[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
দীঘিনালায় যৌথবাহিনীর হাতে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ কর্মী আটকবান্দরবানে রিপোর্টার্স ইউনিটির ভবন জোড়পূর্বক দখলের অভিযোগবান্দরবানের থানচিতে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশমানিকছড়িতে চাঁদাবাজি করতে এসে জনতার হাতে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটকবরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগরাঙ্গামাটির লংগদুতে নৌকার কিছু নেতাকর্মী এখন ট্রাকে উঠে গেছেকাজে দীর্ঘসূত্রতা পরিহার এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে-পার্বত্য উপদেষ্টাসড়ক দুর্ঘটনায় কাপ্তাই বিএফআইডিসি এলপিসি শাখার কর্মচারী নিহতমানিকছড়ির নবাগত ইউএনও’র সাথে বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের শুভেচ্ছা বিনিময়খাগড়াছড়িতে বন্যাকবলিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপি

নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে মানববন্ধন

৬৫

॥ খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি ॥

তিন পার্বত্য জেলায় সম্প্রতি ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনে গত এক সপ্তাহে বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। এসবের প্রতিবাদে এবং জড়িত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। বুধবার (১৮ মে) সকালে খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করা হয়।

বক্তারা বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতার হার দিন দিন বেড়ে চলেছে। বিশেষত ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা প্রতিদিন চোখে পড়ছে। পরিবারের সদস্য, নিকটাত্মীয় দ্বারা নির্যাতনের ঘটনাও অহরহ ঘটছে। নারীরা ঘরে-বাইরে কোথাও নিরাপদ নয়। কখনো কখনো নারীর প্রতি সংঘটিত নির্যাতনের দায়ভার নারীকেই নিতে হচ্ছে, দোষারোপ করা হচ্ছে তাদের।

এদিকে গত মঙ্গলবার (১০মে) রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় সাজেক পর্যটন এলাকায় মোঃ রায়হান (২৭), পিতা- মোঃ হাসান কর্তৃক এক ত্রিপুরা কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। পরে সামাজিক বিচার করে ভিকটিমকে জরিমানা করারও অভিযোগ ওঠেছে। পরে গত বৃহস্পতিবার (১২মে) খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলাধীন থানাচন্দ্র পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মোঃ বেলায়েত হোসেন (৪২) কর্তৃক ৫ম শ্রেণীর এক ত্রিপুরা ছাত্রীকে শ্লীলতাহানীর ঘটনার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা বাদী হয়ে থানায় মামলা দিয়েছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক পলাতক রয়েছে। গত শুক্রবার (১৩মে) রাতে খাগড়াছড়ি সদর শান্তিনগর এলাকায় বাড়ী থেকে অদূরে বাজার করতে আসা ২৫বছর বয়সী এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ধর্ষণের সময় ভিডিও ধারণ করে এবং মেয়েটিকে হুমকিও প্রদান করে যাতে কাউকে না বলে। পরে মেয়েটি থানায় গিয়ে মোঃ সোহেল মিয়া (২৯), পিতা: মোঃ রুস্তম আলী ও মোঃ আজিম উদ্দীন (২৯), পিতাঃ জমের উদ্দিন নাম উত্থাপন করে মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং-০৮, ১৪/০৫/২০২২। মেয়েটির কথার মতো পরে পুলিশ অভিযান চালিলে মোঃ সোহেল মিয়া (২৯ কে গ্রেফতার করে। তবে আরেকজনকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি। গত শনিবার (১৪মে) বান্দরবান জেলা সদরে ফরহাদ চৌধুরী (২৯) নামে এক যুবক ঘরে ঢুকে জোরপূর্বক প্রতিবন্ধী এক ত্রিপুরা নারীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত ফরহাদ চৌধুরী বান্দরবান সদর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের লেমুঝিরি পাড়ার বাসিন্দা। সর্বশেষ সপ্তাহে গত রবিবার (১৫মে) রাঙ্গামাটি জেলা সদরে তবলছড়ি ওয়াপদা কলোনী এলাকায় মোঃ ফিরোজ (২৭) নামে এক যুবক ১৩বছর বয়সী প্রতিবন্ধী এক শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। পরে এলাকাবাসীরা টের পেয়ে ধর্ষণের চেষ্টাকারী মোঃ ফিরোজকে ধরে পুলিশকে ধরিয়ে দেয়। পরে শিশুটির মা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।

নারীদের নিয়ে গঠিত ‘উইমেন এক্টিভিস্ট ফোরামের আয়োজনে মানববন্ধনে এসব ঘটনাকে সামনে এনে বক্তারা বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে। নারী ও শিশু ধর্ষণ-নির্যাতনের মতো জঘন্য সব কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান করতে হবে। বক্তারা আরও বলেন, নারীর সুরক্ষায় দেশে যে আইন বিদ্যমান আছে, সেসব আইনের যথাযথ প্রয়োগ হচ্ছে না। ফলে নির্যাতনকারীরা নির্যাতন করতে আর ভয় পায় না। আর ধরা পড়লেও আইনের ফাঁকফোকর গলে তারা পার পেয়ে যাচ্ছে। তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা দেশের রক্ষণশীল সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি, যা নারীর প্রতি নেতিবাচক ও তাদের ওপর সহিংসতার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নীতিনির্ধারণের সর্বোচ্চ শক্তি কাজে লাগিয়ে কয়েকজন অপরাধীর শাস্তি বিধান ও কার্যকর হলে চিত্র অনেকটা পাল্টাবে বলে মনে করেন বক্তারা।

মানববন্ধনে উইমেন এক্টিভিস্ট ফোরামের সহ সদস্য-সচিব আঞ্জুমান আক্তার (প্রিয়া) এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন খাগড়াপুর মহিলা কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক শেফালিকা ত্রিপুরা। ত্রিপুরা স্টুডেন্টস্ ফোরামের খাগড়াছড়ি সদর শাখার সভাপতি খলেন জ্যোতি ত্রিপুরার সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন কেএমকেএস’র পিকিং বড়ুয়া। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন কেএমকেএস’র স্বপ্না চাকমা, বিএমএসসি’র জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সীমা মারমা প্রমুখ।

 

মানববন্ধন শেষে মিছিল আকারে অফিসার্স ক্লাবে গিয়ে শেষ হয়। পরে তিন দফা দাবি করে উইমেন এক্টিভিস্ট ফোরামের আহবায়ক গৌরিমালা ত্রিপুরা ও সহঃ সদস্য সচিব আঞ্জুমান আক্তার (প্রিয়া) স্বাক্ষরে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আবু সাঈদ এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। দাবিগুলো হচ্ছেঃ ০১) অবিলম্বে যৌন হয়রানি ও জোরপূর্বক ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত সকল দোষীদের গ্রেফতার করে দ্রুত বিচারের মাধ্যমে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করা; ০২) ধর্ষণ ও হত্যার শিকার পরিবারদ্বয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; ০৩) এ ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি রোধ করার জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্তৃপক্ষসমূহকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা।