[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
বান্দরবানের লামায় নামে-বেনামে অভিযোগে বেকায়দায় বন বিভাগসাংবাদিকদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সার্বিক নিরাপত্তা দেয়া জরুরিহালদা নদী বাংলাদেশের মৎস্য সম্পদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণকাপ্তাই বাঁধের ১৬টি জলকপাট দিয়ে আবারো ছাড়া হচ্ছে পানিমানিকছড়িতে নৈতিকতার আলো শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিতরাঙ্গামাটিতে ৩৫ কাঠুরিয়া সহ পাহাড়ের সকল গণহত্যার বিচার দাবিরাঙ্গামাটির লংগদুতে ৩৫ কাঠুরিয়া হত্যার বিচারের দাবীতে আলোচনাসভাবাঘাইছড়িতে জেন্ডার ভিত্তিক জনসচেতনতা কার্যক্রম সভা অনুষ্ঠিতরাঙ্গামাটি ফাউন্ডেশন এর কাপ্তাইয়ে অবহিতকরণ সভারাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের ১ সদস্য সহ ৯জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

বান্দরবানের লামায় নামে-বেনামে অভিযোগে বেকায়দায় বন বিভাগ

॥ লামা উপজেলা প্রতিনিধি ॥
নামে বেনামে অভিযোগে সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে লামা বন বিভাগ। এতে করে থমকে আছে দাপ্তরিক ও স্বাভাবিক কার্যক্রম। চিহ্নিত এই চক্রটি বন বিভাগের স্বাভাবিক কার্যক্রমের উপর একের পর এক নামে বেনামে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ দিয়ে যাচ্ছে। এ জাতীয় অভিযোগের কারণে বন বিভাগের ও বন মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ চরমভাবে বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। আর এতে করে ক্ষুব্ধ হয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে লামা বন বিভাগের ব্যক্তি মালিকানাধীন জোতের কার্যক্রম গত ৩ মাস ধরে বন্ধ রাখা হয়েছে। ব্যক্তি মালিকানাধীন জোতের চলাচল পাশ ইস্যু না করায় লামা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে।

সংশ্লিষ্ট বন কর্মকর্তারা বলছেন জোতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় লক্ষাধিক মানুষ ভোগান্তিতে পড়লেও তাদের করার কিছুই নাই। স্থানীয় একটি চিহ্নিত চক্র জোতের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা তথ্য দিয়ে অভিযোগ প্রদান অব্যাহত রাখায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দপ্তরে লামা বন বিভাগ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারনার সৃষ্টি হচ্ছে। তাই অভিযুক্ত হয়ে তদন্তের মুখোমুখি হওয়ার চেয়ে জোতের কার্যক্রম গ্রহণ না করাই ভালো।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, চিহ্নিত এই চক্রটি বন বিভাগে আধিপত্য বিস্তার করে লাভবান হওয়ার জন্য গত ৪/৫ মাস ধরে উঠে পড়ে লেগেছে। এই চক্রটি বিভিন্ন মিডিয়ায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে অপপ্রচার ছড়িয়ে লামা বন বিভাগকে মন্ত্রণালয় ও বন অধিদপ্তরের নিকট বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন করেছে। লামা বন বিভাগ সম্পর্কে বন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে নামে বেনামে শতাধিক অভিযোগ দিয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে লামা বন বিভাগের জোত পারমিটের কার্যক্রম নিয়ে হুমকিতে পড়েছেন বন অধিদপ্তর।

বর্তমানে কোন সাধারণ মানুষ তাদের বাগানের গাছ চলাচল পাশের অভাবে চট্টগ্রাম, ঢাকা সহ দেশের কোন জায়গায় বাজারজাত করতে পারছেনা। বাগান মালিকগণ তাদের পারিবারিক প্রয়োজনে কোন গাছ বিক্রয় করতে পারছেনা। ব্যক্তি মালিকানাধীন বাগানের গাছ কর্তন, আহরণ ও বাজারজাত করতে না পারায় লামা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। তাদের স্বাভাবিক জীবনে নেমে এসেছে চরম দূর্ভোগ। প্রভাব পড়েছে পরিবারের জীবন জীবিকার ব্যয় নির্বাহ, শিক্ষা, চিকিৎসা সহ অন্যান্য জীবনযাত্রায়।

লামা উপজেলার বাগান মালিক জহির উদ্দিন জানান, বাগানের গাছ বিক্রি করতে না পারায় পরিবারের বৃদ্ধ বাবার চিকিৎসা করাতে পারছিনা। লামা উপজেলার আজিজনগর ইউনিয়নের সাধারণ ব্যবসায়ী বাবুল জানান, ব্যক্তি মালিকানাধীন বাগান ক্রয় করে চলাচল পাশের অভাবে বাজারজাত করতে পারছিনা। পরিবারের সদস্যদের স্বর্ণ এবং ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বাগান ক্রয় করেছি। তিনি জানান এই অবস্থা চলতে থাকলে আত্মহত্যা করা ছাড়া কোন উপায় নাই।

অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, জোত পারমিটের অনুবলে বিভিন্ন ডিপোতে মজুদ হাজার হাজার ফুট কাঠ রোদে শুকিয়ে এবং বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মজুদ কাঠগুলোর ব্যবহার উপযোগীতা দিন দিন হ্রাস পাওয়ায় বাজারমূল্যও কমে যাচ্ছে। দ্রুত এই অচল অবস্থার নিরসন না হলে গাছের সাথে সংশ্লিষ্ট হাজার হাজার মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে চরম কষ্টের মধ্যে পতিত হবে। লামা জোত মালিক ও কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ সেলিম এবং সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ জানান, নিজের বাগানের গাছ নিজেরা কর্তন, আহরণ ও বাজারজাত করতে পারছিনা। বাগান মালিকগণের কষ্ট দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গাছের সাথে জড়িত ব্যবসায়ীরা ফতুর হতে চলেছে। মানুষের জীবন যাত্রার স্বার্থে অপরাধী চক্রটিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার জন্য তারা অনুরোধ জানিয়েছেন।

লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ‘কি করবো বুঝতে পারছিনা। যে কাজই করিনা কেন সেটাকে নেগেটিভভাবে উপস্থাপন করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে। এত পরিমাণ অভিযোগ দেয়া হয়েছে যে, বর্তমানে তদন্ত মোকাবেলা করবো, নাকি অন্যকাজ করবো। তিনি আরো জানান, গাছ বাগানের মালিকদের কষ্ট দেখতেছি। কিন্তু অভিযোগের কারণে কিছুই করতে পারছিনা। অভিযোগকারীরা কি চায় তাও বুঝতে পারছিনা।