[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
নওমুসলিম জীবন চাকমা (আবু বক্কর) কর্তৃক প্রতারণার শিকার অমর বিকাশ চাকমারোয়াংছড়িতে উপকার ভোগীদের মাঝে শিক্ষা ও পুষ্টিকর খাবার সামগ্রী বিতরণকাপ্তাই সেনাজোন কর্তৃক দরিদ্র পরিবারের মাঝে ছাগল ও হাঁস-মুরগী বিতরণদীঘিনালায় অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধাররাজস্থলীতে বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস পালিতআমরা হাল ছাড়বো না, রাজস্থলীতে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের কর্মবিরতিকঠিন চীবর দান বুদ্ধ ধর্মে বৌদ্ধদের সর্বশ্রেষ্ট দানলামায় ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ফার্মেসিতে মোবাইল কোর্ট এর জরিমানাচলতি ডিসেম্বরেই পার্বত্য চট্টগ্রামে ই-লার্নিং স্কুল চালু করা হবে- পার্বত্য উপদেষ্টাতথ্য অফিসের আয়োজনে বাঙ্গালহালিয়ায় নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

কঠিন চীবর দান বুদ্ধ ধর্মে বৌদ্ধদের সর্বশ্রেষ্ট দান

\ দেবদত্ত মুৎসুদ্দী গোপাল \
কঠিন চীবর দান বৌদ্ধ ধর্মে এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের একটি বিশেষ ও গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব, যা ‘দানোত্তম’ বা সর্বশ্রেষ্ঠ দান হিসেবে পরিচিত। কঠিন চীবর দান পৃথিবীতে যত প্রকার দান আছে তাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দান অনুষ্ঠান। এই দানের মহৎ ফল বর্ণনা করতে গিয়ে বুদ্ধ বলেছেন, যাবতা সব্বদানানি একো বস্সসতং দদে, একস্স কঠিন দানস্স কলং নগ্ঘন্তি সোলসিং। অর্থাৎ সর্বপ্রকার দান যেমন, অষ্টপরিস্কারদান, সংঘ দান, অন্ন দান, নানাবিধ দান ইত্যাদি ইত্যাদি দান করলে ১০০ বছর ব্যাপী দান করলেও একটি কঠিন চীবর দানের পুণ্যের ষোলভাগের একভাগও পুণ্য হয় না।

বৌদ্ধ ধর্ম মতে, এটি সর্বশ্রেষ্ঠ দান। শতবছরের অন্যান্য দানের পুণ্যের ফলের চেয়েও কঠিন চীবর দানের পুণ্যের ফল বেশি বলে মনে করা হয়। এই দান দাতা এবং গৃহীতা (ভিক্ষু) উভয়ের জন্য অশেষ পুণ্য এবং সুফল নিয়ে আসে, যার পুণ্যের ফল জন্ম-জন্মান্তরেও শেষ হয় না। চীবর হলো ভিক্ষুদের পরিধেয় বস্ত্র। গাছের শেকড়, গুঁড়ি, ছাল, শুকনো পাতা, ফুল ও ফলের রঙ অনুসারে এর ছয়টি রঙ নির্দিষ্ট। তবে ভিক্ষুসংঘ সাধারণত লাল ফুলের রঙের চীবর, কাঠাল গাছের হলুদ রং, চকলেট রং ব্যবহার করে, যা সাধারণ মানুষের ব্যবহার বস্ত্র থেকে পৃথক।

চীবর দান’ কথাটির সঙ্গে ‘কঠিন’ শব্দটি যুক্ত হওয়ার কারণ সম্পর্কে মহাবগ্গ গ্রন্থে বলা হয়েছে যেদিন চীবর দান করা হবে সেদিনের সূর্যোদয় থেকে পরবর্তী সূর্যোদয় পর্যন্ত সময়ের মধ্যে (২৪ ঘণ্টার মধ্যে) সুতাকাটা, কাপড বোনা, কাপড় কাটা, সেলাই ও রঙ করা, ধৌত করা ও শুকানো এ কাজগুলি সম্পন্ন করে উক্ত সময়ের মধ্যেই এ চীবর ভিক্ষুসংঘকে দান করতে হবে। এ ছাড়া আরও কিছু নিয়ম-কানুন আছে, যা দাতা এবং গ্রহীতা উভয়ের জন্যই পালন করা বেশ কঠিন। বর্তমানে দোকান থেকে ক্রয় করে বিভিন্ন রং এর চীবর দান করে থাকেন।

কঠিন চীবর দানের দ্বারা মানুষের মধ্যে ত্যাগী চেতনার উৎপন্ন ঘটে। কারণ দান করা মানেই কৃপনতা না করে অন্যকে দেওয়া এবং এই দানে মানুষের সামাজিক, অর্থনৈতিক পরস্পর একতা আসে। কঠিন চীবর দান একটি বৌদ্ধ মহাসম্মেলন আয়োজনে বৌদ্ধদের মাঝে বিরাজ করে মৈত্রী, ভালোবাসার মহামিলন, চাকমা, মারমা, বড়ুয়া, তংচংগা, তাছাড়া হিন্দু, মুসলিম, খ্রিষ্টান জাতি ধর্ম, বর্ণ, নির্বশেষে ভ্রাতৃত্ব, সৌহার্দ্য এবং সম্প্রীতি। তাই মানুষের মাঝে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য, শ্রদ্ধা, সম্মান জাগাতে উক্ত অনুষ্ঠান সকলের মাঝে সুফলতা দেয়। বর্তমান বিশ্বে প্রতিনিয়ত ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, জাতি, রাষ্ট্র, দ্বন্ধ-সংঘাতে জর্জরিত, এমনি সময়ে মহামানব তথাগত গৌতম বুদ্ধের অমিয়বাণী মৈত্রী, করুণা, মুদিতা ও উপেক্ষা মানব অন্তরে শান্তি আনয়ন করে। বর্তমান অশান্ত বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং মানব জীবনে নৈতিক, নৈতিকতা, শৃঙ্খলা, ইহলোক, পরলোক কল্যাণ সাধন সম্ভব।