রাবিপ্রবির শিক্ষক সংকট অনেকটাই নিরসন হয়েছে: ভাইস চ্যান্সেলর
॥ মোহাম্মদ আলী ॥
বিশ^বিদ্যালয়ে নতুন ২১ শিক্ষক আসায় এই মুহূর্তে আমাদের শিক্ষক সংকট অনেকটাই নিরসন হয়েছে। তাই আমরা আশা করছি বিশ্ববিদ্যালয় অতি দ্রুত সেশনজট মুক্ত হবে। প্রয়োজনে আগামী তিন মাসে অতিরিক্ত ক্লাস ও পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সেশনজট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার মনস্তÍত্বে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার আহবান জানিয়েছেন রাবিপ্রবি’র ভাইস চ্যান্সেলর ড. মোঃ আতিয়ার রহমান। মঙ্গলবার (১৫জুলাই) জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় দিবস-২০২৫ উলক্ষ্যে এবার বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের স্লোগানে “রাবিপ্রবি দিবসের অঙ্গীকার, “সেশনজট মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় আমার অধিকার” এর উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ভাইস চ্যান্সেলর ড. মোঃ আতিয়ার রহমান বলেন, বিশ^বিদ্যালয় দিবস উপলক্ষ্যে প্রথমবারের মত রাবিপ্রবিতে ডিন’স এওয়ার্ড চালু করা হয় এবং সে লক্ষ্যে নীতিমালাও চূড়ান্ত করা হয়েছে। আগামী বছর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে নীতিমালা অনুযায়ী ডিন’স এওয়ার্ড প্রদান করা হবে বলে জানানো হয়। শিক্ষার্থীদেরকে ডিন’স এওয়ার্ড অর্জনের জন্য পড়াশোনায় আগ্রহী ও নিজের যোগ্যতা-দক্ষতা বৃদ্ধি বিষয়ে উৎসাহ প্রদান করেন ভাইস চ্যান্সেল। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে নবনিযুক্ত একুশ জন শিক্ষককে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন ওয়েস্ট্রার্ন নরওয়ে ইউনিভার্সিটি অফ এপ্লাইড সাইন্স এর প্রফেসর ড. এস এম আব্দুল কুদ্দুস। তিনি তাঁর বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ শিক্ষার লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বুদ্ধিবৃত্তিক ও প্রকৌশল-কারিগরী চাহিদার সাথে কারিকুলামের সমন্বয়ের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠানের উন্নতির কথা চিন্তা করলে হবে না, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও পরিবেশর জীববৈচিত্র্য ঠিক রেখে, সমাজের উপর যেন কোন বিরূপ প্রতিক্রিয়া না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করতে হবে। তিনি সময় ও প্রযুক্তির পরিবর্তনের সাথে সাথে শিক্ষাদান-শিক্ষাগ্রহণ পদ্ধতি, কারিকুলামে নতুনত্ব আনয়ন ও শিক্ষা ক্ষেত্রে গুণগতমান বৃদ্ধির জন্য উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংস্কার ও সময়োপযোগী দক্ষতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা ব্যক্ত করেন।
এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে একাডেমিক ভবন-১ এ বিভিন্ন প্রকারের ঐতিহ্যবাহী খাবার ও পিঠা নিয়ে ফুড ফেস্টিভ্যাল এর আয়োজন করা হয় এবং দুপুরে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে শিক্ষার্থী বনাম শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে একাডেমিক ভবন-১ এর সভাকক্ষ-২ এ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
দিবসটি শুরু উপলক্ষ্যে প্রশাসনিক ভবনের সামনে সকাল ৯টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও পায়রা উড়িয়ে দিবসটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বিশ^বিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. মোঃ আতিয়ার রহমান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবার জন্য দোয়া করা হয় এবং আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রা শেষে প্রশাসনিক ভবন-১ এর সম্মুখে দিবসটি উপলক্ষে কেক কাটা হয়। এরপর ‘বিশ্ববিদ্যালয় দিবস এর কর্মসূচীর অংশ হিসেবে সকাল ১০:৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন-১ এর সভাকক্ষ-২ এ রাবিপ্রবি’র সূচনালগ্ন থেকে এ-পর্যন্ত বিভিন্ন একাডেমিক, প্রশাসনিক ও অবকাঠামো উন্নয়নের আলোকচিত্র সম্বলিত একটি ডকুমেন্টারি প্রর্দশন করা হয়।
উল্লেখ্য ‘রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০১ দ্বারা রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৩ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি একনেক সভায় রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অনুমোদন দেয় হয়। ২০১৫ সালের ৯ নভেম্বর ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষেও শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হয়।