[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

রাঙ্গামাটিতে কোটি কোটি টাকা লুটপাটের সাদাইয়া কালাইয়ারা এখন কোথায় ?

॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে পতিত আওয়ামীলীগ সরকারের অনেকে পলাতক, অনেকে জেলে, অনেকে আত্মগোপনে আবার অনেকে নিজেদের বিভিন্ন গোপন আস্তানায় ঢুকে পড়লেও বেড় হলেই পুলিশের জালে ধরা পড়ছে। গোটা দেশের চিত্র অনেকটা সেরকম হলেও রাঙ্গামাটি জেলার বড় বড় লুটেরা, চোর-ডাকাত, ভুমিদস্যু, ক্ষমতার মসনদে বসে ধর্ষণ ঘটনায়ও জড়িত বলে অভিযোগের নেতারা ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেল। তারা প্রকৃত আওয়ামীলীগ নয় এমন উল্লেখ করে জাতীয় ও স্থানীয় রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এর নেতৃবৃন্দরা সভ্য সমাজ গঠনে ঐসব ঘটনায় জড়িতদের অসভ্য বলে দাবি করে তাদের দ্রুত গ্রেফতারের আহ্বান জানিয়েছেন পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসন, গোয়েন্দা সংস্থা এবং আইনসৃংখলা বাহিনীর কাছে।

আওয়ামীলীগ সরকারের সময়ে অর্থের বিনিময়ে নব্য ও লুটেরা নেতা কর্তৃক ক্ষমতার দাপটে ঘটিয়ে যাওয়া অসংখ্য ঘটনার বিচারের ব্যবস্তার দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগী সাধারণ সহ আওয়মীলীগেরই অসহায় অনেকেও। আওয়ামীলীগ সরকার পতনের এক বছর পার হয়েছে অথচ রাঙ্গামাটিতে আসল বড় বড় ডেভিল’রা ধরাছোঁয়ার বাইরে বলে দাবি করছে। যদিও গোটা দেশে ধরপাকড় চলাকালীন সময় জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদার পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর রাঙ্গামাটিতে ক্ষমতার অপব্যবহারকারী দূর্নীতিবাজ অনেকেই গা ঢাকা দিয়েছে। তবে বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের উপরস্তুদের তাগিদে পুলিশ পতিত আওয়ামীলীগের মিছিল সভা সমাবেশে পিছনের সারির হাততালি দেওয়া কিছু নেতা-কর্মীদের আটক করে আদালতের মাধ্যমে পুলিশ জেলে নিয়ে গেলেও অরিজিনাল কালপ্রিট ও কোটি কোটি টাকার লুটেরা সাদাইয়া কালাইয়ারা একেবারেই ধরাছোঁয়ার বাইরে। ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়েও কারো কারো বিরুদ্ধে ধর্ষণ ঘটনায় অভিযোগও হয়েছিল থানায়। কানাঘুষা হচ্ছে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলগুলোকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে তারা গা ঢাকা দিয়েছে, আবার ঘরে থাকলেও অর্থের বিনিময়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরাই গ্রেফতার এড়াতে অরজিনাল ডেভিলদের সরে যেতে সাহার্য্য করছে এমন সন্দেহ আওয়মীলীগেরই ঐসব অসহায়দের। আবার চুনোপুঁটিদের সন্দেহ জনক বলে পুলিশ আটক করে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে এমন অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীদের পরিবারগুলো।

এদিকে আওয়ামীলগের ত্যাগী নেতাকর্মী কেউ কেউ বলছেন, যারা লুটপাট করেছে তারা কখনোই প্রকৃত আওয়ামীলীগ হতে পারে না। লুটেরাদের ক্ষমতার অপব্যবহারের কারনে আওয়ামীলগের এই অবস্থা। এমপিগিরি করতে করতে অনেকে দাদা-ঠাকুরদা বনে গিয়েছে শরীরের চামড়া গন্ডারের মত বানিয়েছে তারপরও ক্ষমতায় প্রকৃত নেতাদের সুযোগ দেওয়া হয়নি, চাইতে গেলে হয় দল থেকে বাদ নয়তো এক ঘরে, আর বাড়াবাড়ি করলে মামলা নয় হুমকী চালিয়েছে তাদেরই লালিত নব্য ও চাটুয়া বাহিনী দিয়ে। এভাবেই শুধু ১৫ বছর কেন তারও আগে থেকেই মেধাবী কাউকেই তারা ক্ষমতায় বা দলীয় বড় পদেও যেতে দেয়নি। বৈষম্যের পর টানা বৈষম্য করতে করতে নব্য ও চাটুয়া বাহিনী ক্ষমতার চেয়ারে বসেছে সে তার ইচ্ছেমতোই চলেছে আর লুটপাট করেছে, মেধাবিরা জায়গা করার চেষ্টা করলে তাদের ল্যাং মারা হয়েছে। নেতাদের কোন অনুষ্ঠানে দলের নেতা-কর্মী যারা হাততালি দিতে আসত এখন সেই হাততালি মার্কা নেতা-কর্মীরা ডেভিল হয়ে পুলিশের কাছে ধরা পড়ছে আর জেলে যাচ্ছে। অথচ আওয়ামীলীগের ক্ষতিকারক অরজিনাল কালপ্রিট ও ডেভিলরা ঠিকই আন্ডার গ্রাউন্ডে রয়ে গেছে। আবার উপজেলাগুলোয় অনেকে নামে আওয়ামীলীগের নেতা কাজে নিজের বাড়িঘর পাকাবানানো আর অন্যের ঘরের বাতি নিভানোর কাজই ছিল নাম তার আওয়ামীলীগ নেতা সাথে পদবীও। তাই ডেভিলরা পুলিশের কাছ থেকে বাঁচতে পারে বা পুলিশ খুঁজে পাচ্ছেনা এমন কথাও তারা বিশ^াস করতে পারছে না। আওয়ামীলীগের সৎ এবং যোগ্য নেতাকর্মীরাও এখন দাবি জানিয়েছে আসল ডেভিলদের গ্রেফতার করে বিচারের সন্মুখীন করতে।

এদিকে অন্তবর্তী সরকারের এক বছর অতিক্রম হয়েছে অথচ রাঙ্গামাটি জেলায় আওয়ামীলীগের লুটেরা এবং শত শত কোটি কালোটাকার মালিক, হ্রদের জায়গা, নালা নর্দমার জায়গা দখল, লুইচ্চ্য, বদমাইশ, ধর্ষক বনে যাওয়া সাদাইয়া কালাইয়া নেতারা এখন কোথায় এসব প্রশ্ন মানুষের। তাদের বিরুদ্ধে দূর্নীতি দমন কমিশনে, আইনসৃংখলা বাহিনীর কাছে স্থানীয় প্রশাসনে অভিযোগ থাকলেও লুটেরাদের সম্পদ বহালতবীয়তে রয়েছে, জনগনের টাকা সরকারের টাকা মেরে দিয়ে কোটি কোটি টাকার সম্পদ করলেও এখনো তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছেনা। দেশকে বৈষম্যমুক্ত করতে আন্দোলনে আন্দোলনে দেশের অনেক সন্তান অকালে জীবন থেকে ঝড়েছে, পঙ্গু হয়েছে, মা-বোনদের ইজ্জত লুন্ঠিত হয়েছে, পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের হত্যা করা হয়েছে। যাদের কারনে এসব হয়েছে প্রকৃত দোষীদেরতো ছাড় দেওয়া যাবেনা। দেশের রাজনৈতিক সভ্যতা, সামজিক সহ জাতির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এসব লুটেরাদের কাছ থেকে যারা এখন ট্যাক্স নিচ্ছে পকেট ভারি করছে তাদেরও আটকের দাবি জানিয়েছে ক্ষমতার দাপটে আওয়ামীলীগের লুটেরাদের নানান অত্যাচারের শিকার বিএনপি, আওয়ামীলীগ, জামায়াত সহ আঞ্চলিক দলের নেতাকর্মীরাও।

অপরদিকে জেলা আওয়ামীলগের প্রথম সারির ক’জন নেতা নাম প্রকাশ না করার সর্তে বলেছেন, অসভ্য ও লুটেরাদের টাকার দাপটে আওয়ামীলীগ সহ অংসংগঠনের ছাত্র থেকে যুবদের মাঝে মেধা, সৎ ও যোগ্য এবং ত্যাগীরা কাছেও ঘেঁষতে পারেনি। অর্থের বিনিময়ে নামে আওয়ামীলীগের লেবেল লাগিয়ে মূলত তারা লুট আর দলকে শেষ করতেই ক্ষমতা নিয়েছিল এটি আওয়মীলীগের বিরুদ্ধে একটি চক্রান্ত। দুনীতি দমন কমিশনে, গোয়েন্দা সংস্থার কাছে, আইনসৃংখলাবাহিনীর কাছে এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকার পরও কিভাবে ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। তিনি রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যায়ে পর্যন্ত যারা দীর্ঘ বছর ধরে লুটপাট চালিয়েছে তাদেরকেও ছাড় না দিতে প্রশাসনের প্রত্যেক স্তরের পদস্তদের আহ্বান জানিয়েছেন। শেখ হাসিনাও আওয়ামীলীগে লুটেরাদের রাজনীতি বন্ধ সহ শাস্তি দরকার এমনই চান বলেও এই নেতা জানান। পুলিশ ইতিমধ্যে যাদেরকে ডেভিল বলে আটক করেছে তাদের অধিকাংশই কারো অনিষ্ট করার মত নেতা-কর্মী বা শয়তান নয় বলে এই নেতা দাবি করেন। তবে মিজান নামে যাকে আটক করা হয়েছে এই নব্য লুটেরার কাছ থেকে অনেক তথ্য পাওয়া যাবে বলে উল্লেখ করেন।

অপর দিকে জেলা বিএনপি সহ অংগ সংগঠনের কিছু কিছু নেতাকর্মী জানিয়েছেন আওয়ামীলীগের ফ্যাসিস্টদের দেয়া প্রতিহিংসার মিথ্যে মামলায় অনেক নেতাকর্মী জেল খেটেছিল এলাকা ছাড়া হয়েছিল। তারা জগনগনের অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার, অর্থ এবং সম্মান লুট করেছিল তাদের জন্য মায়া দেখানোর কোন সুযোগ নেই। বিএনপির কোন কোন নেতা আওয়ামীলীগের লুটেরা আর ফ্যাসিস্টদের সাথে গোপন সংখ্যতার গুঞ্জন রয়েছে দাবি করে বলেন এটা সত্যি তবে এর দীর্ঘ হলে তাদের জন্য বিএনপির ত্যাগীরা প্রতিবাদী হয়ে দাঁড়াতেও পিছ পা হবে না। এসব বিষয় নিয়ে কেউ কেউ কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে অভিযোগ, আপত্তি জানাতেও তৈরী বলে জানান। রাজধানীর মতো এখানেও গণমাধ্যমের অনেকে ডেভিলদের সাথে আঁতাত করে বিপদগ্রস্ত করে তুলেছিল বস্তুনিষ্ট সাংবাদিকতার নিরাপত্তা। কার্ডধারী খোলসপড়া সাংবাদিক নামধারীরা তথ্য সন্ত্রাস আর দালালী করে রাষ্ট্রের চতুর্থ অংশ সাংবাদিকতাকে এবং এর প্রতিষ্ঠানকে বিপদগ্রস্ত করে তুলছে তাদেরও বিচার হওয়া দরকার বলে উল্লেখ করেন।

এদিকে দেশের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সরকার পতনের পর রাঙ্গামাটিতে গত এক বছরে রাজনৈতিক মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে রাঙ্গামাটি কতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, গত এক বছরে রাজনৈতিক কোন মামলা হয়নি বা কেউ করেননি। কিছু কিছু মামলা হয়েছে চুরি, মাদক, চোরাকারবারী, চেক জালিয়াতি, অসামাজিক কর্মকান্ডের বিষয়ে। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের পক্ষে একটি মামলা হয়েছিল যার যাঁচাই বাচাই এর পর ধাপে ধাপে ব্যবস্তা নেওয়া হচ্ছে।

অপরদিকে সর্বশেষ গত ১২ আগষ্ট রাঙ্গামাটি জেলা যুবলীগের সহ সাধারণ সম্পাদক ও আসবাবপত্র ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ মিজানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে পতিত আওয়ামীলীগ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ সহ সাংগঠনিক কাজ পরিচালনার অভিযোগে ও সারা দেশের ন্যায় অপারেশন ডেভিল হান্ট এর অংশ হিসেবে তাকে আটক করা হয়। তাকে আটকের পর তার ব্যবহৃত মুটোফোনে তিনি যুবলীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী এর সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রয়েছে এবং দলীয় কাজও পরিচালনা করছে এবং মিজান দেশের বাইরে চলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল এমন তথ্যও পুলিশের কাছে ছিল। কতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ সাহেদ উদ্দিন মিজানকে আটকের বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন। তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে সেগুলোর বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান।