খাগড়াছড়ি জেলার বিহারে বিহারে পালিত হচ্ছে দানোত্তম কঠিন চীবরদান
\ মোঃ সোহেল রানা, দীঘিনালা \
খাগড়াছড়ি জেলার বিহারে বিহারে পালিত হচ্ছে মাসব্যাপী বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দানোত্তম কঠিন চীবরদান। কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানে দূর-দূরান্ত থেকে দায়ক-দায়িকা বৌদ্ধ ধর্মালম্বী হাজারো পূণ্যার্থী অংশ নিচ্ছেন বিহারে বিহারে অনুষ্ঠিত এ দান অনুষ্ঠানে।
প্রতিটি বিহারে বিহারে পূণ্যার্থীরা পঞ্চশীল গ্রহণ শেষে, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, পানীয় দান, বুদ্ধ মূর্তি দান, চীবর দান, কল্পতরু দানসহ নানাবিধ দান করেন। ধর্মীয়গুরুদের দেশনা মনোযোগ দিয়ে গ্রহন করেন। দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইনামুল হাছান বিহার পরিদর্শন কালে বলেন, শান্তি, স¤প্রীতি ও সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে কঠিন চীবর দানোৎসব সম্পন্ন করতে আইন-শৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে খাগড়াছড়ির জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ কামরুল ইসলাম দীঘিনালা বন বিহার, কামাকুছড়া ধম্মাংকুর (ধলাইমা) বৌদ্ধ বিহার ও সার্বজনীন শাল বিহার পরিদর্শন করেছেন। এসময় তিনি কঠিন চীবরদান উদযাপনে আইন শৃংখলার সার্বিক পরিস্থিতিরও খরব নেন। তিনি বলেন, শান্তি সম্প্রীতি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আইন শৃংখলা বাহিনী কাজ করছে। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে দ্রæত আইন শৃংখলা বাহিনীকে খবর দেয়ার জন্য বলেন।
পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ বাংলাদেশ প্রধান উপদেষ্টা ভদন্তঃ শ্রদ্ধা লঙ্কার মহাথেরো বলেন, বৌদ্ধ ভিক্ষুরা তিন মাস বর্ষা বাস পালনের পর প্রবারণা পূর্নিমার মধ্যেদিয়ে শেষ হয়। দীঘিনালা উপজেলায় ৮টি বন বিহারের ও ৩৯টি বৌদ্ধ বিহারের দানোত্তম কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান পালন হচ্ছে। আড়াই হাজার বছর আগে গৌতম বুদ্ধের জীবদ্দশায় তার প্রধান সেবিকা বিশাখা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা তৈরি, রং করা, বয়ন ও সেলাই শেষে চীবর বিশেষ পরিধেয় বস্ত্র দান কাজ সম্পাদন করেন। বৌদ্ধরা এই ধর্মীয় উৎসবকে কঠিন চীবর দান বলেন।
কামাকুছড়া ধর্ম্মাংকুর (ধলাইমা) বৌদ্ধ বিহারে ৩৩তম দানোত্তম কঠিন চীবরদান বেইনবুনতে এসে সুজাতা চাকমা বলেন, গৌতম বুদ্ধের জীবদ্দশায় তার প্রধান সেবিকা বিশাখা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা তৈরি, রং করা, বয়ন ও সেলাই করে চীবরদান করেন। আমরাও নারীরা সারা রাত তুলা থেকে সুতা, সুতা রং করে –সুতা থেকে বেইন এর মাধ্যমে কাপড় তৈরি করে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দান করব। কাজটি খুবই কঠিন, অধিক পূন্য হবে মনে করে আমরা করি।