[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
রাজাকার বলে গালি দেওয়ার চেতনার রাজনীতি দিল্লীতে পালিয়ে গেছেঅবিলম্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিগণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূতিতে রামগড়ে বিএনপি’র বিজয় র‍্যালিগণঅভ্যুত্থানের পূর্তিতে রাজস্থলীতে বিএনপির বর্ণাঢ্য বিজয় র‍্যালি অনুষ্ঠিতগণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষ্যে মাটিরাঙ্গায় বিএনপির বিজয় র‌্যালিখাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে বিএনপির বর্ণাঢ্য বিজয় র‍্যালিখাগড়াছড়িতে ‘জুলাই শহিদ’ মজিদ এর কবরে জেলা প্রশাসকের শ্রদ্ধাআর কোনো স্বৈরশাসক জাতির ওপর যেন চেপে বসতে না পারেরাঙ্গামাটির কাপ্তাইয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস পালনরাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উদযাপন
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে রাঙ্গামাটির কলাবাগান ঝর্ণা

॥ মোঃ নুরুল আমিন ॥
পাহাড়ের বুকে ঠান্ডা পানির শীতল ধারা মুগ্ধ করে ভ্রমণ পিপাসুদের হৃদয়ে। তাই ভ্রমণ পিপাসুদের প্রথম পছন্দ পাহাড়ী ঝিরি-ঝর্ণা। বর্ষা মৌসুম আসলেই যেন যৌবন ফিরে পাই। মুগ্ধতা ছড়ায় ভ্রমণ পিপাসুদের মাঝে। পাহাড়ের বুকে রূপ ছড়ানো ঝর্ণাগুলোর মধ্যে রাঙ্গামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের ঝর্ণাটি অন্যতম। যা সবার কাছে ‘কলাবাগান’ ঝর্ণা নামে পরিচিত। প্রতিদিনই রাঙ্গামাটি ও এর আশে-পাশের জেলাও উপজেলাগুলো থেকে ঝর্ণায় ভিড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরা।

পর্যটন নগরী রাঙ্গামাটির প্রবেশ দ্বার কাউখালী উপজেলা। চট্টগ্রামের রাউজান সীমানা পেরুলেই কাউখালীর অবস্থান। রাউজান ও রাঙ্গুনীয়ার সীমান্ত ঘেঁষা কাউখালী বেশ বৈচিত্র্যময়। পাহাড়ি বাঙ্গালির সহ-অবস্থানে গড়ে উঠা এ উপজেলার মানুষের উপার্জনের একমাত্র পথ গাছ, বাঁশ ও কৃষি। চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি সড়কে কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া সেনাক্যাম্প পেরুলেই কলাবাগান। মূল সড়ক থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে অন্তত পাঁচটি প্রাকৃতিক ঝর্ণা। ঝর্ণাগুলোর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সমতল থেকে স্তরে স্তরে অন্তত দেড় থেকে দু শ’ ফিট উঁচুতে পর্যন্ত বহমান। প্রতিটি ঝর্ণারই রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য। সৌন্দর্যের দিক থেকে কেউ কাউকে ইঞ্চি পরিমাণ ছাড় দিতে রাজি নয়। যা স্বচক্ষে না দেখলে কারো বিশ্বাসই হবে না। এ ঝর্ণাগুলো পর্যটন নগরী রাঙ্গামাটির সৌন্দর্যকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ঘাগড়ার কলাবাগান এলাকার একটি চায়ের দোকানের বাঁ-পাশ ঘেঁষে ঝর্ণায় পৌছানোর রাস্তা শুরু হয়। পরিষ্কার পানির প্রবাহের সাথে ছোট ছোট অসংখ্য নুড়ি পাথরের উপর দিয়ে হেঁটে এগিয়ে যেতে হয় সবচেয়ে বড় ঝর্ণাটির দিকে। যাওয়ার পথে চারদিকে দেখা মিলবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পাহাড়ি ছড়া, আরো কিছু ঝর্ণা, পাহাড় এবং সবুজে ঢাকা প্রকৃতির। কিছু পথ পাড়ি দেওয়ার পরই রয়েছে পিচ্ছিল ছড়া। পিচ্ছিল ছড়া সাথে পানি প্রবাহ অতিক্রম করেই কয়েক ধাপ পর হওয়ার পর দেখা মিলবে সবচেয়ে বড় ঝর্ণাটির। সমতল থেকে বড় ঝর্ণাটি অন্তত দেড় থেকে দু’শ ফিট উঁচু হবে।

অপার সম্ভাবনাময় প্রকৃতির নিজ হাতে গড়া অপরূপ দৃশ্য ও সৌন্দর্যের সমারোহ উপভোগ করতে ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দৈনিক অসংখ্য পর্যটকের পদচারণায় নির্জন কলাবাগান এলাকার নীরবতাকে জাগিয়ে তোলে। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার সবচেয়ে বড় দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক এ ঝর্ণাকে কাজে লাগিয়ে গড়ে উঠতে পারে এখানে বিশাল পর্যটন স্পট। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় মাত্র দেড় কিলোমিটার রাস্তার ব্যবস্থা করা গেলে গড়ে উঠতে পারে অর্থনৈতিক জোন হিসেবে, বদলে দেবে কাউখালীর চিত্র।

চট্টগ্রাম থেকে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী হাবিব জানান, ঝর্ণাটির দিকে তাকালেই দু’চোখ এবং মন জুড়িয়ে যায়। চারদিকে সবুজের সমারোহ ঝর্ণাটিকে যেন ঘিরে রেখেছে। ঝর্ণাটিতে আসার সময় আরো চারটি প্রাকৃতিক ঝর্ণার দেখাও মিলেছে যা পর্যটন ভ্রমণের আনন্দকে আরো বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।

রাঙ্গামাটি শহর থেকে ঘুরতে আসা সবুজ জানান, মনোমুগ্ধকর ঝর্ণাটি দর্শনাথী ও ভ্রমণ প্রেমীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। কিন্তু এ ঝর্ণাকে ঘিরে এখনো কোন পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠেনি। সুযোগ-সুবিধার ভালো ব্যবস্থা নেই। রাউজান থেকে ঘুরতে পর্যটক নীরব জানান, ঝর্ণাটি অত্যন্ত সুন্দর এবং বিশাল। তবে ঝর্ণা স্থলে পৌছাতে হলে পানির স্রোতে পা পিছলে পড়ারও সম্ভবনা রয়েছে। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো এখানে কোন নিরাপত্তার ব্যবস্থা নাই। এখানে আসলেই কেমন যেন এক অজানা এক ভয় বিরাজ করে মনে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলে ভালো হতো।
সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর এ ঝর্ণাটি রক্ষণাবেক্ষণ, ভালো রাস্তা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা গেলে এটিকে ঘিরে রাঙ্গামাটির অন্যতম একটি নান্দনিক সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।

রাঙ্গামাটি সিএইচটি ট্যুরিজম অ্যান্ড কালচার রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোলায়মান জানান, ঝর্ণাটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অক্ষুন্ন রেখে এবং বন-বনানী সংরক্ষণ করে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত এবং নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। তিনি আরও জানান, যদি বন-বনানী ধ্বংস হয়ে যায়,তাহলে এ ঝর্ণাগুলো বেশি টিকে না। তাই পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে এবং প্রকৃতির বন-বনানী সংরক্ষণ করতে হবে।

যেভাবে যাবেনঃ
রাঙ্গামাটি শহরের যেকোনো প্রান্ত থেকে সিএনজি রিজার্ভ করে যেতে পারবেন ঝর্ণাটিতে। ভাড়া পড়বে ২০০-২৫০ টাকা। আবার চট্টগ্রাম থেকে রাঙ্গামাটিগামী যেকোনো বাসে করে চলে আসতে পারেন কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের কলাবাগান ঝর্ণায়। এছাড়াও ঢাকা সহ বিভিন্ন জেলা থেকে এসি ও নন এসি বাসে করে চট্টগ্রামের অক্সিজেন মোড় নেমে রাঙ্গামাটির পাহাড়িকা অথবা দ্রুত যান বাসে অথবা একই স্থান থেকে সিএনজি করেও চলে আসতে পারেন কলা বাগান ঝর্ণায়।