গৌতম বুদ্ধের ছয়টি স্মৃতি বিজড়িত দিন আষাঢ়ী পূর্ণিমা
॥ দেবদত্ত মুৎসুদ্দী গোপাল ॥
গৌতম বুদ্ধের ছয়টি স্মৃতি বিজড়িত আষাঢ়ী পূর্ণিমা। সারাবিশ্বে বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং গৃহীরা আষাঢ়ী পুর্ণিমা এক মহা-পবিত্র দিন বলে যথাযত ধর্ময়ী ভাবগাম্ভীর্যে পালন করে থাকেন। এই দিনে গৌতম বুদ্ধের ছয়টি স্মৃতি বিজড়িত দিন বলে অভিহিত করা হয়।
১. মাতৃগর্ভে প্রতিসন্ধি গ্রহণ: আষাঢ়ী পূর্ণিমার দিনে, রাণী মায়াদেবীর গর্ভে সিদ্ধার্থের (গৌতম বুদ্ধের পূর্ব নাম) প্রতিসন্ধি গ্রহণ করেছিলেন। ২. গৃহত্যাগ: (মহাভিনিষ্ক্রমণ) রাজকুমার সিদ্ধার্থ রাজসুখ ভোগবিলাসী জীবন ত্যাগ করে বুদ্ধত্ব লাভের উদ্দেশ্যে গৃহত্যাগ করেছিলেন। ৩.ধর্মচক্র প্রবর্তন, ঋষিপতন মৃগদাবে (সারনাথ) বুদ্ধ তার প্রথম ধর্মোপদেশ (“ধর্মচক্র প্রবর্তন সূত্র”) পঞ্চবর্গীয় শিষ্যদের (পাঁচজন শিষ্য) এই দিনে দিয়েছিলেন। ৪. ঋদ্ধি প্রদর্শন ও যমক প্রতিহার্য শ্রাবস্তীতে বৃক্ষমূলে বুদ্ধ অলৌকিক ক্ষমতা প্রদর্শন করেছিলেন যা আষাঢ়ী পূর্ণিমায়। ৫. গর্ভধারিনী মাতা মায়াদেবীকে ধর্মদান করার জন্য তাবতিংস স্বর্গে গমন, অভিধর্ম প্রবর্তনের সূচনা করেন। (ত্রিপিটক এর এক অংশ) ৬. সংযম সাধনারত ভিক্ষুদের ত্রৈমাসিক বর্ষাবাস (ওয়া) শুরুর প্রবর্তন। এবং বৌদ্ধগৃহীরাও বর্ষাবাসের ৩ মাস গভীর সংযম অনুশীলনে রত থাকেন। আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিন মাস ভিক্ষুরা বর্ষাবাসব্রত পালন করেন। এ সময় তাঁরা বিহারে অবস্থান করে ধর্মালোচনা, ধর্মশ্রবণ, ধর্ম-বিনয় ও ধ্যান-সমাধি চর্চা এবং অধ্যয়ন করে সময় অতিবাহিত করার চেষ্টা করেন। বর্ষাকালে বিহারে বসবাস করে এই ব্রত বা অধিষ্ঠান পালন করা হয় বলে এটিকে বর্ষাবাসব্রত ও বলে। বর্ষাবাসব্রত পালনের মাধ্যমে ভিক্ষুদের জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করা হয়। বর্ষাবাসব্রতকালে ভিক্ষুসংঘ কায়িক, বাচনিক এবং মানসিক পরিশুদ্ধিতা অর্জন করেন। তাই বর্ষাবাসব্রতকে আত্মশুদ্ধির অধিষ্ঠান ও বলা হয়।
এই সময়টি সাধারণত আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে শুরু হয়ে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত চলে। এটিকে বর্ষাকালীন অবস্থানও বলা হয়। বর্ষাবাস পালনের মূল কারণ হলো, বর্ষাকালে বৃষ্টির কারণে রাস্তাঘাটে নানা ধরণের পোকামাকড় ও কীট-পতঙ্গের আবাসস্থল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, ভিক্ষুদের বৃষ্টিতে ভেজার কারণে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে কাপড় চোপর কাদা পানি মিশে নষ্ট হয়ে যেতে পারে, বৃষ্টি বাদলের দিন যা অসুবিধে হয় তা বর্ষাবাস পালনের মাধ্যমে এড়ানো যায়। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা এই সময়ে বিহারে অবস্থান করে ধর্মচর্চা, অধ্যয়ন, এবং ধ্যান-সমাধিতে মগ্ন থাকেন নিজেকে আধাত্মিক ভাবে উন্নয়ন করার জন্য।
এটি কেবল ভিক্ষুদেও (ভান্তে) জন্যই নয়, গৃহী সাধারণ (দায়ক,দায়ীকা, উপাসক,উপাসিকা) বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্যও একটি বিশেষ তাৎপর্য বহন করে, কারণ এই সময়ে তারা নিজের সাধ্যমতো দান, অষ্টশীল (নীতি), মৈত্রী ভাবনা বিদর্শন ভাবনা এবং ত্রিপিটক সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে নিজেদের আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধনে মনোনিবেশ করেন। এবং আষাঢ়ী পূর্ণিমার দিনে গৌতম বুদ্ধের জীবনে ঘটে যাওয়া ছয়টি স্মৃতি বিশেষ ভাবে স্মরণ করা হয়।
গৌতম বুদ্ধের ছয়টি স্মৃতি বিজড়িত দিন আষাঢ়ী পূর্ণিমা
॥ দেবদত্ত মুৎসুদ্দী গোপাল ॥
গৌতম বুদ্ধের ছয়টি স্মৃতি বিজড়িত আষাঢ়ী পূর্ণিমা। সারাবিশ্বে বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং গৃহীরা আষাঢ়ী পুর্ণিমা এক মহা-পবিত্র দিন বলে যথাযত ধর্ময়ী ভাবগাম্ভীর্যে পালন করে থাকেন। এই দিনে গৌতম বুদ্ধের ছয়টি স্মৃতি বিজড়িত দিন বলে অভিহিত করা হয়।
১. মাতৃগর্ভে প্রতিসন্ধি গ্রহণ: আষাঢ়ী পূর্ণিমার দিনে, রাণী মায়াদেবীর গর্ভে সিদ্ধার্থের (গৌতম বুদ্ধের পূর্ব নাম) প্রতিসন্ধি গ্রহণ করেছিলেন। ২. গৃহত্যাগ: (মহাভিনিষ্ক্রমণ) রাজকুমার সিদ্ধার্থ রাজসুখ ভোগবিলাসী জীবন ত্যাগ করে বুদ্ধত্ব লাভের উদ্দেশ্যে গৃহত্যাগ করেছিলেন। ৩.ধর্মচক্র প্রবর্তন, ঋষিপতন মৃগদাবে (সারনাথ) বুদ্ধ তার প্রথম ধর্মোপদেশ (“ধর্মচক্র প্রবর্তন সূত্র”) পঞ্চবর্গীয় শিষ্যদের (পাঁচজন শিষ্য) এই দিনে দিয়েছিলেন। ৪. ঋদ্ধি প্রদর্শন ও যমক প্রতিহার্য শ্রাবস্তীতে বৃক্ষমূলে বুদ্ধ অলৌকিক ক্ষমতা প্রদর্শন করেছিলেন যা আষাঢ়ী পূর্ণিমায়। ৫. গর্ভধারিনী মাতা মায়াদেবীকে ধর্মদান করার জন্য তাবতিংস স্বর্গে গমন, অভিধর্ম প্রবর্তনের সূচনা করেন। (ত্রিপিটক এর এক অংশ) ৬. সংযম সাধনারত ভিক্ষুদের ত্রৈমাসিক বর্ষাবাস (ওয়া) শুরুর প্রবর্তন। এবং বৌদ্ধগৃহীরাও বর্ষাবাসের ৩ মাস গভীর সংযম অনুশীলনে রত থাকেন। আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিন মাস ভিক্ষুরা বর্ষাবাসব্রত পালন করেন। এ সময় তাঁরা বিহারে অবস্থান করে ধর্মালোচনা, ধর্মশ্রবণ, ধর্ম-বিনয় ও ধ্যান-সমাধি চর্চা এবং অধ্যয়ন করে সময় অতিবাহিত করার চেষ্টা করেন। বর্ষাকালে বিহারে বসবাস করে এই ব্রত বা অধিষ্ঠান পালন করা হয় বলে এটিকে বর্ষাবাসব্রত ও বলে। বর্ষাবাসব্রত পালনের মাধ্যমে ভিক্ষুদের জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করা হয়। বর্ষাবাসব্রতকালে ভিক্ষুসংঘ কায়িক, বাচনিক এবং মানসিক পরিশুদ্ধিতা অর্জন করেন। তাই বর্ষাবাসব্রতকে আত্মশুদ্ধির অধিষ্ঠান ও বলা হয়।
এই সময়টি সাধারণত আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে শুরু হয়ে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত চলে। এটিকে বর্ষাকালীন অবস্থানও বলা হয়। বর্ষাবাস পালনের মূল কারণ হলো, বর্ষাকালে বৃষ্টির কারণে রাস্তাঘাটে নানা ধরণের পোকামাকড় ও কীট-পতঙ্গের আবাসস্থল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, ভিক্ষুদের বৃষ্টিতে ভেজার কারণে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে কাপড় চোপর কাদা পানি মিশে নষ্ট হয়ে যেতে পারে, বৃষ্টি বাদলের দিন যা অসুবিধে হয় তা বর্ষাবাস পালনের মাধ্যমে এড়ানো যায়। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা এই সময়ে বিহারে অবস্থান করে ধর্মচর্চা, অধ্যয়ন, এবং ধ্যান-সমাধিতে মগ্ন থাকেন নিজেকে আধাত্মিক ভাবে উন্নয়ন করার জন্য।
এটি কেবল ভিক্ষুদেও (ভান্তে) জন্যই নয়, গৃহী সাধারণ (দায়ক,দায়ীকা, উপাসক,উপাসিকা) বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্যও একটি বিশেষ তাৎপর্য বহন করে, কারণ এই সময়ে তারা নিজের সাধ্যমতো দান, অষ্টশীল (নীতি), মৈত্রী ভাবনা বিদর্শন ভাবনা এবং ত্রিপিটক সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে নিজেদের আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধনে মনোনিবেশ করেন। এবং আষাঢ়ী পূর্ণিমার দিনে গৌতম বুদ্ধের জীবনে ঘটে যাওয়া ছয়টি স্মৃতি বিশেষ ভাবে স্মরণ করা হয়।