বিজু, সাংগ্রাই, বৈসু, বিষু, বিহু ও সাংক্রান এর বর্ণঢ্য র্যালী
পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ প্রতিটি মুহূর্ত আশায় আশায় জীবন অতিবাহিত করছে: সন্তু লারমা
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা বলেছেন, জুম্মজাতির সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও জীবনধারা সহ সার্বিক নিরাপত্তার জন্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলাম। দীর্ঘ ২৫ বছর অতিবাহিত হতে চলেছে চুক্তি এখনো বাস্তবায়ন হতে পারেনি। রবিবার (১০ এপ্রিল) সকালে রাঙ্গামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণে বিজু, সাংগ্রাই, বৈসু, বিষু, বিহু ও সাংক্রান উদযাপন উপলক্ষে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজু,সাংগ্রাই,বৈসু,বিষু,বিহু,সাংক্রান উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক (অবঃ উপ-সচিব) প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা এর সভাপতিত্বে এসময় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাখেন, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী, বাংলাদেশ হিন্দু,বৌদ্ধ, খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক পঞ্চালন ভট্টচার্য্য, সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কে সাধারণ সম্পাদক শান্তি বিজয় চাকমা,রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ঝর্ণা খীসা,বালুখালী ইউপি চেয়ারম্যান অমর বিকাশ চাকমা। এছাড়া বক্তব্য রাখেন,ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।
সন্তু লারমা বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে সাংস্কৃতিক তথা জীবনধার যেভাবে হওয়ার কথা সেটি কি সেভাবে হচ্ছে? তা গভীরভাবে নিরক্ষণ করা ও বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। পার্বত্য অঞ্চলে যারা স্থায়ী অদিবাসী আছেন,তারা তাদের জীবন দিয়ে এগিয়ে চলেছেন। সেদিক ক্ষেত্রে তারা দেখছেন, জুম্ম জাতির সংস্কৃতি তথা তাদের জীবন ধারা অবনতি হচ্ছে এবং নানা কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে। বেশ কয়েকটি কারণ বিরাজমান, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক,সামাজিক এবং জাতিগত লিঙ্গ-বর্ণগত কারণ সহ নানাবিধ কারণ বিরাজ করছে।
তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ প্রতিটি মুহূর্ত আশায় আশায় জীবন অতিবাহিত করছে। কবে তাদের জীবনের নতুন করে মুখে হাসি ফুটবে, কবে তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে এবং পার্বত্য অঞ্চলের বুকে নতুন সূর্য উঠবে সেই অপেক্ষায় রয়েছে। পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ আজ অধিকার হারা হয়ে নানান চাপের মুখে তাদের জীবন অতিবাহিত করতে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, অধিকার ছাড়া ভাষাকে জীবিত রাখা যায় না। নিজের মাতৃভাষাকে সংরক্ষণ করতে হলে অধিকারের প্রয়োজন হয়। জুম্মজাতির সংস্কৃতি ধারণ করে রাখতে হবে এবং এ সংস্কৃতিকে বিকাশে এ উৎসবকে ধরে রাখতে হবে। পার্বত্য অঞ্চলের ভিন্ন ভাষাভাষী জুম্ম জনগণ তাদের যে জাতিগত এবং জাতীয় সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও বিকাশে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী বলেন, আমাদের ভাষা, আমাদের পরিচয়। আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষা করতে হবে। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্বত্য অঞ্চলের সংস্কৃতি রক্ষায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির আইন ২০১০ বাস্তবায়ন করেছেন। তিনি বলেন, পার্বত্য শান্তি চুক্তির বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক। কিন্তু চুক্তির কোথায় কি সমস্যা আছে তা উভয়পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে নিরসন করা দরকার।