিয়ে বিচারের জন্য ইয়াছমিন আক্তার চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন এর কাছে অভিযোগ করেন। কিন্তু অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার অফিসে বিকাল ৪টায় সময় উপস্থিত থাকার জন্য বললে বিকাল ৪টায় হতে রাত ৮টায় পর্যন্ত অফিসে বসিয়ে রাখেন। পরে চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন ঐ নারীকে সমাধান করা হবে বলে নিজের গোপন কক্ষে নিয়ে যায়। কক্ষে ভিতর অশ্লীল ও যৌন হয়রানীমূলক কথাবার্তা বলতে থাকেন ঐ নারীকে। কিন্তু অশ্লীল ভাষা না বলার জন্য বারণ করলে এক পর্যায়ের ঐ নারীকে টেনে হিছড়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালান চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন। পরে ঐ নারী চিৎকার করলে কক্ষে ছুটে আসে নারীর স্বামী ও তার বড়ভাই। মামলার অভিযোগে আরো বলা হয়, চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন ধর্ষণ করতে না পেরে ঐ নারী বাম হাতে লোহার রড দিয়ে আঘাত করে। পরে চেয়ারম্যানের পক্ষে ঘটনাস্থলে আরো যোগ দেন মোস্তাক আহম্মদ ও সাইফুল ইসলাম নামে দুই ব্যক্তি। তারা সবাই মিলে মহিলার গলা চেপে ধরে, চুল টেনে হেচড়ে মারাত্মক ভাবে অত্যাচার চালায় ঐ তিন ব্যক্তি। ঘটনাস্থল থেকে ঐ নারী চলে যাওয়া পর তাদের বিরুদ্ধের মামলা করলে মেরে ফেলার ও গুম করার হুমকি দেন চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন।
এব্যাপারে চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনকে একাধিক বার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।
এদিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের বেঞ্জ সহকারী এস.এম মাঈনুল ইসলাম সিকদার বলেন, বাদির দরখাস্তের প্রেক্ষিতে অপরাধ আমলী নিয়ে আদালত ৪নং আজিজ নগর ইউপি চেয়ারম্যন জসিম উদ্দিনসহ সহযোগী দুইজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করেন।