[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে রাঙ্গামাটিতে জরিমানারাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি কাচালং নদীর ভাঙ্গনে হুমকির মুখে প্রায় ৬০ পরিবারমাটিরাঙ্গায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষ ক্যাম্পে ব্যাপক সাড়ামানিকছড়িতে কৃষকের সেবা নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে মতবিনিময়বাঘাইছড়ির সাজেকে সেনাবাহিনীর অভিযানে অস্ত্র গোলাবারুদ উদ্ধাররাঙ্গামাটির লংগদুতে মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় বৃদ্ধার মৃত্যুআলীকদমে পিআইও’র বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের অবস্থান কর্মসূচিবিএনপি সম্প্রীতি, উন্নয়ন ও জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার বিশ্বাসীরামগড়ে বাজার নিয়ন্ত্রণে টাস্কফোর্সের অভিযানে জরিমানাকাপ্তাই উপজেলা যুবদলের আহবায়ক জাহেদুল এর বাবার ইন্তেকাল
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি কাচালং নদীর ভাঙ্গনে হুমকির মুখে প্রায় ৬০ পরিবার

॥ ইব্রাহীম, বাঘাইছড়ি ॥
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ব লাইল্যাঘোনা গ্রামের অন্ত ৬০টি পরিবার কাচালং নদীর ভাঙ্গনে হুমকির মুখে পড়েছে। ঐ ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডেও এসব পরিবার নিজেদেরে ভিটেমাটি রক্ষা করতে স্থানীয় প্রশাসানের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। নদীর ভাঙ্গন রোধ করা না হলে পানিতে তলিয়ে যেতে পারে বসতবাড়িও।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাচালং নদীর পূর্ব পাড়ে বসবাসরত পরিবার গুলো আতঙ্কে জীবন যাপন করছেন। বর্তমান নদীর প্রায় মাঝখান পর্যন্ত রাস্তার সীমানা ও নিজস্ব জায়গা ছিলো এসব পরিবারগুলোর, কিন্ত কালের বিবর্তনে বর্তমানে সড়ক বিলিন হয়ে স্থানীয়দের বসবাসের জায়গাও এখন নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে ১০টি পরিবারের বসতি ঘর ভাঙ্গনের কবলে পরে উদ্বাস্তু হয়ে গেছে তারা এখন তারা অন্যত্র বসবাস করছেন।

দেখা যায়, নদী ভাঙ্গনের সাথে সাথে এই এলাকার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা অল্প বৃষ্টি হলেই প্লাবিত হয় পুরো এলাকা। চলাফেরার রাস্তা না থাকায় বর্ষা মৌসুমে শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের চলাচল বিপদজনক হয়ে উঠে। তার মধ্রে স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীরাতো আছেই। কাচালং নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ ও বন্যার সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারের প্রতি স্থানীয়দের দাবী বেড়িবাঁধ সহ উচুঁ সড়ক নির্মাণ।

স্থানীয় কৃষক মোঃ আফসার হোসেন বলেন, জলবিদ্যুৎ উৎপাদনকে কেন্দ্র করে ১৯৬৪ সালে কাপ্তাই বাঁধের কারনে আমরা উদ্বাস্তু হয়ে এই এলাকায় বসবাস শুরু করি। একসময় নদীর পাড়ে বিশাল জায়গা ছিল এছাড়াও আমাদের চলাচলের জন্য রাস্তা ছিল এখন রাস্তা নেই সাথে বসতঘরের জায়গাও হারিয়ে যাচ্ছে নদীতে, নদীতে বেড়িবাঁধ দেয়া না হয় আমাদের অবশিষ্ট জায়গাটুকু হয়তো নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।

বাঘাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার ও স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ আব্দুল খালেক বলেন, আমরা প্রায় ৫৫-৬০ বছর এই এলাকায় বসবাস করে আসছি সুন্দর ভাবে কিন্তু এই নদী ভাঙ্গন ও বন্যার ফলে জনজীবনে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে, নদী ভাঙ্গন ঠেকাতে ব্যক্তি উদ্যোগ ও সরকারি সহায়তায় ছোট ছোট উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল যার কোনটিই কাজে আসেনি এখন এই ভাঙ্গনের বৃহৎ আকার ধারন করেছে যার সমাধান এখন বেরীবাধ নির্মাণ। তিনি স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে এই এলাকাটিকে রক্ষা করার জন্য বাঁধ নির্মাণের জন্য অনুরোধ জানান।

স্থানীয় যুবক ও বাঘাইছড়ি উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক ইকবাল হোসেন বলেন, আমাদের এই এলাকাটি বাঘাইছড়ি উপজেলার মধ্যে অন্যতম একটি দুর্যোগ পূর্ণ এলাকা, অল্প বৃষ্টিতে বন্যায় প্লাবিত হয় পুরো গ্রাম এবং নদী ভাঙ্গনের ফলে ৬০ টিরও অধিক পরিবারের দুর্দশা খুবই করুন। তাই নয় এই এলাকাটিতে নেই কোন আশ্রয় কেন্দ্র ও নেই উচুঁ সড়ক, বন্যায় প্লাবিত হলে মানুষজন যে আশ্রয় নিবে এমন একটি স্থান নেই, উচুঁ সড়ক থাকলে গবাদী পশু নিয়ে মানুষ বন্যার সময় কিছুটা স্বস্তি পেতো। তিনি হতাশা নিয়ে বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ আমরা অনেক সমস্যায় ভুগছি কোন সমাধান হচ্ছেনা আমাদের আগামী প্রজন্মের জন্য নদী ভাঙ্গন রোধ, উচুঁ সড়ক ও বন্যার্তদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণে স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারের নিকট আহবান জানা।

নদী ভাঙ্গনের বিষয়ে বাঘাইছড়ি প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্দুল মাবুদ বলেন, বাঘাইছড়িতে কাচালং নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে বিশেষ করে করেঙ্গাতলী থেকে শুরু করে দুরছড়ি সহ বিভিন্ন এলাকায় এলাকা। ইতিমধ্যেও বেশ কিছু যায়গায় নদীর দুই পাড়ে ভাঙ্গণ দেখা দিয়েছে। কাচালং নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ার ফলে বৃষ্টির পানি ও পাহাড়ি ঢলের পানি নামতে গিয়ে শ্রোতে দুই পাড়ে ভাঙ্গণ দেখা দিয়েছে। সেই সাথে একন বসতবাড়িগুলো হুমকীতে রয়েছে। তাই প্রকেল্পের মাধ্যমে হলেও দ্রুত সমস্যার সমাধান করলে ভাঙ্গন প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।

এই বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ মনিরুজ্জামানের সাথে কথা বললে তিনি বললেন, আমরা ইতিমধ্যে কাচালং নদীর ভাঙ্গন এলাকা গুলো জরিপ করছি এবং পূর্ব লাইল্যাঘোনা এলাকার ভাঙ্গন রোধে মন্ত্রনালয়ে টেকশই বাধঁ নির্মাণের জন্য প্রাক্কলন (ইস্টিমেট) প্রস্তাব করা হয়েছে অনুমোদন দেওয়া হলে আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থাযী একটা সমাধান করা যাবে। এ বিষয়ে স্থানীয় জনগনের সহযোগীতাও তিনি কামনা করেন।