খাগড়াছড়ির পানছড়িতে ১০ ওয়াকিটকি সহ এক ব্যক্তিকে আটক করেছে সেনাবাহিনী
॥ মোঃ ইসমাইল, পানছড়ি ॥
খাগড়াছড়ির পানছড়িতে সন্ত্রাসী কার্যকলাপে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে নিয়ে আসা ১০টি ওয়াকিটকি সহ সন্দেহভাজন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। এসময় এক ব্যক্তিকে আটক করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। পানছিড় থানা সুত্র এ ঘটনার বিষয় নিশ্চিত করেছে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খাগড়াছড়ি জোনের অধীনস্থ পানছড়ি আর্মি ক্যাম্পের সদস্যরা মঙ্গলবার (২২জুলাই) ২ নম্বর গেইট সংলগ্ন এলাকা থেকে একটি সিএনজি আটক করে, যা জেলা সদর থেকে রুপসেন পাড়ার দিকে যাচ্ছিল। তল্লাশিকালে সিএনজিতে থাকা চন্দন ত্রিপুরা (৪০) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। সে খাগড়াছড়ি পেরাছড়ার ১ নং প্রকল্প এলাকার সুতম ত্রিপুরার ছেলে। এসময় তার সঙ্গে থাকা মালামালের মধ্যে ছিল একটি বড় বক্স কার্টুন, পাঁচটি স্কুল ব্যাগ, আটটি সিঙ্গেল বেডশীট, একটি হাফ প্যান্ট, একটি এলআরপি ট্যান্ট এবং চারটি স্ক্রু ড্রাইভার।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চন্দন ত্রিপুরা দাবি করেন, কার্টুনটি তার নয়, তবে অন্যান্য মালামাল তার নিজস্ব। সন্দেহবশত বক্স কার্টুনটি খোলা হলে এর ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয় ১০টি ওয়াকিটকি, ২০টি ব্যাটারি ও ১০টি চার্জার। চন্দন জানান, “স্বপ্ন কম্পিউটার, খাগড়াছড়ি” নামক একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ০১৭২৮১৪৫৭৬৪ নম্বর থেকে ফোন করে তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়, যেন তিনি খাগড়াছড়ির এজেআর কুরিয়ার সার্ভিস থেকে কার্টুনটি সংগ্রহ করে তা পুজগাঙ এর মধুমঙ্গলপাড়া সিএনজি ওয়ার্কশপে পৌঁছে দেন। তবে তদন্তে দেখা যায়, ওই নামের কোনো প্রতিষ্ঠান খাগড়াছড়িতে বাস্তবে খুঁজে পাওয়া যায়নি এবং ওয়ার্কশপ মালিকও বিষয়টি সম্পর্কে অজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
কুরিয়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা পার্সেলের ভেতরে কী ছিল তা জানত না। একই নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও কেউ রিসিভ করেনি। তদন্তে আরও জানা যায়, উদ্ধারকৃত ওয়াকিটকি ও আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম ঢাকার নিউ এলিফ্যান্ট রোডস্থ ইনফো টাচ টেনোলজি নামক দোকান থেকে কেনা হয়েছে। তবে ওই প্রতিষ্ঠানও ক্রেতার সুনির্দিষ্ট পরিচয় দিতে পারেনি।
চন্দন ত্রিপুরা জিজ্ঞাসাবাদে নিজের নির্দোষতার দাবি করেন এবং বলেন, তিনি শুধুই একজন বাহক, এর ভেতরে কী আছে তা তিনি জানতেন না। তবে একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে তার কাছে এমন ধরনের সরঞ্জাম বহন করা একেবারেই অনৈতিক ও সন্দেহজনক বলে তিনি স্বীকার করেন। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো ধারণা করছে, উদ্ধারকৃত সরঞ্জামাদি স্থানীয় কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাতে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছিল।
আটককৃত ব্যক্তিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পানছড়ি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। পানছড়ি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ জসিম উদ্দিন জানান, এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন।