খাগড়াছড়ির রেজামনি ও কারিগর পাড়ায় বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করল সেনাবাহিনী
॥ খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি ॥
খাগড়াছড়ির দুর্গম পাহাড়ি জনপদ রেজামনি পাড়া ও কারিগর পাড়া। দীর্ঘদিন ধরে এ দুই গ্রামের ১২০ পরিবারের জন্য ছিল না বিশুদ্ধ খাবার পানির কোনো নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থা। ঝিরি ও কূপ থেকে কষ্ট করে পানি সংগ্রহ করেই চলতে হতো এলাকাবাসীকে। অবশেষে তাদের সেই চিরচেনা দুর্ভোগের অবসান ঘটল সেনা প্রধানের দেওয়া আশ^াসে।
বৃহস্পতিবার (১১সেপ্টেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ, এইচডিএমএস, এএফডব্লিউসি, পিএসসি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মোঃ খাদেমুল ইসলাম, পিএসসি, জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার, পুলিশ সুপার মোঃ আরেফিন জুয়েলসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
গত ২৯ মার্চ-২০২৫ইং সেনাবাহিনী প্রধান খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ির রেজামনি পাড়া আর্মি ক্যাম্প পরিদর্শনে এসে স্থানীয় মেম্বার, কারবারি ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বিষয়টি জানতে পারেন। তিনি মানুষের সমস্যা শুনে তাদের জীবনমান উন্নয়নে বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পাহাড়ি এলাকায় নিরাপত্তার পাশাপাশি জনগণের জীবনমান উন্নয়নের অংশ হিসেবে সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ নিশ্চিত করার প্রকল্প হাতে নেয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পাহাড়ে নিরাপত্তার পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের জীবনমান উন্নয়নে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ রেজামনি ও কারিগর পাড়ায় বিশুদ্ধ পানির এই ব্যবস্থা করা হলো। সেনাপ্রধান একসময় এই ক্যাম্পের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এখানকার মানুষের প্রতি তাঁর বিশেষ মায়া রয়েছে বলেই আজকের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা একে অপরের পরিপূরক হয়ে শান্তি-শৃঙ্খলা ও সম্প্রীতি বজায় রেখে কাজ করে যাব। সেনাবাহিনী সবসময় জনগণের পাশে আছে এবং থাকবে।
এলাকাবাসী জানায়, এর আগে ঝিরি ও কূপ থেকে কষ্ট করে পানি সংগ্রহ করতে হতো। এখন সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি সরাসরি ঘরে পৌঁছাচ্ছে, যা তাদের জীবনে এক নতুন স্বস্তি এনে দিয়েছে। তারা সেনাপ্রধান ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সেনাপ্রধান তাঁর চাকরিজীবনের শুরুতে রেজামনি পাড়া ক্যাম্পে ক্যাম্প কমান্ডার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেই স্মৃতিচারণ করে সেনাপ্রধান হওয়ার পর পুনরায় এখানে এসে সাধারণ মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের উদ্যোগ নেন।
স্থানীয়রা বলছেন, এ উদ্যোগ সেনাবাহিনীর উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত, যা পাহাড়ি এলাকার মানুষের জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।