[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
প্রকৃতির কাছে আমরা সবাই অপরাধী রাঙ্গামাটিতে বৃক্ষ মেলায়: উপদেষ্টা সুপ্রদীপ৫ আগস্ট বিজয় দিবস পালন উপলক্ষ্যে রাজস্থলীতে বিএনপির সভারাঙ্গামাটির কাপ্তাইয়ে মাদক বিরোধী র‌্যালী ও সমাবেশকাপ্তাইয়ে পুলিশের তল্লাশিতে তামার তারসহ পাচারকারী আটকবান্দরবানের থানচিতে গ্রামীণ সড়ক হলেও সেতুর অভাবে ১২০ পরিবারকাপ্তাইয়ে মাতৃ সম্মেলন ও বৈদান্তিক বিদ্যালয় উদ্বোধনরাঙ্গামাটির কাপ্তাইস্থ ব্যাঙছড়ি সড়কের সংযোগ ব্রিজ দুই বছরেও সম্পন্ন হয়নিরামগড় উপজেলা পিসিএনপির সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিনের মৃত্যুবাঘাইছড়িতে সেগুন কাঠ জব্দ করেছে মারিশ্যা বিজিবি জোনকাপ্তাই হ্রদে পানিতে ডুবেছে রাঙ্গামাটির আইকন ঝুলন্ত সেতু
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

বান্দরবানে রোহিঙ্গা শরনার্থীদের নাগরিত্ব দেওয়ার অভিযোগ ইউপি সদস্য’র বিরুদ্ধে

৪৩

॥ বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি ॥

বান্দরবানের বহিরাগত শরনার্থীদের জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম ও মৃত্যু সনদ তৈরীতে ইউপি সদস্য কর্তৃক জালিয়াতি অভিযোগ পাওয়া গেছে। সদর উপজেলার ৪নং সুয়ালক ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের কাইচতলী ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ জসিম উদ্দিন এ জালিয়াতির সাথে জড়িত অভিযোগ উঠেছে।

এ সম্পর্কে ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ জসিম উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, অভিযোগটি ভুয়া। আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। ব্যাপারটি নিয়ে কাল বান্দরবানে এসে দেখা করব বলে জানান তিনি।
এদিকে গত ১৯ এপ্রিল মঙ্গলবার বান্দরবান চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বরাবর রোহিঙ্গা শরনার্থীদের ভোটার বানানো জালিয়াতি অভিযোগ এনে চারজনের বিরুদ্ধের ফৌজদারি মামলা করেন ঐ এলাকার বাসিন্দা ও দ্বিতীয় বর্ষে ছাত্র মোঃ হাসান।

তারা হলেন, রোহিঙ্গা শরনার্থীর শফিউল মোস্তফা (২০) ,আলী জোহার (২২), সদর উপজেলার ৪নং সুয়ালক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উক্যনু মার্মা ও ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ জসিম উদ্দিন।

অভিযোগকারী মোঃ হাসান বলেন, এর আগে অনেকজন রোহিঙ্গা শরনার্থীদের জন্ম সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্র বানিয়ে দিয়েছেন ইউপি সদস্য। প্রমাণ না থাকায় কিছুই করতে পারিনি। ভুয়া কাগজপত্র জালিয়াতি করে এবারও আরো দুজন রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি নাগরিক করার জন্য প্রচেষ্টার চালাচ্ছেন ইউপি সদস্য।

এবিষয়ে ৪নং সুয়ালক ইউপি চেয়ারম্যান উক্যনু মারমা জানিয়েছেন, ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান জসিম উদ্দীন বিশ্বস্ত বিধায় তিনি কাগজ পত্র যাচাই বাচাই করেননি। তাই তিনি না দেখে স্বাক্ষর ও সীল দিয়েছিলেন। বাদী পক্ষের আইনজীবি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট কৌশিক দত্ত। তিনি জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা শরনার্থীদের অবৈধ ভাবে জাতীয় পরিচয় পত্র ও ভোটার নিবন্ধনের বিষয়ে বান্দরবান চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে দাখিল করা হয়েছে। এ সি.আর মামলা নং ৫৬/২০২২ এর সুত্রে ফৌজদারী অভিযোগের ভিত্তিতে ৪ জনের বিরুদ্ধের মামলা করা হয়েছে। তিনি জানান, ২১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বান্দরবান চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৪ জনের বিরুদ্ধের মামলা হয়ে গোয়েন্দা সংস্থাকে অভিযোগের পাঁচটি বৈশিষ্ট্যসূচক লক্ষণ উল্লেখ করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া কথা বলা হয়েছে।

খোজঁ নিয়ে জানা গেছে, বিগত ২৭ হতে ২৮ শে সেপ্টেম্বর ২০১৬ সালে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সনদ ৪ নং সুয়ালক ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় হতে স্বাক্ষর ও সিল নিয়ে যোগসাজশে দুই রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে কাগজ পত্র দাখিল করেন বান্দরবান সদর উপজেলায়। সে নাগরিকত্ব সদর উপজেলার নির্বাচনের কার্যক্রম শেষে ছবিসহ ভোটার তালিকা হালনাগাদের যাচাই বাছাইয়ের পর প্রদত্ত তালিকায় তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে এখন প্রক্রিয়াধীন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জন্ম ও মৃত্যু সনদ জালিয়াতি ভাবে তৈরী করে দুই রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশী নাগরিক হিসেবে পরিচয়ধারী দিয়েছেন সুয়ালক ইউনিয়নে ইউপি সদস্য মোঃ জসিম উদ্দিন। দুই রোহিঙ্গার বিরুদ্ধে সত্যতা গোপন করে জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখিয়ে ভুয়া ঠিকানায় জাল জন্ম ও মৃত্যু সনদের সত্যায়নের সত্যতা প্রকাশ পায়। তবে মৃত ব্যক্তি খলিল রহমান বর্তমানে তিনি এখনো জীবিত এবং সে সুয়ালক ইউনিয়নে ২নং ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা ও বাংলাদেশের নাগরিক।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকায় বহিরাগত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাইরে থেকে এনে জালিয়াতি করে ভোটার বানিয়ে দিচ্ছেন ইউপি সদস্য মোঃ জসিম উদ্দীন। বিভিন্ন মহল থেকে কাগজপত্র সংগ্রহ করে স্বাক্ষর হতে সীল পর্যন্ত জালিয়াতি করে উপজেলার বরাবর সে কাগজ পত্র দাখিল করেন। পরে মৃত্যু, জন্ম ও জন্ম সদন ও ভুয়া ভাবে তৈরী করে দেশের নাগরিকত্ব করে দিচ্ছে ইউপি সদস্য। ২নং ওয়ার্ডের এলাকার বাসিন্দা মাতব্বর মুনসুফ আলী জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা শরনার্থীদের জালিয়াতি করে প্রায় কয়েকশ জনকে ভোটার বানিয়েছেন ইউপি সদস্য। এর প্রতিরোধ করতে গেলে উলটো ভয়ভীতি দেখান তিনি। একই এলাকার বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম জানান, ইউপি সদস্য স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রধানমন্ত্রী ঘর না দিয়ে নিজের জালিয়াতির তৈরী করা ঘর রোহিঙ্গাদেরকে দিয়েছেন।

বান্দরবান নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের কর্মকর্তা পরান্টু চাকমা জানান, জালিয়াতি অভিযোগ প্রেক্ষিতে রোহিঙ্গা কাগজপত্র স্থগিত রাখা হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবরিনা আফরিন মুস্তাফা জানান, জন্ম ও মৃত্যু সনদ জালিয়াতির ব্যাপারে আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। এবং সেটি ব্যাপারে তদন্ত কমিটিকে দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্তের পর সেটি বিস্তারিত জানা যাবে।