॥ উবাসিং মারমা, রুমা ॥
বান্দরবানের রুমা উপজেলায় সারা দেশের মতো বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম পবিত্র ধর্মীয় উৎসব শুভ আষাঢ়ীপূর্ণিমা মহাসমারোহে উদযাপনের আজ। বৃহস্পতিবার (৯জুলাই) রুমা উপজেলার আওতাধীন বৌদ্ধ জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত বিভিন্ন বিহার ও বৌদ্ধ মন্দিরসমূহে দিনব্যাপী পৃথক পৃথক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুযায়ী, আষাঢ়ী পূর্ণিমার এই পবিত্র দিনে মহাকারুণিক বুদ্ধ সিদ্ধার্থ গৌতম মাতৃজঠরে প্রতিসন্ধি গ্রহণ করেন, জীবজগতের কল্যাণের জন্য কঠোর সাধনা করতে গৃহত্যাগ করেন, সারনাথে প্রথম ধর্মচক্র সূত্র দেশনা করেন, প্রতিহার্য ঋদ্ধি প্রদর্শন করেন এবং মাতৃদেবীকে ধর্ম দেশনা দিতে তাবতিংস স্বর্গে গমন করেছিলেন।
এই দিন থেকেই ভিক্ষু সংঘের ত্রৈমাসিক বর্ষাব্রত অধিষ্ঠান শুরু হয়। পঞ্চস্মৃতি বিজরিত আষাঢ়ী পূর্ণিমা বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর জন্য এক মহান পবিত্র দিন হিসেবে বিবেচিত। এই দিনটিকে মহাসমারোহে উদযাপনের এর মধ্যে রয়েছে রুমা কেন্দ্রীয় দেব বৌদ্ধ বিহার, থানাপাড়া বৌদ্ধ বিহার,পাইন্দু পাড়া বৌদ্ধ বিহার, চিবোওয়াদাক বৌদ্ধ বিহার, সেপ্রু পাড়া বৌদ্ধ বিহার রুমা উপজেলা ৫০ শের অধিক বৌদ্ধবিহার রয়েছে।
বিহার পরিচালনা কমিটি ও দায়ক-দায়িকাদের ব্যবস্থাপনায় কর্মসূচির মধ্যে থাকছে ভোরে পবিত্র ত্রিপিটকের মঙ্গলবানী পাঠ তথা মন্ত্র পাঠ, ভিক্ষু সংঘের প্রাতঃরাশ, আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয়, ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, বুদ্ধ পূজা, পঞ্চশীল ও উপসথ শীল গ্রহণ, বর্ষাসাঠিক দান (ভিক্ষু সংঘের পরিধেয়), পিন্ডদান, মধ্যাহ্ন ভোজন, বুদ্ধের জীবনাদর্শ ও শুভ আষাঢ়ী পূর্ণিমার তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা, বুদ্ধ কীর্তন, আলোকসজ্জা, সন্ধ্যাকালীন প্রদীপ পূজা তথা গিলানো প্রত্যয় পূজা, জগতের শান্তি, দেশের মঙ্গল ও সমৃদ্ধি কামনায় সমবেত প্রার্থনা এবং প্রয়াত আত্মীয় স্বজনের নির্বাণ সুখ কামনায় পূণ্যদান অনুষ্ঠান দিনব্যাপী ।
থানা পাড়া বৌদ্ধ বিহারের ভান্তে উ: ধাম্মাসিরি মহাথের জানান, আষাঢ়ী পুর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পুর্ণিমার তিথি পর্যন্ত তিনমাস বর্ষবাস পালন করবে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা। পূর্ণিমার এই তিথিতেই বৌদ্ধ ধর্মের প্রবক্তা মহামানব গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বুদ্ধত্ব লাভ এবং মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন।