শত বছরের প্রাচীন এসডিও বাংলো সংরক্ষণের উদ্যোগ জেলা প্রশাসনের
॥ দহেন বিকাশ ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি ॥
খাগড়াছড়ি জেলার রামগড়ে শত বছরের প্রাচীন এসডিও বাংলোটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের অর্থায়নে বাংলোটির প্রয়োজনীয় সংস্কারসহ সৌন্দর্যবর্ধনমূলক বিভিন্ন কাজের উদ্যোগ নেয়া হয়। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস ভবনটির সংস্কারের জন্য ৫ লক্ষ টাকার চেক প্রদান করা হয়েছে উপজেলা প্রশাসনকে। সোমবার (৪ এপ্রিল) রামগড় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কুমার কারবারি সংস্কার কাজের উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনকালে রামগড় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কুমার কারবারি বলেন, ঐতিহাসিক নির্দশন এসডিও বাংলোটি মহান মুক্তিযুদ্ধেরও বহু স্মৃতি ধারন করে আছে। ১৯৭১ সালে চট্টগ্রাম পতনের পর কালুরঘাটের স্বাধীন বাংলার বেতার কেন্দ্রটি রামগড়ের এ এসডিও বাংলোতে এনে স্থাপন করা হয়। রামগড় পতনের পূর্ব পর্যন্ত এখান থেকে স্বাধীন বাংলার অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়।
রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দোকার মোঃ ইখতিয়ার উদ্দীন আরাফাত বলেন, রাঙ্গামাটির পতনের পর পাবর্ত্য চট্টগ্রাম জেলা সদর রাঙ্গামাটি থেকে রামগড়ে স্থানান্তরিত করে এখান থেকে স্বাধীন বাংলা সরকারের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। তৎকালীন জেলা প্রশাসক জনাব এইচ টি ইমাম রামগড়ের এসডিও বাংলোতে অবস্থান করে স্বাধীন বাংলা সরকারের প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। তিনি আরো বলেন, ইতিহাস ঐতিহ্যের নির্দশন এসডিও বাংলোটি জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সংরক্ষণ ও প্রয়োজনীয় সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পর্যটকরা যেন বেড়াতে এসে এই ইতিহাস জানতে পারে সেজন্য বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খোন্দকার মোঃ ইখতিয়ার উদ্দীন আরাফাত, রামগড় পৌরসভার মেয়র মোঃ রফিকুল আলম কামাল, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার ফারুক, মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান হাসিনা আকতার, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোস্তফা হোসেন, পাতাছড়া ইউপি চেয়ারম্যান কাজী নুরুল আলম (আলমগীর), সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মফিজুর রহমান, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের’সহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগণ এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এসডিও বাংলোর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস সংবলিত বিশাল বিলবোর্ড স্থাপন করা হয় বাংলোর প্রবেশ দ্বারে।
উল্লেখ্য, বৃটিশ শাসনামল ১৯২০ সালে রামগড়কে মহকুমায় রূপান্তরের পর ঐ সময়ে সীমান্তবর্তী ফেনী নদীরকুল ঘেঁষে তৎকালীন বৃটিশ সরকার মহকুমা প্রশাসকের জন্য বাংলোটি নির্মাণ করে। আশির দশকে মহকুমা বিলুপ্ত হওয়ার পর বাংলোটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। বর্তমানে বাংলোটি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, যুব উন্নয়ন অফিস ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।